
নাজমুল ইসলাম হৃদয়

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঢাকা-৩ আসনেও (দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ) ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও হেভিওয়েট নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নাম। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সক্রিয়তায় পিছিয়ে নেই বুড়িগঙ্গার তীরের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে। বরং নতুন এ রাজনৈতিক দলটি ভোটের মাঠে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রার্থিতা নিয়ে। অনেক আসনেই দলটি থেকে একজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকলেও এ আসনে চারজন তরুণ নেতা দলের প্রার্থী হতে মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
ঢাকা-৩ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই চারজন হলেন— ঢাকা জেলা দক্ষিণ যুবশক্তির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সংগঠক শেখ ফয়সাল, এনসিপির কেরানীগঞ্জ উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী ফেরদৌস আলম, ঢাকা জেলা যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক রাব্বি ইসলাম নিলয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। চারজনই আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের প্রার্থী হয়ে জয় ছিনিয়ে আনার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলটির অন্যতম নীতিনির্ধারক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কেরানীগঞ্জে তার ও তার পরিবারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ আসনে এককভাবে প্রচারে রয়েছেন ঢাকা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আলহাজ্ব সুলতান আহমেদ খান।
এ ছাড়া তারুণ্যের আরেক প্রতিনিধি হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গণঅধিকার পরিষদের যুবনেতা সাজ্জাদ আল ইসলাম। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও চব্বিশের অভ্যুত্থানের এই যোদ্ধা তরুণ ভোটারদের মাঝে বেশ আলোচিত।
বড় দলের বড় নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হলেও এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেউ ভড়কে যাচ্ছেন না। আবার একই আসন থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়ে চাপও অনুভব করছেন না। তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে শাপলা কলি প্রতীকে জিতিয়ে আনার জন্যই তারা কাজ করবেন।
মনোনয়ন ফরমের শর্ত অনুযায়ী দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ ফয়সাল তার রাজনৈতিক দর্শনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আমাদের মনোনয় ফর্মে লিখিত অঙ্গীকার থাকে, দল শেষ পর্যন্ত যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে বাকিরা কাজ করবে। তাই আমাদের মধ্যে বিভেদের কোনো সুযোগ নেই। বরং প্রার্থী বেশি হওয়া মানে দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া।’
শেখ ফয়সাল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পুরনো রাজনীতিবিদরা নিজেদের ভাগ্য ছাড়া দেশের কোনো পরিবর্তন করতে পারেননি। কিন্তু আমরা তরুণরা হাসিনার পতনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি— আমরাই পরিবর্তন আনতে পারি। এমপির কাজ রাস্তাঘাট উন্নয়ন করা নয়, সেটি স্থানীয় সরকারের কাজ। এমপির প্রকৃত কাজ আইন প্রণয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি।’
দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও যুব সমাজের অবক্ষয় রোধকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসনে এনসিপি থেকে আমাদের চারজনের মনোনয়ন চাওয়াকে আমি অত্যন্ত ইতিবাচক ও দলের স্বাধীনতার পরিচায়ক হিসেবে দেখছি। আমাদের ঐক্য এতটাই সুদৃঢ় যে, আমরা কেউ কেউ একসঙ্গে গিয়ে মনোনয়ন কিনেছি।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সমস্যার কথা তুলে ধরে ফেরদৌস বলেন, ‘এখানে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব, মাদকাসক্তি ও ছিনতাই-চাঁদাবাজির সমস্যা প্রকট। আমি নিজেও এ প্রজন্মের একজন। তরুণদের এই বেহাল দশা পরিবর্তন করতে ও সমস্যাগুলো নিরসন করতে আমাদের মতো তরুণদেরই এগিয়ে আসা উচিত।’
রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে আসা এবং ভয়ের সংস্কৃতি ভাঙার কথা জানিয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী রাব্বি ইসলাম নিলয়। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে এমপি বা নেতা হওয়া মানেই ছিল অনেক টাকা, ক্ষমতা এবং প্রটোকল নিয়ে চলা, যা দেখে সাধারণ মানুষ ভয় পেত। আমরা সে ভয়ের সংস্কৃতি ভেঙে ক্ষমতাকে জনতার কাতারে নামিয়ে আনতে চাই। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে একজন কৃষকের বা রিকশাচালকের ছেলেও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবে।’
জুলাই আন্দোলনে আহত এই নেতা আরও বলেন, ‘লড়াইটা এখন আর রাজপথের নয়, রাজনীতির। আমি সৎ ও আপসহীন, নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে কখনো ছাড় দেবো না। যারা ৫ টাকার কাছে বিক্রি হয় না, এমন মানুষদের নিয়েই আমি সমাজ পরিবর্তন করতে চাই।’
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দলের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও নিজের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন আরেক প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নতুন দল হিসেবে আমাদের চারজনের মনোনয়ন চাওয়াটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমাদের চারজনের মধ্যে দল যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবে, আমরা বাকিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার পক্ষেই কাজ করব। কারণ আমরা বিশ্বাস করি—ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, আর দলের চেয়ে দেশ বড়।’
সাইফুল আরও করেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কঠিন সময়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। কাজের সুবাদেই কেরানীগঞ্জের মানুষের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সংগঠনের ভাইদের অনুরোধ এবং সাধারণ মানুষের চাওয়ার কারণেই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে এনসিপির প্রার্থীদের বিষয়ে নিজেদের প্রত্যাশার পাশাপাশি সতর্কবার্তাও জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার সদস্য সচিব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসনে এনসিপির একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম তোলার বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। এটি প্রমাণ করে মানুষ এখন বিকল্প ও পরিবর্তন চায়।’
তবে এই সমর্থন নিঃশর্ত নয়। বিষয়টি স্পষ্ট করে আরিফ হোসেন বলেন, “এনসিপির সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্ব থাকলেও সমর্থন অন্ধ হবে না। যারা ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণ করবে এবং শহিদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করবে, আমরা তাদেরই প্রাধান্য দেবো। সেক্ষেত্রে এনসিপি এগিয়ে থাকলে তাদের সঙ্গে কাজ করব। আবার যদি অন্য কোনো দল জনসম্পৃক্ততা ও উন্নয়নে এগিয়ে থাকে, তবে তাদের সমর্থন দিতেও আমরা পিছুপা হব না। দিনশেষে আমরা যোগ্যতা ও জনগণের উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দেবো।’
এক আসনে চারজনের মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহের বিষয়টিকে দলের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে দেখছেন এনসিপির নীতিনির্ধারকরা। দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসন থেকে আমাদের দলের চারজন প্রার্থী মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন। গণতান্ত্রিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। সমাজের ইতিবাচক মানুষ ও নতুন মুখের এই স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ প্রমাণ করে যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে।’
প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় দল যে কঠোর অবস্থান নেবে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ফরম তুললেই যে কেউ চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন— বিষয়টি এমন নয়। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা মূলত তিনটি বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে ধরছি— প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সংগঠনের প্রতি তার নিবেদিতপ্রাণ মনোভাব এবং স্থানীয় পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা। সবকিছু পর্যালোচনা করেই দল আগামী নির্বাচনের জন্য যোগ্যতম প্রার্থীকে চূড়ান্ত করবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঢাকা-৩ আসনেও (দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ) ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এরই মধ্যে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও হেভিওয়েট নেতা গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের নাম। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও গণঅধিকার পরিষদের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সক্রিয়তায় পিছিয়ে নেই বুড়িগঙ্গার তীরের গুরুত্বপূর্ণ এ আসনে। বরং নতুন এ রাজনৈতিক দলটি ভোটের মাঠে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রার্থিতা নিয়ে। অনেক আসনেই দলটি থেকে একজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকলেও এ আসনে চারজন তরুণ নেতা দলের প্রার্থী হতে মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
ঢাকা-৩ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই চারজন হলেন— ঢাকা জেলা দক্ষিণ যুবশক্তির আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় সংগঠক শেখ ফয়সাল, এনসিপির কেরানীগঞ্জ উপজেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী ফেরদৌস আলম, ঢাকা জেলা যুবশক্তির মুখ্য সংগঠক রাব্বি ইসলাম নিলয় এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেরানীগঞ্জ দক্ষিণের আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম। চারজনই আগামী জাতীয় নির্বাচনে ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের প্রার্থী হয়ে জয় ছিনিয়ে আনার বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী।
এ আসনে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলটির অন্যতম নীতিনির্ধারক গয়েশ্বর চন্দ্র রায়। কেরানীগঞ্জে তার ও তার পরিবারের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক প্রভাব রয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ আসনে এককভাবে প্রচারে রয়েছেন ঢাকা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যক্ষ মোহাম্মদ শাহিনুর ইসলাম। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন আলহাজ্ব সুলতান আহমেদ খান।
এ ছাড়া তারুণ্যের আরেক প্রতিনিধি হিসেবে ‘ট্রাক’ প্রতীকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন গণঅধিকার পরিষদের যুবনেতা সাজ্জাদ আল ইসলাম। ২০১৮ সালের কোটা সংস্কার ও চব্বিশের অভ্যুত্থানের এই যোদ্ধা তরুণ ভোটারদের মাঝে বেশ আলোচিত।
বড় দলের বড় নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হলেও এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেউ ভড়কে যাচ্ছেন না। আবার একই আসন থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়ে চাপও অনুভব করছেন না। তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে শাপলা কলি প্রতীকে জিতিয়ে আনার জন্যই তারা কাজ করবেন।
মনোনয়ন ফরমের শর্ত অনুযায়ী দলের সিদ্ধান্তের বাইরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই উল্লেখ করে এনসিপির কেন্দ্রীয় সংগঠক ও মনোনয়নপ্রত্যাশী শেখ ফয়সাল তার রাজনৈতিক দর্শনের বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘আমাদের মনোনয় ফর্মে লিখিত অঙ্গীকার থাকে, দল শেষ পর্যন্ত যাকে মনোনয়ন দেবে তার পক্ষে বাকিরা কাজ করবে। তাই আমাদের মধ্যে বিভেদের কোনো সুযোগ নেই। বরং প্রার্থী বেশি হওয়া মানে দলের সক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া।’
শেখ ফয়সাল আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের পুরনো রাজনীতিবিদরা নিজেদের ভাগ্য ছাড়া দেশের কোনো পরিবর্তন করতে পারেননি। কিন্তু আমরা তরুণরা হাসিনার পতনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি— আমরাই পরিবর্তন আনতে পারি। এমপির কাজ রাস্তাঘাট উন্নয়ন করা নয়, সেটি স্থানীয় সরকারের কাজ। এমপির প্রকৃত কাজ আইন প্রণয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা। কেরানীগঞ্জের ব্যবসায়ী ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে আমি নিজেকে যোগ্য মনে করি।’
দলের অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র ও যুব সমাজের অবক্ষয় রোধকে গুরুত্ব দিচ্ছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ফেরদৌস আলম। তিনি বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসনে এনসিপি থেকে আমাদের চারজনের মনোনয়ন চাওয়াকে আমি অত্যন্ত ইতিবাচক ও দলের স্বাধীনতার পরিচায়ক হিসেবে দেখছি। আমাদের ঐক্য এতটাই সুদৃঢ় যে, আমরা কেউ কেউ একসঙ্গে গিয়ে মনোনয়ন কিনেছি।’
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের সমস্যার কথা তুলে ধরে ফেরদৌস বলেন, ‘এখানে তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব, মাদকাসক্তি ও ছিনতাই-চাঁদাবাজির সমস্যা প্রকট। আমি নিজেও এ প্রজন্মের একজন। তরুণদের এই বেহাল দশা পরিবর্তন করতে ও সমস্যাগুলো নিরসন করতে আমাদের মতো তরুণদেরই এগিয়ে আসা উচিত।’
রাজনীতিকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় নিয়ে আসা এবং ভয়ের সংস্কৃতি ভাঙার কথা জানিয়েছেন মনোনয়নপ্রত্যাশী রাব্বি ইসলাম নিলয়। রাজনীতি ডটকমকে তিনি বলেন, ‘বিগত সময়ে এমপি বা নেতা হওয়া মানেই ছিল অনেক টাকা, ক্ষমতা এবং প্রটোকল নিয়ে চলা, যা দেখে সাধারণ মানুষ ভয় পেত। আমরা সে ভয়ের সংস্কৃতি ভেঙে ক্ষমতাকে জনতার কাতারে নামিয়ে আনতে চাই। আমরা এমন বাংলাদেশ গড়তে চাই, যেখানে একজন কৃষকের বা রিকশাচালকের ছেলেও প্রধানমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে পারবে।’
জুলাই আন্দোলনে আহত এই নেতা আরও বলেন, ‘লড়াইটা এখন আর রাজপথের নয়, রাজনীতির। আমি সৎ ও আপসহীন, নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে কখনো ছাড় দেবো না। যারা ৫ টাকার কাছে বিক্রি হয় না, এমন মানুষদের নিয়েই আমি সমাজ পরিবর্তন করতে চাই।’
গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে দলের প্রতি মানুষের আগ্রহ ও নিজের মাঠপর্যায়ের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন আরেক প্রার্থী সাইফুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘নতুন দল হিসেবে আমাদের চারজনের মনোনয়ন চাওয়াটা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমাদের চারজনের মধ্যে দল যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবে, আমরা বাকিরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে তার পক্ষেই কাজ করব। কারণ আমরা বিশ্বাস করি—ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, আর দলের চেয়ে দেশ বড়।’
সাইফুল আরও করেন, ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কঠিন সময়ে আমরা রাজপথে ছিলাম। কাজের সুবাদেই কেরানীগঞ্জের মানুষের সঙ্গে আমার গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। সংগঠনের ভাইদের অনুরোধ এবং সাধারণ মানুষের চাওয়ার কারণেই আমি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এদিকে এনসিপির প্রার্থীদের বিষয়ে নিজেদের প্রত্যাশার পাশাপাশি সতর্কবার্তাও জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার সদস্য সচিব মোহাম্মদ আরিফ হোসেন বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসনে এনসিপির একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন ফরম তোলার বিষয়টিকে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি। এটি প্রমাণ করে মানুষ এখন বিকল্প ও পরিবর্তন চায়।’
তবে এই সমর্থন নিঃশর্ত নয়। বিষয়টি স্পষ্ট করে আরিফ হোসেন বলেন, “এনসিপির সঙ্গে আমাদের ভ্রাতৃত্ব থাকলেও সমর্থন অন্ধ হবে না। যারা ‘জুলাই স্পিরিট’ ধারণ করবে এবং শহিদ ও আহতদের নিয়ে কাজ করবে, আমরা তাদেরই প্রাধান্য দেবো। সেক্ষেত্রে এনসিপি এগিয়ে থাকলে তাদের সঙ্গে কাজ করব। আবার যদি অন্য কোনো দল জনসম্পৃক্ততা ও উন্নয়নে এগিয়ে থাকে, তবে তাদের সমর্থন দিতেও আমরা পিছুপা হব না। দিনশেষে আমরা যোগ্যতা ও জনগণের উন্নয়নকেই অগ্রাধিকার দেবো।’
এক আসনে চারজনের মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহের বিষয়টিকে দলের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে দেখছেন এনসিপির নীতিনির্ধারকরা। দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকা-৩ আসন থেকে আমাদের দলের চারজন প্রার্থী মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন। গণতান্ত্রিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। সমাজের ইতিবাচক মানুষ ও নতুন মুখের এই স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ প্রমাণ করে যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে।’
প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় দল যে কঠোর অবস্থান নেবে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ফরম তুললেই যে কেউ চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন— বিষয়টি এমন নয়। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা মূলত তিনটি বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে ধরছি— প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সংগঠনের প্রতি তার নিবেদিতপ্রাণ মনোভাব এবং স্থানীয় পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা। সবকিছু পর্যালোচনা করেই দল আগামী নির্বাচনের জন্য যোগ্যতম প্রার্থীকে চূড়ান্ত করবে।’

বাংলাদেশে সফররত ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে এ কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রোববার (২৩ নভেম্বর) রাত ৮ টায় হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বিএনপি মহাসচিবের নেতৃত্বে দলের স্থায়ী কমিটি সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান ও বিএনপি সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ সাক্ষাতে
১৫ ঘণ্টা আগে
তিনি মনোনয়ন বঞ্চিত হওয়ায় কর্মী সমর্থকরা একাধিকবার বিক্ষোভ করেছে। এমন পরিস্থিতিতে সাজুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। তার বিরুদ্ধে দলের নীতি ও আদর্শ পরিপন্থি কর্মকাণ্ডসহ দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করার অভিযোগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
১৬ ঘণ্টা আগে
তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় ইসলামবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছে। ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে বিএনপি কখনো আপোষ করেনি।
১৭ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে কোনো কাজ করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
১৮ ঘণ্টা আগে