৫ আগস্টের পরে সাদিক কায়েম সমন্বয়ক পরিচয় ব্যবহার করেছে: নাহিদ

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৪: ১২
নাহিদ ইসলাম (বাঁয়ে) ও সাদিক কায়েম (ডানে)

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, সাদিক কায়েম বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিল না। কিন্তু ৫ আগস্ট থেকে সে এ পরিচয় ব্যবহার করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে তিনি এ নিয়ে একটি দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন।

স্ট্যাটাসে নাহিদ বিএনপি মহাসচিব ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতা সাদিক কায়েমের বক্তব্যকে ‘মিথ্যাচার’ বলে দাবি করেছে। স্ট্যাটাসটিতে জাতীয় সরকার গঠন প্রক্রিয়া, ‘ছাত্রশক্তি’র জন্ম এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী বিভিন্ন ঘটনার বিষয়ে নিজস্ব অবস্থান তুলে ধরেছেন নাহিদ।

তিনি বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সম্প্রতি একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন জাতীয় সরকারের কোনো প্রস্তাবনা ছাত্রদের পক্ষ থেকে তাদের দেওয়া হয়নি। তারা অন্য মাধ্যমে এ প্রস্তাবনা পেয়েছিল। এই বক্তব্যটি সত্য নয়।

নাহিদ ইসলাম বলেন, ৫ আগস্ট রাতের প্রেস ব্রিফিংয়ে আমরা বলেছিলাম অন্তর্বর্তীকালীন জাতীয় সরকার করতে চাই। সেই ব্রিফিংয়ের পর জনাব তারেক রহমানের সঙ্গে আমাদের ভার্চুয়াল মিটিং হয়, সেখানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সরকার ও নতুন সংবিধানের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তারেক রহমান এ প্রস্তাবে সম্মত হননি। তিনি নাগরিক সমাজের সদস্যদের দিয়ে নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের সাজেশন দেন। আমরা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কথা বলি প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে।

তিনি বলেন, ৭ আগস্ট ভোরে মির্জা ফখরুলের বাসায় আমরা উনার সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকার ও উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে আলোচনা করি। উপদেষ্টা পরিষদ শপথ নেবার আগে তারেক রহমানের সঙ্গে আরেকটি মিটিংয়ে প্রস্তাবিত উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যবৃন্দ নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা হয়।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিবিরের ভূমিকা প্রসঙ্গে সাবেক সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, শিবির নেতা সাদিক কায়েম সম্প্রতি একটা টকশোতে বলেছেন ছাত্রশক্তির গঠনপ্রক্রিয়ায় শিবির যুক্ত ছিল, শিবিরের ইনস্ট্রাকশনে আমরা কাজ করতাম। এটা মিথ্যাচার। ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রের সাথে জড়িত একটা অংশ এবং ঢাবি ছাত্র অধিকার থেকে পদত্যাগ করা একটা অংশ মিলে ছাত্রশক্তি গঠিত হয়। সাথে জাবির একটা স্টাডি সার্কেলও যুক্ত হয়। একটা নতুন ছাত্র সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য ‘গুরুবার আড্ডা’ পাঠচক্রে দীর্ঘসময় ধরে কাজ করা হয়েছে। আমরা ক্যাম্পাসে আট বছর রাজনীতি করছি। ফলে প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সব সংগঠন ও নেতৃত্বকে আমরা চিনতাম এবং সকল পক্ষের সাথেই আমাদের যোগাযোগ ও সম্পর্ক ছিল। সেই কারণে ঢাবি শিবিরের সাথেও যোগাযোগ ছিল। যোগাযোগ, সম্পর্ক বা কখনো সহযোগিতা করা মানে এই না যে তারা আমাদের রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় যুক্ত ছিল।

‘দ্বিতীয়ত, সাদিক কায়েম বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো সমন্বয়ক ছিল না। কিন্তু ৫ অগাস্ট থেকে এই পরিচয় সে ব্যবহার করেছে। অভ্যুত্থানে শিবিরের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কারণে সাদিক কায়েমকে প্রেস ব্রিফিংয়ে বসার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু সাদিক কায়েমরা অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে ঢালাও প্রচারণা করেছে এই অভ্যুত্থান ঢাবি শিবিরই নেতৃত্ব দিসে, আমরা সামনে শুধু পোস্টার ছিলাম। অভ্যুত্থানে শিবিরের ভূমিকা কেউ অস্বীকার করে নাই। কিন্তু এই অভ্যুত্থান শিবিরের একক নয়, শিবিরের ইনস্ট্রাকশন বা ডিরেকশনও হয় নাই। আমরা সব পক্ষের সাথে যোগাযোগ করেই সিদ্ধান্ত নিতাম। আর কারা ক্ষমতার ভাগবাঁটোয়ারা করতে চাইছে, গোষ্ঠী স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে সে বিষয়ে অন্যদিন বলব।’

এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ২ অগাস্ট, ২০২৪ রাতে জুলকারনাইন সায়েররা একটা আর্মি ক্যু করে সামরিক বাহিনীর এক অংশের হাতে ক্ষমতা দিতে চেয়েছিল। এ উদ্দেশ্যে কথিত সেইফ হাউজে থাকা ছাত্র সমন্বয়কদের চাপ প্রয়োগ করা হয়, থ্রেইট করা হয় যাতে সে রাতে ফেসবুকে তারা সরকার পতনের একদফা ঘোষণা করে আর আমাদের সাথে যাতে আর কোনো যোগাযোগ না রাখে। রিফাতদের বিভিন্ন লেখায় এ বিষয়ে বলা হয়েছে। আমাদের বক্তব্য ছিল একদফার ঘোষণা মাঠ থেকে জনগণের মধ্য থেকে দিতে হবে। আর যারা এভাবে চাপ প্রয়োগ করছে তাদের উদ্দেশ্য সন্দেহজনক। আমাদের ভেতর প্রথম থেকে এটা স্পষ্ট ছিল যে ক্ষমতা কোনোভাবে সেনাবাহিনী বা সেনাবাহিনী সমর্থিত কোনো গ্রুপের কাছে দেওয়া যাবে না। এতে আরেকটা এক-এগারো হবে এবং আওয়ামী লীগ ফিরে আসার সুযোগ তৈরি হবে এবং আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এটাকে জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত গণঅভ্যুত্থান হিসেবে সফল করতে হবে এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে সামনে আগাতে হবে। ৫ই অগাস্ট থেকে আমরা এ অবস্থান ব্যক্ত করে গিয়েছি।

নাহিদ ইসলাম বলেন, সায়েরগং ৫ই অগাস্টের পর বারবার চেষ্টা করেছে আমাদের বিরুদ্ধে পাল্টা নেতৃত্ব দাঁড় করাতে। সেক্ষেত্রে সাদিক কায়েমদের ব্যবহার করেছে এবং তারা ব্যবহৃতও হয়েছে। সায়ের গংদের এ চেষ্টা অব্যাহত আছে। কল রেকর্ড ফাঁস, সার্ভাইলেন্স, চরিত্রহনন, অপপ্রচার, প্রোপাগান্ডা হেন কোনো কাজ নাই হচ্ছে না। বাংলাদেশে সিটিং মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে যত অপপ্রচার হচ্ছে এ দেশের ইতিহাসে এরকম কখনো হইছে কিনা জানা নাই। কিন্তু মিথ্যার উপর দিয়ে বেশিদিন টিকা যায় না। এরাও টিকবে না।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

মেন্দি সাফাদির সঙ্গে দেখা হয়েছিল— ২ বছর পর স্বীকারোক্তি নুরের

মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে সাক্ষাতের প্রসঙ্গে নুর বলেন, “একটি কফিশপে দাঁড়িয়ে ছবি তুলেছিলাম। ‘কফিটফি, মিটিং-টিটিং’ কিছুই হয়নি। আমি অনেক বিড়ম্বনায় ছিলাম। অনেক ধকল সহ্য করতে হয়েছে।”

১৯ ঘণ্টা আগে

'বিএনপির নির্বাচন দাবির যৌক্তিকতা এখন প্রমাণ হচ্ছে'

তিনি বলেন, এত সমস্যার মধ্যেও ১২টাতে ঐকমত্য হয়েছে। বাকিগুলোও আশাবাদী। মৌলিক সংস্কার করে লন্ডন বৈঠকের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন হলে দ্বিধা কেটে যাবে।

২১ ঘণ্টা আগে

জি এম কাদেরের সাংগঠনিক কার্যক্রমে আদালতের নিষেধাজ্ঞা

জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, রুহুল আমিন হাওলাদার ও মুজিবুল হক চুন্নুসহ দলের চার নেতার এক আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে বিচারক এ আদেশ দিয়েছেন।

২১ ঘণ্টা আগে

শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

পূর্বাচলে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রকল্পে নিয়মবহির্ভূতভাবে সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত।

১ দিন আগে