ভারতের কোনো ষড়যন্ত্র টিকবে না : ফয়জুল করীম

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম বলেছেন, ‘শ্রমের বিনিময়ে ন্যায্য মজুরি পাওয়ার জন্য শ্রমিকরা আন্দোলনে নামতে বাধ্য হচ্ছে। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গার্মেন্টস শ্রমিকদের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গার্মেন্টস সেক্টর অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষা করে যাচ্ছে। দেশের গার্মেন্টস সেক্টর ধ্বংস করতে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র অব্যাহত আছে। এক শ্রেণির অসাধু লোক ঠুনকো অজুহাতে বিভিন্ন আন্দোলন করে দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চক্রান্ত করছে।’

আজ বৃহস্পতিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি হারুন অর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে বক্তব্য দেন ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুহাম্মাদ আমিনুল ইসলাম, সহকারী সেক্রেটারি এইচ এমন রফিকুল ইসলাম, মুহাম্মাদ হায়দার আলী, শাহাদাত হোসেন প্রধানিয়া ও মুহাম্মাদ মাহবুব আলম প্রমুখ।

এ সময় ফয়জুল করীম বলেন, ‘সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দেশকে ধ্বংস করার চক্রান্তের অংশ হিসেবে শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। তাদের মজুরি ঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে না। গার্মেন্টস সেক্টর পরিচালনার বর্তমান আইন শ্রমিকদের জন্য কল্যাণকর নয়। যার কারণে শ্রমিকদের অবৈধভাবে অপসারণ করা হয়। কোনো কোনো গার্মেন্টস শ্রমিকরা জানেনই না কখন তাদের বিদায় নিতে হবে। এ কারণে অনেক শ্রমিক সন্তুষ্টির সাথে কাজে মনোনিবেশ করে না। যে কারণে কাঙ্ক্ষিত উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘শ্রমিকদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি না করে জুলুম বন্ধ করে যথাযথ অধিকার দেওয়া হলে উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়ে শ্রমিক, মালিক ও দেশ লাভবান হত। শ্রমিক ও মালিকদের মধ্যে পরিকল্পিতভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করা হয়েছে। শ্রমিকদের জন্য প্রয়োজনীয় মানসম্পন্ন আবাসন ও পরিবহন ব্যবস্থার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে কলকারখানায় নারী শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা থাকা দরকার।

তিনি মালিক শ্রমিকদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আনার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে গার্মেন্টস সেক্টরের জন্য বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে। শ্রমিকরা কোনো অবস্থাতেই যাতে অধিকার বঞ্চিত না হয় সে ব্যবস্থা করতে হবে। অসুস্থ শ্রমিক বা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতার অঙ্গীকার থাকতে হবে।’

চামড়া শিল্পের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পরিকল্পিতভাবে দেশের চামড়া খাতকে ধ্বংস করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সরাসরি বা ইউরোপে চামড়া বিক্রি করতে পারে না, বাংলাদেশকে ভারত হয়ে চামড়া বিক্রয় করতে হয় বলে ট্যানারি মালিকরা জানিয়েছেন।’

তিনি এজন্য চামড়া রপ্তানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের প্রচলিত বিধি-বিধান পরিবর্তন করতে গুরুত্বারোপ করে বলেন, ‘গার্মেন্ট শিল্প ধ্বংস প্রায় গার্মেন্টস শিল্প যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে দিকে নজর দেয়া জরুরি।’

সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘ভারতে আমাদের সহকারী হাইকমিশনে আক্রমণ করা হয়েছে। বাংলাদেশের পতাকাকে অপমান করা হয়েছে। ভারতে থাকা আমাদের দেশের কূটনীতিকদের আক্রমণের কারণ কী? ভরত কি বাংলাদেশের পায়ে পাড়া দিয়ে যুদ্ধ বাজাতে চায়? ভারত যদি যুদ্ধ বাজাতেই চায় তবে তারা আমাদের কেমন বন্ধু? ভারত আমাদের কেমন বন্ধু তা মমতা ব্যানার্জির বক্তব্যে প্রমাণিত হয়েছে। তার বক্তব্যে শত্রুতা প্রমাণিত হয়েছে।’

ইসকন সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ইসকন হিন্দুদের কোনো ধর্মীয় সংগঠন নয়। এটা সন্ত্রাসীদের সংগঠন। দেশের হাজারো হিন্দু দেশপ্রেমিক। তারা দেশ নিয়ে ভাবে। দেশের উন্নয়নের জন্য চেষ্টা করে। কিন্তু ইসকন দেশ নিয়ে নয় বরং দেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। ইসকনের সদস্যরা বাংলাদেশের নাগরিক হলে বাংলাদেশে হস্তক্ষেপ করতে ভারতের কাছে দাবি জানাত না। তারা বাংলাদেশের অফিস আদালত ও আইনের প্রতি আস্থাশীল নয়। তারা অন্য কোনো দেশের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে কি না, তা তদন্ত করে খুঁজে বের করা দরকার।’

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘ভারত বাংলাদেশের মানুষের ওপর যুদ্ধ চাপিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করছে। বৃটিশ ও পাকিস্তানিরা ষড়যন্ত্র করে টিকতে পারেনি। ভারতও কোনো ষড়যন্ত্র করে টিকতে পারবে না। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের বক্তব্য আন্তর্জাতিক আইনের পরিপন্থি। বাংলাদেশের মানুষ বৃটিশকে ভয় পায়নি। পশ্চিম পাকিস্তানের কামান ও ট্যাংক ভয় পায়নি। আর বাংলাদেশের মানুষ ভারতকে ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসে না।’

সম্মেলনে মুহাম্মাদ হারুন অর রশিদকে সভাপতি ও হাজী মো. ফারুক হাওলাদারকে সাধারণ সম্পাদক করে গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের নতুন কমিটি ঘোষণা করা হয়।

গার্মেন্টস শ্রমিক আন্দোলনের সভাপতি হারুন অর রশিদ বলেন, ‘বৈষম্যের কারণে গার্মেন্টস শ্রমিকরা অনাহারে অর্ধাহারে দিনাতিপাত করছে। ছাত্র শ্রমিক জনতার আন্দোলনে শ্রমিকরা রক্ত দিলেও সরকারে কোনো শ্রমিক নেই। আমরা চাই সরকারে শ্রমিকদের প্রতিনিধি থাকবে।’

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

পিআরের বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে: খসরু

আমীর খসরু বলেন, যারা পিআর পদ্ধতির পক্ষে তাদের উচিত হবে জনগণের কাছে গিয়ে ম্যান্ডেট আনা। কিছু রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা করে আগামীর বাংলাদেশে কী হবে- তা ঠিক করতে মানুষ দায়িত্ব দেয় নাই। তাই সনদেরও ম্যান্ডেট লাগবে।

১০ ঘণ্টা আগে

কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্রকে অংশীদার হতে হবে: তারেক রহমান

একজন কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে আমি জানি মেয়েদের ক্ষমতায়ন কোনো নীতি নয়, এটি ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। বাংলাদেশের জন্য আমাদের স্বপ্ন হলো যেখানে প্রতিটি মেয়ের জন্য একই স্বাধীনতা, সুযোগ এবং নিরাপত্তা থাকবে, যা যেকোনো বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্য কামনা করেন।

১৪ ঘণ্টা আগে

তৃণমূলে বিএনপি-জামায়াত টক্কর, দুই দলের নজর আওয়ামী লীগের ভোটে

বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে চলে এসেছে বিএনপিরই একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটি নির্বাচনের প্রার্থী নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি শুরু করেছে আরও প্রায় বছরখানেক আগে।

১৬ ঘণ্টা আগে

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে না : মিয়া গোলাম পরওয়ার

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি নির্বাচনের আগে কোথাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে না। পুলিশ থেকে শুরু করে আমলা পর্যন্ত অনেককেই দেখা যাচ্ছে, বিশেষ দলের প্রতি দুর্বল হয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এগুলো পরিহার করে নির্বাচনের মাঠকে সমান ও সমতল করতে হবে।

১ দিন আগে