প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের পদ আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিএনপি একটি বিশ্বস্ত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ফজলুর রহমানকে দেওয়া পদ স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট আপনার (ফজলুর রহমান) নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। আপনি নোটিশের লিখিত জবাব না দিয়ে সময় বর্ধিত করার আবেদন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সময় আরো ২৪ ঘণ্টা বর্ধিত করা হয়। আপনি আজ নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক নয়। তথাপিও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে আপনার অবদান বিবেচনা করে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে আপনার দলীয় প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ তিন মাসের জন্য নির্দেশক্রমে স্থগিত করা হলো।
এখন থেকে আপনি টক শো বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলার সময় দেশের মর্যাদা ও দলের নীতিমালা যাতে ক্ষুণ্ন না হয় এবং দেশের জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না লাগে সে বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকবেন।
এর আগে, কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব দেন ফজলুর রহমান। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বরাবর পাঠানো লিখিত জবাবে তিনি বলেন, ২৪ আগস্ট রাত ৯টায় আপনার স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ আমি হাতে পাই। এরপর যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেওয়ার সময় বাড়ানোর জন্য আমি আবেদন করি। আপনি আমাকে ২৪ ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করেছেন, এজন্য ধন্যবাদ।
তিনি লিখেন, আপনার নোটিশে আমার কাছে সবকিছু জানতে চাওয়া হয়েছে। তাই অভিযোগগুলোর উত্তর একত্রে দিচ্ছি।
নোটিশের জবাবে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি লিখেছেন, অভিযোগ করা হয়েছে যে, আমি জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছি। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই অভিযোগ আমি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছি। আমি কোনোদিন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেইনি।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাইদকে পুলিশ সরাসরি গুলি করে হত্যার পর আমিই প্রথম বলেছিলাম, তিনি একুশ শতকের প্রথম ‘বীরশ্রেষ্ঠ’। আমার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি সবসময় জুলাই-আগস্ট শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছি।
আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি নাকি জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কথা বলেছি। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, এটি সত্য নয়। আমি ইসলাম ধর্ম এবং আল্লাহ-রাসুলে বিশ্বাসী একজন মানুষ।তবে রাজনৈতিকভাবে ধর্মের ব্যবসায়ীদের (যেমন জামায়াতে ইসলামী) বিরুদ্ধে অতীতেও বলেছি, ভবিষ্যতেও বলব।
১১টি পয়েন্টে ফজলুর রহমান লেখেন,
>> কোটাবিরোধী আন্দোলন যখন ছাত্রদের নেতৃত্বে প্রথম শুরু হয়েছিল তা ছিল নির্দলীয় চরিত্রের এবং রাজনৈতিক দাবি বিবর্জিত। আমিই প্রথম তাদেরকে ইউটিউবের মাধ্যমে উৎসাহ দিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলাম, ‘বাবারা তোমরা শুধু চাকরি চাও, গণতন্ত্র চাও না? তোমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করো।’
>> জুলাই আন্দোলনের পরতে পরতে সব কিছুর সঙ্গে জীবনের শঙ্কা নিয়েও যুক্ত ছিলাম, যা আমার দল (বিএনপি) এবং এ দেশের মানুষ জানে।
>> ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরে বিএনপি আহূত লাখ লাখ জনতার মহা-সমাবেশকে স্বৈরাচারী সরকার ১ ঘণ্টার আক্রমণে ভেঙে দিয়েছিল। পঁচিশ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী যখন জেলে ছিল, লাখ লাখ নেতাকর্মী যখন মিথ্যা মামলার আবর্তে পড়ে জীবন বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিল, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমি তখন প্রতিদিন অনলাইন এবং টেলিভিশন টক শোর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছি এবং জাতির সামনে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছি।
>> ৫ আগস্ট আন্দোলনের বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিস্ট শক্তি পালিয়ে গেল এবং জনগণ বিজয়ী হলো। আমি সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম ‘ইসলামী ছাত্র শিবিরের’ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করল ‘জামায়াত শিবিরই ছিল জুলাই আন্দোলনের মূল ভ্যানগার্ড’। আমি সেদিনই প্রথম শুনলাম এবং আন্দোলনের সব বিজয়কে তারা নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করল।
>> আমি জামায়াত-শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের এই অনৈতিক দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে শতবার বলেছি বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনে জমিটি তৈরি করেছিল বিএনপি, বীজ এবং চারা রোপণ করেছিল বিএনপি, তৈল মবিল পানি দিয়ে ধান ফলিয়ে ছিল বিএনপি, কিন্তু ধান কাটার লগ্নে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সেই তৈরি ধানটি কেটে দিয়েছিল। তারা ছিল আমার ভাষায় ‘দাওয়াল', কাজেই আন্দোলনের সব ফসল পাওয়ার দাবিটি অনুচিত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অবাক বিস্ময়ে সবাই দেখল একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত শিবির স্বদর্পে মাঠে হাজির হয়েছে এবং দাবি করছে সব আন্দোলনের ভ্যানগার্ড তারাই এবং শুধু একটা নির্বাচনের জন্যই তারা আন্দোলন করেনি বরং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকারের মতো দুঃসাহস তারা প্রদর্শন করতে লাগল। জামায়াত শিবিরের পত্রিকার আহ্বান জানানো হলে ’৭১-এ যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিল তারা আল্লাহর কাছে মাফ চাও (সূত্র : বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা)। সেদিন থেকে বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে তাদেরকে সাবধান করার চেষ্টা করেছি।
>> এরপর থেকে জামায়াত-শিবির এবং এনসিপি একসাথে বলতে শুরু করল ১৯৪৭ হলো প্রথম স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালে হলো দ্বিতীয় স্বাধীনতা, আর ১৯৭১ হলো ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া (সূত্র : বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা)। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মনে হলো এসব অশ্রাব্য এবং মিথ্যা তথ্য শোনার আগে আমার মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল। তাই জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের সত্য কথাগুলো বলতে শুরু করলাম এবং জামায়াত-শিবিরকে ‘কালো শক্তি’ চিহ্নিত করে এনসিপিকে তাদের সহযোগী বলতে শুরু করলাম। তারাই এখন দেশের প্রশাসন, অর্থ এবং বিশ্ববিদ্যালয় দখল করেছে।
>> সবশেষে বলতে চাই মানুষ এখন বুঝতে শুরু করেছে জুলাই আন্দোলনের দুটি রূপ ছিল। প্রথমতো বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্বে ‘গণ-আন্দোলন’। যার লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করা। যার প্রধান স্লোগান ছিল ‘এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি’। কিন্তু আমি যাদেরকে অন্ধকারের ‘কালো শক্তি’ বলেছি তারা হলো জামায়াত-শিবির যারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গণ-আন্দোলনের ফসলকে কুক্ষিগত করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র এবং শক্তি সৃষ্টি করছে। জাতীয় নির্বাচন তাদের নিকট গৌণ ব্যাপার।
>> বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের মহান ঘোষক ‘মেজর জিয়া’ পরবর্তী সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তার মহান স্মৃতিকে শ্রদ্ধা এবং স্মরণ করেই আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর কথা বলা এবং প্রতিবাদ করাকে আমার পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করি। গত ৬ মাস ধরে এ ব্যাপারে আমি শত শত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছি, এর মধ্যে দু-একটা বক্তব্যে আমার কিছু ভুল-ত্রুটিও থাকতে পারে, কারণ আমি তো মানুষ। আমি আরো দাবি করতে চাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার অন্যায়ভাবে কারাগারে নিক্ষেপ করার পরে আমি স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নেত্রীর মুক্তির জন্য সমগ্র বাংলাদেশে শত শত সভা ও জনসভায় বক্তব্য রেখেছি। এমনকি ইদানীংকালে একটি দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এমন জঘন্যতম কুৎসিত স্লোগান দিয়ে তাকে রাজনৈতিকভাবে অপমান করা হচ্ছিল যার উদাহরণ ‘গাছের ডালে কাউয়া’। তখন আমিই প্রথম ইউটিউব চ্যানেল পুর্নিয়াতে কঠিনভাবে এর বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলাম।
>> আমার সার্বিক বক্তব্য উপস্থাপনায় যদি প্রমাণিত হয় আমি কোনো ভুল বক্তব্য দিয়েছি তবে আমি দুঃখ প্রকাশ করব।
>> বিএনপির কোনো ক্ষতি হয় এমন কোনো কথা ও কাজ আমি করিনি এবং করবও না। জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের বিচার-বিবেচনার প্রতি আমার সর্বোচ্চ আস্থা আছে, আশা করি আমি সুবিচার পাব এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সর্বদাই অনুগত থাকব।
শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুর রহমানের পদ আগামী তিন মাসের জন্য স্থগিত করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সন্ধ্যায় বিএনপি একটি বিশ্বস্ত সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
ফজলুর রহমানকে দেওয়া পদ স্থগিতের চিঠিতে বলা হয়, গত ২৪ আগস্ট আপনার (ফজলুর রহমান) নামে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। আপনি নোটিশের লিখিত জবাব না দিয়ে সময় বর্ধিত করার আবেদন করেন।
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার সময় আরো ২৪ ঘণ্টা বর্ধিত করা হয়। আপনি আজ নোটিশের যে জবাব দিয়েছেন, তা সন্তোষজনক নয়। তথাপিও বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে আপনার অবদান বিবেচনা করে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা না নিয়ে আপনার দলীয় প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পর্যায়ের পদ তিন মাসের জন্য নির্দেশক্রমে স্থগিত করা হলো।
এখন থেকে আপনি টক শো বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথা বলার সময় দেশের মর্যাদা ও দলের নীতিমালা যাতে ক্ষুণ্ন না হয় এবং দেশের জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত না লাগে সে বিষয়ে সর্বদা সতর্ক থাকবেন।
এর আগে, কারণ দর্শানোর নোটিশের লিখিত জবাব দেন ফজলুর রহমান। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বরাবর পাঠানো লিখিত জবাবে তিনি বলেন, ২৪ আগস্ট রাত ৯টায় আপনার স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ আমি হাতে পাই। এরপর যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেওয়ার সময় বাড়ানোর জন্য আমি আবেদন করি। আপনি আমাকে ২৪ ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করেছেন, এজন্য ধন্যবাদ।
তিনি লিখেন, আপনার নোটিশে আমার কাছে সবকিছু জানতে চাওয়া হয়েছে। তাই অভিযোগগুলোর উত্তর একত্রে দিচ্ছি।
নোটিশের জবাবে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি লিখেছেন, অভিযোগ করা হয়েছে যে, আমি জুলাই-আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান নিয়ে ক্রমাগত কুরুচিপূর্ণ ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য দিচ্ছি। অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে বলছি, এই অভিযোগ আমি দৃঢ়ভাবে অস্বীকার করছি। আমি কোনোদিন কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দেইনি।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ আবু সাইদকে পুলিশ সরাসরি গুলি করে হত্যার পর আমিই প্রথম বলেছিলাম, তিনি একুশ শতকের প্রথম ‘বীরশ্রেষ্ঠ’। আমার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আমি সবসময় জুলাই-আগস্ট শহীদদের প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছি।
আরো বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে, আমি নাকি জনগণের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে কথা বলেছি। আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলছি, এটি সত্য নয়। আমি ইসলাম ধর্ম এবং আল্লাহ-রাসুলে বিশ্বাসী একজন মানুষ।তবে রাজনৈতিকভাবে ধর্মের ব্যবসায়ীদের (যেমন জামায়াতে ইসলামী) বিরুদ্ধে অতীতেও বলেছি, ভবিষ্যতেও বলব।
১১টি পয়েন্টে ফজলুর রহমান লেখেন,
>> কোটাবিরোধী আন্দোলন যখন ছাত্রদের নেতৃত্বে প্রথম শুরু হয়েছিল তা ছিল নির্দলীয় চরিত্রের এবং রাজনৈতিক দাবি বিবর্জিত। আমিই প্রথম তাদেরকে ইউটিউবের মাধ্যমে উৎসাহ দিয়ে বক্তব্য দিয়েছিলাম, ‘বাবারা তোমরা শুধু চাকরি চাও, গণতন্ত্র চাও না? তোমরা গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করো।’
>> জুলাই আন্দোলনের পরতে পরতে সব কিছুর সঙ্গে জীবনের শঙ্কা নিয়েও যুক্ত ছিলাম, যা আমার দল (বিএনপি) এবং এ দেশের মানুষ জানে।
>> ২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবরে বিএনপি আহূত লাখ লাখ জনতার মহা-সমাবেশকে স্বৈরাচারী সরকার ১ ঘণ্টার আক্রমণে ভেঙে দিয়েছিল। পঁচিশ হাজারেরও বেশি নেতাকর্মী যখন জেলে ছিল, লাখ লাখ নেতাকর্মী যখন মিথ্যা মামলার আবর্তে পড়ে জীবন বাঁচানোর জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করছিল, জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আমি তখন প্রতিদিন অনলাইন এবং টেলিভিশন টক শোর মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছি এবং জাতির সামনে আশার আলো জাগিয়ে রেখেছি।
>> ৫ আগস্ট আন্দোলনের বিজয়ের মাধ্যমে শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিস্ট শক্তি পালিয়ে গেল এবং জনগণ বিজয়ী হলো। আমি সেই সময়ে সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম। কিন্তু এর কিছুদিন পরেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম নেতা সারজিস আলম ‘ইসলামী ছাত্র শিবিরের’ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করল ‘জামায়াত শিবিরই ছিল জুলাই আন্দোলনের মূল ভ্যানগার্ড’। আমি সেদিনই প্রথম শুনলাম এবং আন্দোলনের সব বিজয়কে তারা নিজেদের মধ্যে কুক্ষিগত করল।
>> আমি জামায়াত-শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের এই অনৈতিক দাবির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে শতবার বলেছি বিগত ১৫ বছরের আন্দোলনে জমিটি তৈরি করেছিল বিএনপি, বীজ এবং চারা রোপণ করেছিল বিএনপি, তৈল মবিল পানি দিয়ে ধান ফলিয়ে ছিল বিএনপি, কিন্তু ধান কাটার লগ্নে ছাত্র আন্দোলনের নেতারা সেই তৈরি ধানটি কেটে দিয়েছিল। তারা ছিল আমার ভাষায় ‘দাওয়াল', কাজেই আন্দোলনের সব ফসল পাওয়ার দাবিটি অনুচিত। কিন্তু পরবর্তী সময়ে অবাক বিস্ময়ে সবাই দেখল একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াত শিবির স্বদর্পে মাঠে হাজির হয়েছে এবং দাবি করছে সব আন্দোলনের ভ্যানগার্ড তারাই এবং শুধু একটা নির্বাচনের জন্যই তারা আন্দোলন করেনি বরং একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকারের মতো দুঃসাহস তারা প্রদর্শন করতে লাগল। জামায়াত শিবিরের পত্রিকার আহ্বান জানানো হলে ’৭১-এ যারা অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করেছিল তারা আল্লাহর কাছে মাফ চাও (সূত্র : বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা)। সেদিন থেকে বিভিন্ন বক্তব্যের মাধ্যমে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে তাদেরকে সাবধান করার চেষ্টা করেছি।
>> এরপর থেকে জামায়াত-শিবির এবং এনসিপি একসাথে বলতে শুরু করল ১৯৪৭ হলো প্রথম স্বাধীনতা এবং ২০২৪ সালে হলো দ্বিতীয় স্বাধীনতা, আর ১৯৭১ হলো ভাইয়ে ভাইয়ে ঝগড়া (সূত্র : বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক পত্রিকা)। মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মনে হলো এসব অশ্রাব্য এবং মিথ্যা তথ্য শোনার আগে আমার মৃত্যু হওয়া উচিত ছিল। তাই জীবন-মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের সত্য কথাগুলো বলতে শুরু করলাম এবং জামায়াত-শিবিরকে ‘কালো শক্তি’ চিহ্নিত করে এনসিপিকে তাদের সহযোগী বলতে শুরু করলাম। তারাই এখন দেশের প্রশাসন, অর্থ এবং বিশ্ববিদ্যালয় দখল করেছে।
>> সবশেষে বলতে চাই মানুষ এখন বুঝতে শুরু করেছে জুলাই আন্দোলনের দুটি রূপ ছিল। প্রথমতো বিএনপিসহ জাতীয়তাবাদী শক্তির নেতৃত্বে ‘গণ-আন্দোলন’। যার লক্ষ্য ছিল ফ্যাসিবাদী হাসিনা সরকারকে পরাজিত করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত করা। যার প্রধান স্লোগান ছিল ‘এক দফা এক দাবি হাসিনা তুই কবে যাবি’। কিন্তু আমি যাদেরকে অন্ধকারের ‘কালো শক্তি’ বলেছি তারা হলো জামায়াত-শিবির যারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে গণ-আন্দোলনের ফসলকে কুক্ষিগত করে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র এবং শক্তি সৃষ্টি করছে। জাতীয় নির্বাচন তাদের নিকট গৌণ ব্যাপার।
>> বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা মুক্তিযুদ্ধের মহান ঘোষক ‘মেজর জিয়া’ পরবর্তী সময়ে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের প্রতিষ্ঠিত দেশের সবচেয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দল। তার মহান স্মৃতিকে শ্রদ্ধা এবং স্মরণ করেই আমি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে এই অপশক্তির বিরুদ্ধে নিরন্তর কথা বলা এবং প্রতিবাদ করাকে আমার পবিত্র দায়িত্ব বলে মনে করি। গত ৬ মাস ধরে এ ব্যাপারে আমি শত শত বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছি, এর মধ্যে দু-একটা বক্তব্যে আমার কিছু ভুল-ত্রুটিও থাকতে পারে, কারণ আমি তো মানুষ। আমি আরো দাবি করতে চাই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার অন্যায়ভাবে কারাগারে নিক্ষেপ করার পরে আমি স্বৈরাচারী সরকারের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে নেত্রীর মুক্তির জন্য সমগ্র বাংলাদেশে শত শত সভা ও জনসভায় বক্তব্য রেখেছি। এমনকি ইদানীংকালে একটি দুর্ভাগ্যজনক হত্যাকাণ্ডকে কেন্দ্র করে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে এমন জঘন্যতম কুৎসিত স্লোগান দিয়ে তাকে রাজনৈতিকভাবে অপমান করা হচ্ছিল যার উদাহরণ ‘গাছের ডালে কাউয়া’। তখন আমিই প্রথম ইউটিউব চ্যানেল পুর্নিয়াতে কঠিনভাবে এর বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য দিয়েছিলাম।
>> আমার সার্বিক বক্তব্য উপস্থাপনায় যদি প্রমাণিত হয় আমি কোনো ভুল বক্তব্য দিয়েছি তবে আমি দুঃখ প্রকাশ করব।
>> বিএনপির কোনো ক্ষতি হয় এমন কোনো কথা ও কাজ আমি করিনি এবং করবও না। জাতীয়তাবাদী দলের নেতৃত্বের বিচার-বিবেচনার প্রতি আমার সর্বোচ্চ আস্থা আছে, আশা করি আমি সুবিচার পাব এবং দলের বৃহত্তর স্বার্থে যেকোনো সিদ্ধান্তের প্রতি সর্বদাই অনুগত থাকব।
সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে না চাইলে সেটি তাদের সিদ্ধান্ত, তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা। কিন্তু যারা বাহানা দিয়ে নির্বাচন বয়কট করবে তারা ভবিষ্যৎ রাজনীতি থেকে নিজেরাই মাইনাস হয়ে যাবে।
৪ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ক্যাম্পাসের ৭ পয়েন্টে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। এ ছাড়া ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ব্যালট বাক্স সেনা তত্ত্বাবধানে থাকবে।
৭ ঘণ্টা আগেতিনি বলেন, ‘বর্তমানে বিএনপির সামনে তেমন প্রতিদ্বন্দ্বী দেখছি না। নির্বাচনে দাঁড়াবে অনেকেই, আমিও দাঁড়াতে পারি। কিন্তু বলছি না আমি তাদের পক্ষে বা বিপক্ষে দাঁড়াব। কিন্তু প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ যদি মনে করে তারাই ক্ষমতায় যাবে। তাহলে তখন থেকেই তাদের স্যালুট দিতে শুরু করবে। তবে পুলিশ ভাইদের বলছি, যদি নাগরিক
১ দিন আগেজাসদের বিবৃতিতে স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে সকল ধরনের মব ও ভিন্নমত দলনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হবার আহ্বান জানানো হয়।
১ দিন আগে