রাখাইনের জন্য শর্তসাপেক্ষে মানবিক করিডোর দিতে রাজি সরকার: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ২৭

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে শর্তসাপেক্ষে ‘মানবিক করিডোর’ দিতে সরকার রাজি বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি। ‘মানবিক করিডোর’ হলে সেটি জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে হবে বলে জানান তিনি।

পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী, রাখাইনে মানবিক করিডোর দেওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত। এটি একটি মানবিক প্যাসেজ হবে। কিন্তু আমাদের কিছু শর্ত আছে। আমি এত বিস্তারিততে যাচ্ছি না। যদি শর্তাবলি পালিত হয়, তবে অবশ্যই আমরা সহায়তা করব।’

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাত বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জানিয়ে তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘মিয়ানমারের একটি বিরাট জনগোষ্ঠী আমাদের দেশে আশ্রয় নিয়ে আছে। আমরা তাদের ফেরত পাঠাতে চাই। ফেরত পাঠানোর ক্ষেত্রে আমাদের যা কিছু করার প্রয়োজন, সেটি আমাদের করতে হবে।’

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, ‘এই সীমান্ত এখন একটি নন-স্টেট অ্যাক্টরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। সেখানে মিয়ানমারের কেন্দ্রীয় সরকারের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই। কাজেই আমাদের নিজেদের স্বার্থে কোনো না কোনো ধরনের যোগাযোগ, অর্থাৎ নন-স্টেট অ্যাক্টরের সঙ্গে আমরা আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ করতে পারি না। কিন্তু আমরা চাইলেও বিচ্ছিন্ন থাকতে পারব না।’

মিয়ানমারের রাখাইনে দীর্ঘ দিন ধরেই সংঘাত চলছে দেশটির সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে। গত কয়েক মাসে রাখাইন রাজ্যসহ সীমান্তবর্তী এলাকার দখল নিয়েছে আরাকান আর্মি। এ অবস্থায় রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দারা মানবিক সহায়তার অভাবে সংকটময় সময় পার করছেন। সেখানে মিয়ানমার সরকারও কোনো ধরনের সহায়তা পাঠাতে পারছে না।

এ পরিস্থিতির কথা বিবেচনায় নিয়েই গত মার্চে বাংলাদেশ সফরে এসে জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস রাখাইন রাজ্যে ত্রাণ সরবরাহের জন্য একটি ‘মানবিক করিডোরে’র স্থাপনের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেছিলেন। বলা হচ্ছে, এ রকম একটি করিডোর চালু করা হলে তার মাধ্যমে রাখাইনে ত্রাণ সহায়তা পাঠানো যাবে।

এদিকে সাম্প্রতিক সময়ে রাখাইন থেকে ফের রোহিঙ্গাদের ঢল নেমেছে বাংলাদেশে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাখাইনে ত্রাণ বা মানবিক সহায়তা সরবরাহ করা না গেলে সেখানকার আরও অনেক বাসিন্দা জীবন বাঁচাতে বাংলাদেশে ঢুকে পড়তে পারেন। মানবিক বিবেচনায় বাংলাদেশের পক্ষে তাদের সীমান্ত থেকে ফিরিয়ে দেওয়াও হয়তো সম্ভব হবে না।

অন্যদিকে এ ধরনের মানবিক করিডোরের নানা অপব্যবহারের নজিরের প্রসঙ্গ টানছেন অনেকে। তারা বলছেন, মানবি সহায়তা পাঠানোর জন্য এ ধরনের করিডোর স্থাপন করা হলেও পরবর্তী সময়ে সেটি সশস্ত্র গোষ্ঠীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়া বা অবাধ চলাচলের কাজে ব্যবহৃত হওয়ার নজির রয়েছে। রয়েছে অস্ত্র-মাদক চোরাচালানের রুট হিসেবে ব্যবহারের নজিরও। বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মি ব্যাপকভাবে সক্রিয় থাকায় এই করিডোর তাদের তৎপরতার কাজেই সহায়ক হবে কি না, সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ফারিয়ার গ্রেপ্তার নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা— যেতে দিলে তো বলতেন ছেড়ে দিলাম কেন

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, উনার বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়নি। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে তো আমরা বলতে পারব না যে তিনি নির্দোষ কি না। এ অবস্থায় আবার ছেড়ে দিলে আপনারাই বলবেন যে ছেড়ে দিলাম কেন?

১৬ ঘণ্টা আগে

নুসরাত ফারিয়ার গ্রেপ্তার হাসিনা স্টাইলে মনোযোগ ডাইভারশন— বললেন হাসনাত

হাসনাতের অভিযোগ, সরাসরি জুলাই হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দেশ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে এবং জুলাই গণহত্যার বিচার কার্যক্রমে মনোযোগী না হয়ে নুসরাত ফারিয়ার মতো ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের মাধ্যমে বর্তমান সরকার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের মতোই আচরণ করছে।

১৮ ঘণ্টা আগে

স্কুলের সিলেবাস ঢেলে সাজাতে চাই: তারেক রহমান

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, আমরা স্কুলের সিলেবাস ঢেলে সাজাতে চাই। সেখানে খেলাধুলা ও দ্বিতীয়-তৃতীয় ভাষা অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পরীক্ষায় এসব বিষয়ের জন্য আলাদা নাম্বার থাকবে। তার মানে খেলাধুলা তাকে করতেই হবে।

২০ ঘণ্টা আগে

আ.লীগ নিষিদ্ধে যেসব শঙ্কা ও সম্ভাবনা দেখছেন বিশ্লেষকরা

রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা বলছেন, জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মানুষ আওয়ামী লীগকে প্রত্যাখ্যান করেছিল। কিন্তু এরপর জাতীয় বা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে ওঠার বদলে বিভাজন বেড়ে যাওয়া এবং সুশাসনের অভাবে সাধারণ মানুষের প্রত্যাশায় ফাটল ধরেছে। এ প্রেক্ষাপটে আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় ইসলামি শক্তির উত্

১ দিন আগে