আলীকদমে পানি শোধনাগার নির্মাণে ১৪ বছর!

বান্দরবান প্রতিনিধি
ছবি : সংগৃহীত

সময়ের পর সময় শেষ হলেও কাজের কোনো সমাপ্তি নেই বান্দরবানের আলীকদম উপজেলার পানি শোধনাগার প্রকল্পের। সংশ্লিষ্টরা প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে দাবি করে পানির সংযোগ নিতে গ্রাহকদের আহবান জানালেও এখন পানির তেমন সাড়া মিলছে না গ্রাহকদের। ফলে সরকারের সাড়ে ১১ কোটি টাকা জলে যাবে বলে মনে করছে অনেকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আলীকদম উপজেলা পরিষদের পাশে ছাবের মিয়া পাড়ায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর স্থানীয়দের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা মেটাতে ২০১১ সালের ১১ জুন প্রকল্পটির কাজ শুরু করে, দীর্ঘ ১৪ বছর অতিক্রম হলেও পানি শোধানাগার নির্মানের কাজ শেষ হয়নি। গত বছর এই প্রকল্পের উদ্বোধন করা হলেও পানি দেখেনি স্থানীয়রা। উদ্বোধনের দিন কয়েক ঘণ্টা উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পানি দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায় পানি সরবরাহ।

জানা যায়, শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্পের কাজ ২০১১ সালের ১১ জুন শুরু হলে তখন ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুটি জলাধার নির্মাণের পর প্রকল্পের কাজ পরিত্যক্ত হয়ে যায়। পরিত্যক্ত শোধনাগারটি পুনরায় নির্মাণের জন্য ২০২০ সালের ১২ সেপ্টেম্বর পরিকল্পনা কমিশন থেকে ৯ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। নির্মাণকাজ ২০২২ সালের জুনে শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু গত বছরের ১২ এপ্রিল উদ্বোধনের দিনই পানি সরবরাহ দেওয়ার পর বন্ধ হয়ে যায়। প্রকল্পের শুরু থেকে দুই দফায় এ পর্যন্ত সাড়ে ১১ কোটি টাকা ব্যয় হলেও পানি পায়নি আলীকদমবাসী।

সাবের মিয়াপাড়ায় পাড়ার বাসিন্দা নুরুল হক জানান, শুষ্ক মৌসুমে তীব্র পানি সংকটের দেখা যায়। বিগত বছরগুলোতে এক কলসি পানির জন্য নলকূপের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরতে হয়। তারপরও পানি সংকট নিরসনে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই।

আরো জানা গেছে, গত ৩ মাস আগে পানির সংযোগ লাইন প্রদানের জন্য মাইকিং করা হয়েছিলো। কিন্তু প্রতি লাইনের জন্য ফি নির্ধারণ হয় ১০ হাজার টাকা। নিয়মিত পানি সরবরাহ নিশ্চিত হবে কিনা এমন সংশয় থাকায় পানি শোধানাগার থেকে পানি সংগ্রহে স্থানীয়দের আগ্রহ কম, ফলে আবেদন করেনি কেউ। পরে দ্বিতীয় দফায় পাঁচ হাজার, তৃতীয় দফায় দুই হাজার সংযোগ ফি নির্ধারণ করা হলে সংযোগের জন্য আবেদন জমা দেয় ৫০ জন গ্রাহক। তবে এসব গ্রাহককে এখনও পানি সরবরাহ করতে পারেনি জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর।

উপজেলা সদরের ৪ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা মংহ্লা প্রু তঞ্চঙ্গ্যা বলেন, পানির কষ্ট আমাদের চিরকালেই যেন থেকে যাবে, ১৪ বছরেও পানি সংকট নিরসন হয়নি, সামনে শোধনাগার থেকে নিয়মিত পানি পাবো এর নিশ্চয়তা কি।

গত বছরের ১২ এপ্রিল সদ্য সাবেক পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং পানি শোধনাগার প্রকল্পটি  উদ্বোধন করেছিলেন। উদ্বোধনী ফলকটি উন্মুক্ত থাকলেও পানি সরবরাহ উদ্বোধনের দিন বিকেলেই বন্ধ হয়ে যায়। সেদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কয়েক ঘণ্টার জন্য পানি সরবরাহ করা হয়েছিল। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসকেরা বলেন, হাসপাতালে বছরের পর বছর ধরে পানির সংকট চলছে। উদ্বোধন শেষে কয়েক ঘণ্টা পানি সরবরাহ দেওয়ার পর পানি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সবাই হতাশ।

আলীকদম উপজেলার সহকারী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হালিম বলেন, পানি শোধনাগারের কাজটি শেষ হয়েছে। পানির সংযোগ নিতে স্থানীয়দের আগ্রহ কম। 

এই বিষয়ে আলীকদম উপজেলা নির্বাহী অফিসার আতাউল গনি ওসমানী বলেন, কাজটি প্রায় সমাপ্ত হয়েছে। আগে মাইকিং করা হয়েছিলো কিন্তু গ্রাহক না থাকায় পানি দেওয়া হয়নি। পানির লাইনের খরচও কমানো হয়েছে।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ভ্যানচালকের বাড়িতে থেকে দেড় হাজার কেজি সরকারি চাল উদ্ধার

নওগাঁর রাণীনগরে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির দেড় হাজার কেজি চাল উদ্ধার করা হয়েছে। আজ রোববার বিকেলে উপজেলার ভবানীপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চালগুলো উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা চালগুলো স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) মেম্বারের জিম্মায় রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে আইনগত প্রক্রিয়া চলমান বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ

১ দিন আগে

পটুয়াখালীতে গণপিটুনিতে ডাকাত নিহত, আহত ১

১ দিন আগে

রংপুরে ২০ বছরে পাট চাষ কমেছে ৭০ শতাংশ

গত ১০ বছরে এই অঞ্চলে পাট চাষের পরিমাণ প্রায় ৪০% কমেছে। আর গত ২০ বছরের হিসাবে এই হ্রাসের পরিমাণ ৭০%।

১ দিন আগে

ফের বন্ধ করে দেওয়া হলো কাপ্তাই বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৬ জলকপাট

উল্লেখ্য, হঠাৎ করে গত কয়েকদিন ধরে কাপ্তাই লেকের তীরবর্তী অঞ্চলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় মুহূর্তে লেকের পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় অথাৎ বীপদ সীমার উপর অতিক্রম করায় ফের দ্বিতীয় বারের মতো গত বুধবার (২০ আগস্ট) রাত ৮ টায় কেন্দ্রের ১৬টি জলকপাট ৬ ইঞ্চি করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এতে করে কাপ্তাই লেক হতে প্রতি সেক

২ দিন আগে