আসছে সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট, কমছে ৭ হাজার কোটি

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
বাজেট। প্রতীকী ছবি

২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য সাত লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করতে যাচ্ছে সরকার। বাজেটের এই আকার চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তুলনায় সাত হাজার কোটি টাকা কম।

মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার সংক্রান্ত কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের এক বৈঠকে বাজেটের এ আকার চূড়ান্ত করা হয়।

চলতি অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার সাত লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। গত বছরের ৬ জুন এ বাজেট পেশ করেন ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এটি বাংলাদেশের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বাজেট। বাজেট পেশ করা সবচেয়ে বয়স্ক অর্থমন্ত্রীও ছিলেন তিনি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বাজেট বাস্তবায়নে যেন কোনো সমস্যা না হয়, সেটি বিবেচনায় রেখেই বাজেটের আকার নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজেটের এই আকার অক্ষুণ্ন থাকলে স্বাধীনতার পর এটিই হবে প্রথম বাজেট, যেটি আগের অর্থবছরের তুলনায় আকারে ছোট হবে।

অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র বলছে, রাজস্ব আহরণে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি না হওয়া এবং বৈদেশিক ঋণ ও অনুদান কমে যাওয়ার পাশাপাশি বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচি (এডিপি) থেকে অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প বাদ দেওয়ার কারণে চলতি অর্থবছরের তুলনায় আগামী অর্থবছরের বাজেট আকারে কিছুটা ছোট হচ্ছে।

অর্থ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, মূলত উন্নয়ন খাতে বাজেটের আকার কমানো হয়েছে। নতুন অর্থবছর বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) বরাদ্দ রাখা হচ্ছে দুই লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর এ খাতে বরাদ্দ ছিল দুই লাখ ৬৫ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ এডিপিতে বরাদ্দ কমছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা।

এডিপি কমে যাওয়ায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে মেগা প্রকল্পগুলোর ওপর। আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নেওয়া বেশির ভাগ মেগা প্রকল্পের কাজ শেষ হয়েছে। যেগুলো এখনো বাকি রয়েছে, সেগুলোও বাস্তবায়ন না করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। পাশাপাশি আগের সরকারের মেয়াদে রাজনৈতিক বিবেচনায় নেওয়া প্রকল্পগুলোও বাতিল করা হয়েছে এবং হচ্ছে। এতে আগামী অর্থবছরে প্রকল্প কমবে, কমবে উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয়।

বাজেটের আকার কমলেও চলতি অর্থবছরের তুলনায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়ছে। চলতি অর্থবছরে এ লক্ষ্যমাত্রা ছিল চার লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা। পরে রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক প্রবণতা না থাকায় তা প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা কমানো হয়। তবে আগামী অর্থবছরের জন্য এই লক্ষ্যমাত্রা আরও বাড়িয়ে করা হচ্ছে পাঁচ লাখ ১৮ হাজার কোটি টাকা।

আগামী অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি প্রাক্কলন করা হয়েছে দুই লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। চড়া সুদে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণগ্রহণ কমাতে ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রা সীমিত রাখার চেষ্টা করছে অর্থ বিভাগ। এর মধ্যে অর্ধেকেরও বেশি বিদেশি উৎস থেকে এবং বাকিটা ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ করবে সরকার।

নতুন অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির হার ৬ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করছে অর্থবিভাগ। চলতি অর্থবছরের বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়েছিল। সংশোধিত বাজেটে জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৫ দশমিক ২৫ শতাংশ ও মূল্যস্ফীতি ৮ দশমিক ৫ শতাংশ প্রাক্কলন করা হয়।

ad
ad

অর্থের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বাণিজ্য ঘাটতি কমলে শুল্ক আরো কমাবে যুক্তরাষ্ট্র : বাণিজ্য উপদেষ্টা

আজকে সুনির্দিষ্টভাবে পাল্টা শুল্ক ১৫ শতাংশ করার বিষয়ে আলোচনা হয়নি। তবে বাণিজ্য ঘাটতি কমার সঙ্গে সঙ্গে শুল্ক কমানোর বিষয়ে আলোচনা করেছি এবং তারা এতে আশ্বস্ত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপ করা বাড়তি ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরো কমিয়ে ১৫ শতাংশ চায় বাংলাদেশ। এ বিষয়ে আলোচনা ও সমঝোতার

১ দিন আগে

সেবা খাতে বেশি দুর্নীতি বিদ্যমান: অর্থ উপদেষ্টা

টেক্স আইনজীবী প্রয়োজনে বিনা পয়সায় ট্যাক্স রিটার্ন দিয়ে দেবেন, এমন বক্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, টাকা পয়সা ছাড়াই সহজে কাজ করে দেবেন এটা সম্ভব নয়। বরং ভালো করে সেবা দিয়ে টাকা দাবি করবেন মানুষ কোনো আপত্তি করবে না।

২ দিন আগে

মার্কিন বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ঢাকা আসছে আজ

২ দিন আগে

ধনাত্মক পুঁজিবাজারকে ঋণাত্মক পরিণতি দেওয়া উদ্বেগজনক

বাজারসংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় মাফিয়া দোসরদের বহাল রেখে বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফেরানো সম্ভব নয়। বিনিয়োগবান্ধব বাজার গঠনও অসম্ভব। এই কঠিন বাস্তবতা অনুধাবনে ব্যর্থ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

৩ দিন আগে