ফজলুল বারী
গত সপ্তাহে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজার স্থায়ী লাভের জায়গা নয়। তিনি ছোট বিনিয়োগকারীদের আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করতে ডিএসই ও বিএসইসিকে উদ্যোগ নিতে বলেন।
আসলে আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করা উচিত অর্থ মন্ত্রণালয়কে। উদ্দেশ্য— অর্থ মন্ত্রণালয় যেন অর্থ ও পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ, যোগ্য, সৎ, দূরদর্শী ও ন্যায়নিষ্ঠদের সমাবেশ ঘটানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। সুশীল-কুশীলদের দ্বারা অর্থ ও পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনা চলে না, দুর্নীতি-কারসাজি ও অব্যবস্থাপনায় চলে— এটা প্রমাণিত।
অর্থ ও পুঁজিবাজারে শীর্ষ পদসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে যথাযথ ও গুণী ব্যক্তিত্বের অভাবে উভয় বাজার মুখ থুবড়ে পড়ে আছে গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে। এর ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ চাহিদা নেই বললেই চলে। পুঁজিবাজারে খরা। মার্জিন জালে ক্যাসিনো রমরমা।
সম্প্রতি সরকারের ইচ্ছায় তালিকাভুক্ত পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে। সম্ভাব্য নাম— ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক (ইইবি)। সম্ভাব্য মূলধন ৩৫ হাজার ২০ কোটি টাকা। প্রাথমিক পুঁজি ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকার জোগান দেবে সরকারই। ব্যাংক লাভে গেলে শেয়ার ছেড়ে বিনিয়োগ অঙ্ক ফেরত নেবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকের ছোট আমানতকারীরা দুই লাখ টাকা করে পাবেন। স্পন্সর ডিরেক্টরদের শেয়ার দেওয়া হবে। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরাও শেয়ার পাবেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কী পাবেন? সেটা পরিকল্পনায় নেই। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত ইইবি গঠিত হলে উল্লিখিত পাঁচ ব্যাংক তালিকাচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে।
তালিকাচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যাংকগুলো হলো— এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। পাঁচটির মধ্যে চারটিই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ মাফিয়া গ্রুপ এস আলমের। এক্সিম ব্যাংক ব্যাংক খাতের হাসিনা খাদেম নজরুল ইসলাম মজুমদারের।
উল্লিখিত পাঁচ ব্যাংকের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ অঙ্ক ফেস ভ্যালু (অবহিত মূল্য) অনুযায়ী চার হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। ব্যাংক পাঁচটির পরিশোধিত মূলধন পাঁচ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা।
ফেস ভ্যালু মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পান না। কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে বাজার থেকে কিনতে হয়। সে হিসাবে বিনিয়োগ অঙ্ক কম করে হলেও ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের এ বিপুল বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার রাস্তা কী? জবাব কে দেবে? জবাব হলো— সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিবিএর দায়িত্ব হবে বিএসইসিকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ জোরদার করা।
বিনিয়োগ সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব— প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও প্রস্তাবিত ব্যাংকের শেয়ার দেওয়া উচিত। এটা তাদের অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
পরিতাপের বিষয়— বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। বিনিয়োগকারীদের নিজেদেরও কার্যকর সংগঠন নেই। তবে বিনিয়োগকারীর পুঁজি লুটেপুটে খাওয়ার লোকের অভাব নেই।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিপুল অঙ্কের টাকা বেক্সিমকো লিমিটেড ও সুকুক বন্ডেও আটকা আছে। পুঁজিবাজারের ‘রাক্ষস তিমি’ সালমান এফ রহমান অ্যান্ড গং সুকুক বন্ড ছেড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জবরদস্তির মাধ্যমে উত্তোলন করেছে।
সরকারি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ফোকলা করার অন্যতম ইন্সট্রুমেন্টও এই সুকুক বন্ড। বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার এখন পর্যন্ত ১১০ টাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকা পড়ে আছে।
সর্বশেষ ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয় ২০২২ সালের ২৮ জুলাই। বিভিন্ন দফায় বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি সব শেয়ার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের ওপরে কেনাবেচা হচ্ছে। সমস্যায় আছেন কেবল বেক্সিমকো লিমিটেডের বিনিয়োগকারীরা। ফ্লোর প্রাইসের কারণে এ শেয়ারের লেনদেন বন্ধ রয়েছে টানা তিন বছর। অসুস্থ হলে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে বা মৃত ব্যক্তির সৎকারের প্রয়োজনেও তারা টাকা তুলতে পারছেন না।
বেক্সিমকো লিমিটেড ফ্লোরে থাকায় ঝামেলায় আছে ব্রোকার হাউজগুলোও। বিভিন্ন ব্রোকার হাউজে একক, দশক, শতক, সহস্র, লক্ষ অঙ্কের বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার বিও অ্যাকাউন্ট আছে। সেগুলো তাদের টানতে হচ্ছে! কারণ, ক্রেতা নেই। বেদনা আছে। এর দায় বিএসইসি ছাপিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বিএসইসির ‘আন-অফিশিয়াল’ বক্তব্য হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয় মানা করেছে। তাই বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা যাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মৌখিক বক্তব্য কর্তাদের মানা আছে।
ভেতরের কথা—বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা হলে জনতা, রূপালী, অগ্রণীসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ইকুইটি কমবে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি।
সরকার অপেক্ষায় আছে— কবে শেয়ারবাজার ভালো হবে। জাপান/চীনের কাছে বেক্সিমকো ফার্মাসহ বিভিন্ন কোম্পানি বিক্রি হবে। এ দুটোর একটি বিকল্প পূরণ হলেই লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে!
বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলার সহজ সমাধান হলো— বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার তো বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের বিও অ্যাকাউন্টে আছে। সিডিবিএলে সব তথ্য আছে। সালমান ও সালমান ঘনিষ্ঠদের বিও অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক’ করা হলে ৮০ শতাংশ শেয়ার বিক্রির জোগান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। বাকি ২০ শতাংশের বিষয়টি বাজার খেলোয়াড়রা বুঝবেন।
সরকার ও বিএসইসি সে পথে এগোচ্ছে না। তারা সালমানের স্বার্থ রক্ষার মিশনে নেমেছে বলে মনে হচ্ছে। তার বহির্প্রকাশ ঘটেছে গত সপ্তাহে ডিএসইর সুকুক বন্ড সংক্রান্ত সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছায় উল্লিখিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে। বর্তমানে সুকুক বন্ড মানেই সালমানের সুকুক বন্ড।
গত সপ্তাহেও পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক চিত্র বহাল ছিল। পুঁজিবাজারের সব সূচক নিম্নগামী ছিল। ইতিবাচক অবস্থানে ছিল শুধুমাত্র ডিএসইর মার্কেট পিই— মাত্র ১০.৪৩। ক্রয়-অনুকূল বাজার। কিন্তু ক্রেতার আগ্রহ কম।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক
গত সপ্তাহে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজার স্থায়ী লাভের জায়গা নয়। তিনি ছোট বিনিয়োগকারীদের আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করতে ডিএসই ও বিএসইসিকে উদ্যোগ নিতে বলেন।
আসলে আরও ভালোভাবে শিক্ষিত করা উচিত অর্থ মন্ত্রণালয়কে। উদ্দেশ্য— অর্থ মন্ত্রণালয় যেন অর্থ ও পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনায় বিশেষজ্ঞ, যোগ্য, সৎ, দূরদর্শী ও ন্যায়নিষ্ঠদের সমাবেশ ঘটানোর সক্ষমতা অর্জন করতে পারে। সুশীল-কুশীলদের দ্বারা অর্থ ও পুঁজিবাজার ব্যবস্থাপনা চলে না, দুর্নীতি-কারসাজি ও অব্যবস্থাপনায় চলে— এটা প্রমাণিত।
অর্থ ও পুঁজিবাজারে শীর্ষ পদসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে যথাযথ ও গুণী ব্যক্তিত্বের অভাবে উভয় বাজার মুখ থুবড়ে পড়ে আছে গত দেড় দশকেরও বেশি সময় ধরে। এর ফলে বেসরকারি খাতে ঋণ চাহিদা নেই বললেই চলে। পুঁজিবাজারে খরা। মার্জিন জালে ক্যাসিনো রমরমা।
সম্প্রতি সরকারের ইচ্ছায় তালিকাভুক্ত পাঁচটি দুর্বল ব্যাংক একীভূত হতে যাচ্ছে। সম্ভাব্য নাম— ইউনাইটেড ইসলামী ব্যাংক (ইইবি)। সম্ভাব্য মূলধন ৩৫ হাজার ২০ কোটি টাকা। প্রাথমিক পুঁজি ২০ হাজার ২০০ কোটি টাকার জোগান দেবে সরকারই। ব্যাংক লাভে গেলে শেয়ার ছেড়ে বিনিয়োগ অঙ্ক ফেরত নেবে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকের ছোট আমানতকারীরা দুই লাখ টাকা করে পাবেন। স্পন্সর ডিরেক্টরদের শেয়ার দেওয়া হবে। প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীরাও শেয়ার পাবেন।
সাধারণ বিনিয়োগকারীরা কী পাবেন? সেটা পরিকল্পনায় নেই। এ অবস্থায় প্রস্তাবিত ইইবি গঠিত হলে উল্লিখিত পাঁচ ব্যাংক তালিকাচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবে।
তালিকাচ্যুত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যাংকগুলো হলো— এক্সিম ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক। পাঁচটির মধ্যে চারটিই ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ মাফিয়া গ্রুপ এস আলমের। এক্সিম ব্যাংক ব্যাংক খাতের হাসিনা খাদেম নজরুল ইসলাম মজুমদারের।
উল্লিখিত পাঁচ ব্যাংকের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ অঙ্ক ফেস ভ্যালু (অবহিত মূল্য) অনুযায়ী চার হাজার ৪৭৮ কোটি টাকা। ব্যাংক পাঁচটির পরিশোধিত মূলধন পাঁচ হাজার ৮৬৯ কোটি টাকা।
ফেস ভ্যালু মূল্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা শেয়ার পান না। কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে বাজার থেকে কিনতে হয়। সে হিসাবে বিনিয়োগ অঙ্ক কম করে হলেও ১০ থেকে ১৫ হাজার কোটি টাকা হতে পারে।
বিনিয়োগকারীদের এ বিপুল বিনিয়োগ ফেরত পাওয়ার রাস্তা কী? জবাব কে দেবে? জবাব হলো— সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠান হলো বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও ডিবিএর দায়িত্ব হবে বিএসইসিকে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ জোরদার করা।
বিনিয়োগ সংশ্লিষ্টদের প্রস্তাব— প্রাতিষ্ঠানিক আমানতকারীদের মতো সাধারণ বিনিয়োগকারীদেরও প্রস্তাবিত ব্যাংকের শেয়ার দেওয়া উচিত। এটা তাদের অধিকারের মধ্যেই পড়ে।
পরিতাপের বিষয়— বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের ব্যক্তি বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ দেখার কেউ নেই। বিনিয়োগকারীদের নিজেদেরও কার্যকর সংগঠন নেই। তবে বিনিয়োগকারীর পুঁজি লুটেপুটে খাওয়ার লোকের অভাব নেই।
সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বিপুল অঙ্কের টাকা বেক্সিমকো লিমিটেড ও সুকুক বন্ডেও আটকা আছে। পুঁজিবাজারের ‘রাক্ষস তিমি’ সালমান এফ রহমান অ্যান্ড গং সুকুক বন্ড ছেড়ে তিন হাজার কোটি টাকা বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে জবরদস্তির মাধ্যমে উত্তোলন করেছে।
সরকারি ব্যাংকসহ বিভিন্ন ব্যাংক ফোকলা করার অন্যতম ইন্সট্রুমেন্টও এই সুকুক বন্ড। বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার এখন পর্যন্ত ১১০ টাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকা পড়ে আছে।
সর্বশেষ ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয় ২০২২ সালের ২৮ জুলাই। বিভিন্ন দফায় বেক্সিমকো লিমিটেড ও ইসলামী ব্যাংক ছাড়া বাকি সব শেয়ার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়। ইসলামী ব্যাংকের শেয়ার ফ্লোর প্রাইসের ওপরে কেনাবেচা হচ্ছে। সমস্যায় আছেন কেবল বেক্সিমকো লিমিটেডের বিনিয়োগকারীরা। ফ্লোর প্রাইসের কারণে এ শেয়ারের লেনদেন বন্ধ রয়েছে টানা তিন বছর। অসুস্থ হলে চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে বা মৃত ব্যক্তির সৎকারের প্রয়োজনেও তারা টাকা তুলতে পারছেন না।
বেক্সিমকো লিমিটেড ফ্লোরে থাকায় ঝামেলায় আছে ব্রোকার হাউজগুলোও। বিভিন্ন ব্রোকার হাউজে একক, দশক, শতক, সহস্র, লক্ষ অঙ্কের বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার বিও অ্যাকাউন্ট আছে। সেগুলো তাদের টানতে হচ্ছে! কারণ, ক্রেতা নেই। বেদনা আছে। এর দায় বিএসইসি ছাপিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত গড়িয়েছে।
বিএসইসির ‘আন-অফিশিয়াল’ বক্তব্য হচ্ছে, অর্থ মন্ত্রণালয় মানা করেছে। তাই বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা যাচ্ছে না। অর্থ মন্ত্রণালয়ের মৌখিক বক্তব্য কর্তাদের মানা আছে।
ভেতরের কথা—বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা হলে জনতা, রূপালী, অগ্রণীসহ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকগুলোর ইকুইটি কমবে ২০০ থেকে ৩০০ কোটি টাকারও বেশি।
সরকার অপেক্ষায় আছে— কবে শেয়ারবাজার ভালো হবে। জাপান/চীনের কাছে বেক্সিমকো ফার্মাসহ বিভিন্ন কোম্পানি বিক্রি হবে। এ দুটোর একটি বিকল্প পূরণ হলেই লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলা হবে বলে আভাস পাওয়া গেছে!
বেক্সিমকো লিমিটেডের ফ্লোর প্রাইস তোলার সহজ সমাধান হলো— বেক্সিমকো লিমিটেডের শেয়ার তো বিভিন্ন ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজের বিও অ্যাকাউন্টে আছে। সিডিবিএলে সব তথ্য আছে। সালমান ও সালমান ঘনিষ্ঠদের বিও অ্যাকাউন্ট ‘ব্লক’ করা হলে ৮০ শতাংশ শেয়ার বিক্রির জোগান স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। বাকি ২০ শতাংশের বিষয়টি বাজার খেলোয়াড়রা বুঝবেন।
সরকার ও বিএসইসি সে পথে এগোচ্ছে না। তারা সালমানের স্বার্থ রক্ষার মিশনে নেমেছে বলে মনে হচ্ছে। তার বহির্প্রকাশ ঘটেছে গত সপ্তাহে ডিএসইর সুকুক বন্ড সংক্রান্ত সেমিনার আয়োজনের মাধ্যমে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইচ্ছায় উল্লিখিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে বাজারে গুঞ্জন রয়েছে। বর্তমানে সুকুক বন্ড মানেই সালমানের সুকুক বন্ড।
গত সপ্তাহেও পুঁজিবাজারে ঋণাত্মক চিত্র বহাল ছিল। পুঁজিবাজারের সব সূচক নিম্নগামী ছিল। ইতিবাচক অবস্থানে ছিল শুধুমাত্র ডিএসইর মার্কেট পিই— মাত্র ১০.৪৩। ক্রয়-অনুকূল বাজার। কিন্তু ক্রেতার আগ্রহ কম।
লেখক: জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক
চলতি সেপ্টেম্বর মাসের তিন সপ্তাহ তথা প্রথম ২১ দিনে দেশে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ২ দশমিক শূন্য ৩ বিলিয়ন তথা ২০৩ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার। দেশীয় মুদ্রায় এর পরিমাণ ২৫ হাজার ৩৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা।
৫ দিন আগেযাত্রা শুরুর দুই বছরের মধ্যে বসুন্ধরা টয়লেট্রিজ বাজারে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করেছে। এই অগ্রযাত্রাকে আরও গতিশীল করে ভবিষ্যতের লক্ষ্যে নতুন উদ্দীপনা যোগ করতে সম্প্রতি কক্সবাজারের একটি হোটেলে এই সেলস মিট অনুষ্ঠিত হয় ‘ফুরফুরে মনে একসাথে, চলো সফলতার পথে’ প্রতিপাদ্য নিয়ে।
৬ দিন আগেবাংলাদেশের শীর্ষস্থানীয় ভোক্তা–পণ্য ব্র্যান্ড বসুন্ধরা গ্রুপের তিনটি পণ্য— বসুন্ধরা পেপার, বসুন্ধরা টিস্যু এবং বসুন্ধরা ডায়াপ্যান্ট— পেয়েছে সুপারব্র্যান্ডস বাংলাদেশ ২০২৫–২৬ এর স্বীকৃতি। রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে এ সম্মাননা প্রদান করা হয়।
৬ দিন আগে৯ বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের (আরসিবিসি) আট কোটি ১০ লাখ ডলার আদালতের মাধ্যমে বাজেয়াপ্ত করার কথা জানিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
৭ দিন আগে