আটাবের লক্ষ্য গঠনতন্ত্র মোতাবেক সকল এজেন্সির ব্যবসা করার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা

বাল্ক টিকিট বিক্রি ও মজুদদারি বন্ধের দাবি অ্যাটাবের

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও এয়ারলাইনস কর্তৃক যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকিট বিক্রয় ও মজুদদারি বন্ধের দাবি জানিয়েছে ট্রাভেল এজেন্টদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আটাব)। শিক্ষার্থী, বিদেশগামী শ্রমিকদের স্বস্তি দিতে বাল্ক টিকিট বিক্রি ও মজুতদারি বন্ধ, সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়া নির্ধারণে বেবিচকসহ সরকারের সংশ্লিষ্টদের পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন অ্যাটাবের সভাপতি আবদুস সালাম আরেফ।

রবিবার রাজধানীর হোটেলে অ্যাটাব আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলেনে লিখিত বক্তব্যে অ্যাটাব সভাপতি বলেন, আটাব ১৯৭৬ সালে প্রতিষ্ঠার পর থেকে সদস্যদের কল্যাণের পাশাপাশি বাংলাদেশের এভিয়েশন ও পর্যটন খাতের উন্নয়নের লক্ষ্যে দীর্ঘ দিন যাবৎ নিরলসভাবে কাজ করছে।

আটাবের লক্ষ্য গঠনতন্ত্র মোতাবেক সকল এজেন্সির ব্যবসা করার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতকরণ, এই সেক্টরের দুর্নীতি দমন এবং এই ব্যবসাকে ব্যবহার করে যেন কোনো মানিলন্ডারিং করতে না পারে, তার জন্য যথাযথ নীতিমালা, নির্দেশনা, মনিটরিং ও আইনের প্রয়োগ নিশ্চিতকরণ। সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের বেসামরিক বিমান পরিবহন খাতে চলমান অন্যতম বড় সমস্যা এয়ার টিকেটের অতিরিক্ত মূল্য বৃদ্ধি। এই মূল্য বৃদ্ধির নেপথ্যে অন্যতম প্রধান কারণ নামবিহীন গ্রুপ টিকেট বুকিং।

আবদুস সালাম আরেফ বলেন, কতিপয় মধ্যপ্রাচ্যগামী এয়ারলাইন্স তাদের পছন্দের কিছু সংখ্যক এজেন্সির নামে কোনো প্রকার পাসপোর্ট, ভিসা, ভ্রমন নথিপত্র, এবং প্রবাসগামী শ্রমিকদের কোনো প্রকার বৈদেশিক ওয়ার্ক পারমিট এমনকি যাত্রী তালিকা ছাড়াই শুধুমাত্র ইমেইলের মাধ্যমে বিভিন্ন রুটের গ্রুপ সিট ২/৩ মাস অগ্রিম তারিখের পিএনআর তৈরিপূর্বক সিট ব্লক করে রাখে।

এভাবে টিকেট মজুদদারি করা হয়। যার ফলে সিন্ডিকেট তৈরি হয়, আসন সংকট দেখা দেয়, টিকিট মূল্য ২০ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ কখনও দ্বিগুণ বা তিনগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় এবং বিদেশগামী শ্রমিক, স্টুডেন্ট, প্রবাসীরা চরম আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন।

এয়ার টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও এয়ারলাইনস কর্তৃক যাত্রীর নাম, পাসপোর্ট, ভিসা ছাড়া বাল্ক টিকিট বিক্রয় ও মজুদদারি বন্ধে আবদুস সালাম আরেফ বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।

অ্যাটাব জানিয়েছে, ভাড়া সহনীয় রাখতে সিডিউল ফ্লাইট বৃদ্ধি করা, অতিরিক্ত ফ্লাইট পরিচালনার ব্যবস্থা করা, দ্রুত অনুমোদন দেওয়া ও ওপেন স্কাই ঘোষণা করতে হবে যাতে সকল দেশের এয়ারলাইন্স যাত্রী পরিবহন করতে আগ্রহী হয়।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নাম, পাসপোর্ট নম্বার, ভিসা, ম্যানপাওয়ার ক্লিয়ারেন্স ব্যতীত কোনো বুকিং করা যাবে না, সিট ব্লকের মাধ্যমে ফ্লাইটের ইনভেন্টরি ব্লক হয়ে যায়, যে কারণে মূল্য বাড়তে থাকে। এ ছাড়া কোনো ট্রাভেল এজেন্সির কাছে প্রকৃত চাহিদা না থাকলেও এয়ারলাইন্সের কাছে দুই লাইনের একটি ইমেইল করে কৃত্রিম ডিমান্ডের তৈরি করে। কৃত্রিম ডিমান্ডের পরিমাণ প্রতিনিয়ত বাড়ছে এয়ারলাইন্সের এই পলিসির কারণে। ট্রাভেল এজেন্সিরা তার কাছে ডিমান্ড না থাকা সত্ত্বেও পণ্য মজুদ করার মতো এয়ার টিকিট মজুদ করছে। এটা বন্ধ করতে হবে।

বর্তমানে ৬০ হাজারেরও বেশি সিট এয়ারলাইন্স ব্লক করে রেখেছে। এই সিটগুলো এখনই ওপেন করে দিলে উদ্ভুত সংকট দূর হয়ে যাবে বলে জানান আবদুস সালাম আরেফ। তার মতে, এয়ারলাইন্সের ডিস্ট্রিবিউশন পলিসি ওপেন রাখতে হবে। জিডিএস/এনডিসি এ সিট সেল করার নির্দেশনা দিতে হবে এবং সকল এজেন্সিকে বিক্রয় করার সুযোগ দিতে হবে। বিভিন্ন রুটে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন ভাড়া বাস্তবসম্মতভাবে নির্ধারণ করা। এয়ারলাইন্স কর্তৃক হিডেন ফেয়ার এ গ্রুপ টিকিট/প্রাইভেট ফেয়ার এ টিকিট বিক্রয় বন্ধ করার নির্দেশনা দিতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১০/২০ হাজার সিট/টিকিট দিয়ে দেওয়া হয় কোনো কোনো এজেন্সির কাছে। এর মাধ্যমেই সিন্ডিকেটের উৎপত্তি। এজেন্সি প্রতি সর্বোচ্চ সেল সিলিং নির্ধারণ করতে হবে।

শ্রমিক ও ওমরাহ যাত্রীদের এয়ারলাইন্স ফরমেটে টিকিট প্রদান করতে হবে যেখানে ভাড়া, এজেন্সি বিবরণ উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। প্রকৃত মূল্য যাত্রীর দৃষ্টিতে আসবে। ফলে নির্ধারিত দামের অতিরিক্ত দাম নিতে পারবে না। মূল্য উল্লেখ ছাড়া টিকিট দেওয়া যাবে না।

জিএসএ কর্তৃক ভাড়া বৃদ্ধি ও কাউন্টার সেল বন্ধ করা।১৯৮৪ সালের বেসামরিক বিমান চলাচল আইন ও বিধিমালা মেনে নিয়ন্ত্রণ করা।

বাজেট এয়ারলাইন্সগুলো অল্প টাকায় যাত্রী পরিবহন করার ঘোষণা দিয়ে থাকলেও বাংলাদেশ থেকে তারা লিগ্যাছি ক্যারিয়ারের মতোই বেশি দামে টিকিট বিক্রি করে। বাজেট ক্যারিয়ার সংক্রান্ত বিধিমালা আছে কিনা না? না থাকলে সেটাও তৈরি করতে হবে।

এয়ারলাইন্স পরিচালনার যেই গাইডলাইন আছে সেখানে তাদের সেলস পদ্ধতি এবং মার্কেটিং পলিসি এ দেশের জনগণের জন্য কোনো রকমের নেগেটিভ ইম্প্যাক্ট না করে সেজন্য বিধিমালা প্রস্তুত করা।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক), প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়, আটাব/জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি)/ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়/ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বাংলাদেশ ব্যাংকের সমন্বয়ে একটি টাস্কফোর্স গঠন করতে হবে তারা চাহিদা, ক্যাপাসিটি ও সুবিধা অসুবিধা নিয়ে আলোচনা করবে, সমাধান করবেন। অসাধু ট্রাভেল এজেন্ট ও এয়ারলাইন্স স্টাফদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তারা ব্যবস্থা নেবেন। প্রয়োজনে মোবাইলকোর্ট পরিচালনা করবেন।

প্রবাসী শ্রমিকদের স্বস্তি দিতে লেবার ফেয়ার নির্ধারণ করা। বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় দ্রুত সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধান না করতে পারলে সমস্যা আরো প্রকট হবে এবং যাত্রীসাধারণ উচ্চ মূল্যে টিকেট ক্রয় করতে বাধ্য হবে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মন্ত্রণালয় থেকে অতি দ্রুত সমাধানের নির্দেশনা দিতে হবে বলে জানান আবদুস সালাম আরেফ।

সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন আটাবের মহাসচিব আফসিয়া জান্নাত সালেহ, সাবেক মহাসচিব জিন্নুর আহমেদ চৌধুরী দিপু, উপমহাসচিব তোয়াহা চৌধুরী, অর্থসচিব মো. সফিক উল্যাহ্ নান্টুসহ আটাবের কার্যনির্বাহী পরিষদ ও ঢাকা আঞ্চলিক পরিষদের সদস্যরা।

ad
ad

অর্থের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

হেরিটেজ সুইটসের ৩য় শাখা বসুন্ধরা ‘ই’ ব্লকে

প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হেরিটেজ সুইটসের তৃতীয় শাখা যাত্রা শুরু করল রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। বসুন্ধরার ‘ই’ ব্লকের ঢালী কাঁচাবাজার ও আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য এ শাখা হবে ঐতিহ্য, স্বাদ ও আনন্দের মিলনস্থল।

২ দিন আগে

জেট ফুয়েলের দাম আরো বাড়ল

রবিবার (৯ নভেম্বর) বিইআরসি সচিব মো. নজরুল ইসলাম সরকার স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন দর নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়েছে। যা কার্যকর হবে আগামীকাল ৯ নভেম্বর রাত ১২টা থেকে এবং পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাকবে।

৩ দিন আগে

পে কমিশনের সিদ্ধান্ত আগামী সরকারের: অর্থ উপদেষ্টা

উপদেষ্টা বলেন, পে কমিশনের ব্যাপারটা আছে। এটা নিয়ে আমরা এখন কিছু বলতে পারি না। ওটা দেখা যাক কতদূর যায়। আমরা ইনিশিয়েট করে ফেলেছি। কিন্তু সেটা আগামী সরকার হয়তো করতে পারে।

৩ দিন আগে

৪-৫ দিনে দাম না কমলে পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন: বাণিজ্য উপদেষ্টা

বাণিজ্য উপদেষ্টা পেঁয়াজ আমদানির অনুমোদন চেয়ে অনেকেই আবেদন দিয়ে রেখেছেন। বর্তমানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে এমন আবেদন রয়েছে দুই হাজার ৮০০টি।

৩ দিন আগে