অরুণাভ বিশ্বাস
পলাশীর যুদ্ধ—ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এক মোড় ঘোরানো ঘটনা, যা ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী ও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধটি শুধু একটি সামরিক সংঘর্ষ ছিল না; এটি ছিল এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার নাটকীয় পরিণতি, যা ব্রিটিশদের ভারতীয় উপমহাদেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সূচনা করে।
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, মুঘল সাম্রাজ্যের অবসানকালীন দুর্বলতা ও ইউরোপীয় উপনিবেশবাদী শক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশ ও ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিগুলো ভারতে তাদের প্রভাব বিস্তারে লিপ্ত ছিল। এই প্রতিযোগিতা বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে কার্নাটিক যুদ্ধের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা ব্রিটিশদের বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ১৭৫৬ সালে, তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দখল করেন, যা 'ব্ল্যাক হোল অব কলকাতা' নামে কুখ্যাত একটি ঘটনার জন্ম দেয়। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে, ব্রিটিশরা রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে কলকাতা পুনর্দখল করে এবং ফরাসিদের চন্দননগর ঘাঁটি দখল করে।
পলাশীর যুদ্ধে, নবাবের বাহিনী সংখ্যায় প্রায় ৫০,০০০ সৈন্য নিয়ে গঠিত ছিল, যার মধ্যে ১৬,০০০ অশ্বারোহী ও ৫০টি কামান ছিল। অন্যদিকে, ক্লাইভের বাহিনী ছিল মাত্র ৩,০০০ সৈন্য, যার মধ্যে ৮০০ ইউরোপীয় ও ২,১০০ ভারতীয় সিপাহী ছিল। যুদ্ধের দিন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নবাবের কামানগুলি অকেজো হয়ে পড়ে, কারণ তারা বারুদ ঢেকে রাখতে ব্যর্থ হয়। ব্রিটিশরা তাদের কামানগুলি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখায় কার্যক্ষম থাকে। এই সুবিধা ও মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা ব্রিটিশদের বিজয় নিশ্চিত করে।
মীর জাফর, নবাবের সেনাপতি, ব্রিটিশদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেন এবং যুদ্ধের সময় তার বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় রাখেন। এই বিশ্বাসঘাতকতা নবাবের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধের পর, মীর জাফরকে নবাব ঘোষণা করা হয়, কিন্তু তিনি ব্রিটিশদের পুতুল শাসক হয়ে থাকেন। এই যুদ্ধের ফলে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, যা পরবর্তীতে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সহায়ক হয়।
পলাশীর যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে অনেক বিদেশি গবেষক মতামত প্রদান করেছেন। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ স্যার জন উইলিয়াম ফোর্টেস্কিউ বলেন, "পলাশীর যুদ্ধ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করে।" অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ পিটার হ্যারিংটন উল্লেখ করেন, "এই যুদ্ধ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে।" ফরাসি ইতিহাসবিদ ফিলিপ স্ট্যানহোপ বলেন, "পলাশীর যুদ্ধের পর, ফরাসিরা ভারতে তাদের প্রভাব হারায় এবং ব্রিটিশরা প্রধান ইউরোপীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।"
পলাশীর যুদ্ধ শুধু একটি সামরিক সংঘর্ষ ছিল না; এটি ছিল এক রাজনৈতিক বিপ্লব, যা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে, ব্রিটিশরা বাংলায় তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে এবং পরবর্তীতে সমগ্র ভারতে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। এই যুদ্ধের শিক্ষা হলো, অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও বিশ্বাসঘাতকতা একটি জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
পলাশীর যুদ্ধ—ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে এক মোড় ঘোরানো ঘটনা, যা ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন সংঘটিত হয়েছিল। এই যুদ্ধে বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলার বাহিনী ও ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সৈন্যদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। যুদ্ধটি শুধু একটি সামরিক সংঘর্ষ ছিল না; এটি ছিল এক রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র ও বিশ্বাসঘাতকতার নাটকীয় পরিণতি, যা ব্রিটিশদের ভারতীয় উপমহাদেশে আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সূচনা করে।
১৮ শতকের মাঝামাঝি সময়ে, মুঘল সাম্রাজ্যের অবসানকালীন দুর্বলতা ও ইউরোপীয় উপনিবেশবাদী শক্তিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে উঠেছিল। ব্রিটিশ ও ফরাসি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিগুলো ভারতে তাদের প্রভাব বিস্তারে লিপ্ত ছিল। এই প্রতিযোগিতা বিশেষ করে দক্ষিণ ভারতে কার্নাটিক যুদ্ধের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে। এই প্রেক্ষাপটে, বাংলার নবাব সিরাজউদ্দৌলা ব্রিটিশদের বাণিজ্যিক ও রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। ১৭৫৬ সালে, তিনি কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম দখল করেন, যা 'ব্ল্যাক হোল অব কলকাতা' নামে কুখ্যাত একটি ঘটনার জন্ম দেয়। এই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে, ব্রিটিশরা রবার্ট ক্লাইভের নেতৃত্বে কলকাতা পুনর্দখল করে এবং ফরাসিদের চন্দননগর ঘাঁটি দখল করে।
পলাশীর যুদ্ধে, নবাবের বাহিনী সংখ্যায় প্রায় ৫০,০০০ সৈন্য নিয়ে গঠিত ছিল, যার মধ্যে ১৬,০০০ অশ্বারোহী ও ৫০টি কামান ছিল। অন্যদিকে, ক্লাইভের বাহিনী ছিল মাত্র ৩,০০০ সৈন্য, যার মধ্যে ৮০০ ইউরোপীয় ও ২,১০০ ভারতীয় সিপাহী ছিল। যুদ্ধের দিন, ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে নবাবের কামানগুলি অকেজো হয়ে পড়ে, কারণ তারা বারুদ ঢেকে রাখতে ব্যর্থ হয়। ব্রিটিশরা তাদের কামানগুলি ত্রিপল দিয়ে ঢেকে রাখায় কার্যক্ষম থাকে। এই সুবিধা ও মীর জাফরের বিশ্বাসঘাতকতা ব্রিটিশদের বিজয় নিশ্চিত করে।
মীর জাফর, নবাবের সেনাপতি, ব্রিটিশদের সঙ্গে গোপনে চুক্তি করেন এবং যুদ্ধের সময় তার বাহিনীকে নিষ্ক্রিয় রাখেন। এই বিশ্বাসঘাতকতা নবাবের পরাজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যুদ্ধের পর, মীর জাফরকে নবাব ঘোষণা করা হয়, কিন্তু তিনি ব্রিটিশদের পুতুল শাসক হয়ে থাকেন। এই যুদ্ধের ফলে, ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে, যা পরবর্তীতে সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে তাদের আধিপত্য বিস্তারে সহায়ক হয়।
পলাশীর যুদ্ধের পরিণতি সম্পর্কে অনেক বিদেশি গবেষক মতামত প্রদান করেছেন। ব্রিটিশ ইতিহাসবিদ স্যার জন উইলিয়াম ফোর্টেস্কিউ বলেন, "পলাশীর যুদ্ধ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভিত্তি স্থাপন করে।" অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির ইতিহাসবিদ পিটার হ্যারিংটন উল্লেখ করেন, "এই যুদ্ধ ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে একটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে একটি সামরিক ও রাজনৈতিক শক্তিতে রূপান্তরিত করে।" ফরাসি ইতিহাসবিদ ফিলিপ স্ট্যানহোপ বলেন, "পলাশীর যুদ্ধের পর, ফরাসিরা ভারতে তাদের প্রভাব হারায় এবং ব্রিটিশরা প্রধান ইউরোপীয় শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।"
পলাশীর যুদ্ধ শুধু একটি সামরিক সংঘর্ষ ছিল না; এটি ছিল এক রাজনৈতিক বিপ্লব, যা ভারতীয় উপমহাদেশের ইতিহাসে গভীর প্রভাব ফেলেছে। এই যুদ্ধের মাধ্যমে, ব্রিটিশরা বাংলায় তাদের শাসন প্রতিষ্ঠা করে এবং পরবর্তীতে সমগ্র ভারতে তাদের আধিপত্য বিস্তার করে। এই যুদ্ধের শিক্ষা হলো, অভ্যন্তরীণ বিভাজন ও বিশ্বাসঘাতকতা একটি জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য কতটা বিপজ্জনক হতে পারে।
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, পশু নয়, কোরবানি হোক অহংকার, হিংসা ও অবিচারের।
৭ ঘণ্টা আগেবিশ্লেষকরা কেউ কেউ বলছেন, নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে বিএনপি ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যের বিপরীতে ‘জামায়াতের পরামর্শ’ গ্রহণ করার মধ্য দিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বোঝাতে চেয়েছেন, তিনি চাপের মুখে কিছু মেনে নেবেন না।
৯ ঘণ্টা আগেপবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সস্ত্রীক সাক্ষাৎ করেছেন সেনাপ্রধান ওয়াকার-উজ-জামান। শনিবার (৭ জুন) দুপুরে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
৯ ঘণ্টা আগেদেশকে গণতান্ত্রিক ধারা থেকে বিচ্যুত করার চেষ্টা চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির বিশেষ সহকারী ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। আজ শনিবার জাতীয় ঈদগাহে পবিত্র ঈদুল আজহার নামাজ আদায় শেষে তিনি এ মন্তব্য করেন।
১০ ঘণ্টা আগে