
ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

স্টিভেন স্পিলবার্গের বিখ্যাত ‘জস’ সিনেমাটি যারা দেখেছেন, তাদের অনেকের মনেই হাঙর মানেই যেন এক রক্তপিপাসু দানবের ছবি ফুটে ওঠে। সিনেমার বিশাল চোয়ালওয়ালা হাঙর যেন শুধু মানুষের রক্তের গন্ধ পেলেই ছুটে আসে। এই ছবির প্রভাব এতটাই গভীর ছিল যে হাঙর নিয়ে মানুষের মনে ভয় একপ্রকার স্থায়ী জায়গা করে নেয়। কিন্তু সত্যি কি হাঙর তেমনই ভয়ংকর প্রাণী?
বিজ্ঞান ও গবেষণা বলছে, আমাদের এই ভয় অনেকাংশেই ভিত্তিহীন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেন সার্ভিস (National Ocean Service)–এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাস্তব জীবনের হাঙর সিনেমার হাঙরের মতো হিংস্র বা ভয়ংকর নয়। তারা বলছেন, হাঙর মূলত নিজের খাদ্যের প্রয়োজনেই শিকার করে। মানুষ তাদের নিয়মিত শিকারের তালিকায় নেই।
পৃথিবীতে প্রায় ৪০০টিরও বেশি প্রজাতির হাঙর রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি প্রজাতি—যেমন গ্রেট হোয়াইট শার্ক (Great White Shark), বুল শার্ক (Bull Shark) ও টাইগার শার্ক (Tiger Shark) কিছু সময় মানুষকে আক্রমণ করেছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো "ভুল পরিচয়ের কারণে" ঘটে।
বিখ্যাত সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ম্যাসাচুসেটসের ফিশারিজ বিভাগে ড. গ্রেগ স্কমাল হাঙর গবেষক হিসেবে কাজ করেন, তিনি বলেন, “মানুষ হাঙরের প্রাকৃতিক খাদ্য নয়। তারা সাধারণত সিল বা কচ্ছপ শিকার করে। অনেক সময় সার্ফ বোর্ডে থাকা মানুষকে সিল মনে করে আক্রমণ করে। সেটা একটা দুঃখজনক দুর্ঘটনা, ইচ্ছাকৃত শিকার নয়।”
হাঙরের শরীর গঠিত হয় শক্তিশালী মাংসপেশী ও ধারালো দাঁত দিয়ে, যা তাকে দক্ষ শিকারিতে পরিণত করে। তবে তার চেয়েও আশ্চর্যের বিষয় হলো, হাঙরের ঘ্রাণশক্তি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এক ফোঁটা রক্ত কয়েকশ মিটার দূর থেকেও টের পায়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তারা রক্ত দেখলেই হিংস্র হয়ে ওঠে।
ড. স্যামুয়েল গ্রাবার (Dr. Samuel Gruber), যিনি হাঙরের আচরণ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন, বলেন, “ঘ্রাণ বা শব্দ দ্বারা হাঙর শিকারের উপস্থিতি বোঝে ঠিকই, কিন্তু তারা অনেক কিছু পর্যবেক্ষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়। মানুষকে দেখে তারা সাধারণত আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।”
ইন্টারন্যাশনাল শার্ক অ্যাটাক ফাইল (ISAF) এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সারা বিশ্বে গড়ে ৭০-৮০টি হাঙরের আক্রমণের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা হয় মাত্র ৫-১০টি। তুলনা করে দেখা যায়, বছরে শুধু মশার কামড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়, বা কুকুরের কামড়ে মারা যায় ২৫,০০০-এর বেশি মানুষ। সেদিক থেকে হাঙরের ভয় অনেকটাই অতিরঞ্জিত।
হাঙরের খাদ্যাভ্যাস প্রজাতিভেদে ভিন্ন। ছোট হাঙর ছোট মাছ, কাঁকড়া ও জলজ পোকামাকড় খায়। বড় হাঙর ডলফিন, সিল বা এমনকি মৃত তিমিও খেতে পারে। হ্যামারহেড শার্ক নামক এক ধরনের হাঙর তো সামুদ্রিক ঘাসও খায়! তাই তাদের সবাইকে এক কাতারে ফেলে “রক্তপিপাসু” বলা অবিচার।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—হাঙরের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি আসলে মানুষই। প্রতিবছর লাখ লাখ হাঙর মানুষ শিকার করে, বিশেষ করে চীনে হাঙরের স্যুপের জন্য। পরিবেশবিদরা বলছেন, এর ফলে অনেক হাঙর প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে।
পরিবেশবাদী সংগঠন মেরিন কনজারভেশন সোসাইটির সদস্য ড. লুসি ক্লার্ক বলেন, “আমরা যদি এই শিকার বন্ধ না করি, তাহলে কিছু হাঙর প্রজাতি এক দশকের মধ্যেই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে পারে।”
হাঙর আমাদের ভয়ের কারণ হওয়ার বদলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সামুদ্রিক খাদ্যচক্রের শীর্ষে থেকে দুর্বল ও অসুস্থ প্রাণীগুলো খেয়ে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য বজায় রাখে। তাই হাঙরকে ভয় পাওয়ার বদলে বুঝে নেওয়া জরুরি। তারা সিনেমার ‘দানব’ নয়, বরং প্রকৃতির একটি অপূর্ব সৃষ্টি। যেমনটা ড. স্কমাল একবার বলেছিলেন, “যত বেশি জানবেন, তত কম ভয় পাবেন। আর হাঙরের ক্ষেত্রে সেটা একেবারেই সত্য।”
সূত্র: বিবিসি ফোকাস

স্টিভেন স্পিলবার্গের বিখ্যাত ‘জস’ সিনেমাটি যারা দেখেছেন, তাদের অনেকের মনেই হাঙর মানেই যেন এক রক্তপিপাসু দানবের ছবি ফুটে ওঠে। সিনেমার বিশাল চোয়ালওয়ালা হাঙর যেন শুধু মানুষের রক্তের গন্ধ পেলেই ছুটে আসে। এই ছবির প্রভাব এতটাই গভীর ছিল যে হাঙর নিয়ে মানুষের মনে ভয় একপ্রকার স্থায়ী জায়গা করে নেয়। কিন্তু সত্যি কি হাঙর তেমনই ভয়ংকর প্রাণী?
বিজ্ঞান ও গবেষণা বলছে, আমাদের এই ভয় অনেকাংশেই ভিত্তিহীন। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ওশেন সার্ভিস (National Ocean Service)–এর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বাস্তব জীবনের হাঙর সিনেমার হাঙরের মতো হিংস্র বা ভয়ংকর নয়। তারা বলছেন, হাঙর মূলত নিজের খাদ্যের প্রয়োজনেই শিকার করে। মানুষ তাদের নিয়মিত শিকারের তালিকায় নেই।
পৃথিবীতে প্রায় ৪০০টিরও বেশি প্রজাতির হাঙর রয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে হাতে গোনা কয়েকটি প্রজাতি—যেমন গ্রেট হোয়াইট শার্ক (Great White Shark), বুল শার্ক (Bull Shark) ও টাইগার শার্ক (Tiger Shark) কিছু সময় মানুষকে আক্রমণ করেছে। তবে বিজ্ঞানীরা বলেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এগুলো "ভুল পরিচয়ের কারণে" ঘটে।
বিখ্যাত সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানী ম্যাসাচুসেটসের ফিশারিজ বিভাগে ড. গ্রেগ স্কমাল হাঙর গবেষক হিসেবে কাজ করেন, তিনি বলেন, “মানুষ হাঙরের প্রাকৃতিক খাদ্য নয়। তারা সাধারণত সিল বা কচ্ছপ শিকার করে। অনেক সময় সার্ফ বোর্ডে থাকা মানুষকে সিল মনে করে আক্রমণ করে। সেটা একটা দুঃখজনক দুর্ঘটনা, ইচ্ছাকৃত শিকার নয়।”
হাঙরের শরীর গঠিত হয় শক্তিশালী মাংসপেশী ও ধারালো দাঁত দিয়ে, যা তাকে দক্ষ শিকারিতে পরিণত করে। তবে তার চেয়েও আশ্চর্যের বিষয় হলো, হাঙরের ঘ্রাণশক্তি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, তারা এক ফোঁটা রক্ত কয়েকশ মিটার দূর থেকেও টের পায়। কিন্তু এর মানে এই নয় যে তারা রক্ত দেখলেই হিংস্র হয়ে ওঠে।
ড. স্যামুয়েল গ্রাবার (Dr. Samuel Gruber), যিনি হাঙরের আচরণ নিয়ে দীর্ঘদিন গবেষণা করেছেন, বলেন, “ঘ্রাণ বা শব্দ দ্বারা হাঙর শিকারের উপস্থিতি বোঝে ঠিকই, কিন্তু তারা অনেক কিছু পর্যবেক্ষণ করে তারপর সিদ্ধান্ত নেয়। মানুষকে দেখে তারা সাধারণত আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।”
ইন্টারন্যাশনাল শার্ক অ্যাটাক ফাইল (ISAF) এর তথ্য অনুযায়ী, প্রতিবছর সারা বিশ্বে গড়ে ৭০-৮০টি হাঙরের আক্রমণের ঘটনা ঘটে। তার মধ্যে মৃত্যুর ঘটনা হয় মাত্র ৫-১০টি। তুলনা করে দেখা যায়, বছরে শুধু মশার কামড়ে ৭ লাখের বেশি মানুষ মারা যায়, বা কুকুরের কামড়ে মারা যায় ২৫,০০০-এর বেশি মানুষ। সেদিক থেকে হাঙরের ভয় অনেকটাই অতিরঞ্জিত।
হাঙরের খাদ্যাভ্যাস প্রজাতিভেদে ভিন্ন। ছোট হাঙর ছোট মাছ, কাঁকড়া ও জলজ পোকামাকড় খায়। বড় হাঙর ডলফিন, সিল বা এমনকি মৃত তিমিও খেতে পারে। হ্যামারহেড শার্ক নামক এক ধরনের হাঙর তো সামুদ্রিক ঘাসও খায়! তাই তাদের সবাইকে এক কাতারে ফেলে “রক্তপিপাসু” বলা অবিচার।
এখানে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—হাঙরের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি আসলে মানুষই। প্রতিবছর লাখ লাখ হাঙর মানুষ শিকার করে, বিশেষ করে চীনে হাঙরের স্যুপের জন্য। পরিবেশবিদরা বলছেন, এর ফলে অনেক হাঙর প্রজাতিই বিলুপ্তির পথে।
পরিবেশবাদী সংগঠন মেরিন কনজারভেশন সোসাইটির সদস্য ড. লুসি ক্লার্ক বলেন, “আমরা যদি এই শিকার বন্ধ না করি, তাহলে কিছু হাঙর প্রজাতি এক দশকের মধ্যেই পৃথিবী থেকে হারিয়ে যেতে পারে।”
হাঙর আমাদের ভয়ের কারণ হওয়ার বদলে প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তারা সামুদ্রিক খাদ্যচক্রের শীর্ষে থেকে দুর্বল ও অসুস্থ প্রাণীগুলো খেয়ে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্য বজায় রাখে। তাই হাঙরকে ভয় পাওয়ার বদলে বুঝে নেওয়া জরুরি। তারা সিনেমার ‘দানব’ নয়, বরং প্রকৃতির একটি অপূর্ব সৃষ্টি। যেমনটা ড. স্কমাল একবার বলেছিলেন, “যত বেশি জানবেন, তত কম ভয় পাবেন। আর হাঙরের ক্ষেত্রে সেটা একেবারেই সত্য।”
সূত্র: বিবিসি ফোকাস

অধ্যাদেশটি জারি হলে পাঁচ সদস্যের একটি কমিশন গঠন করা হবে। এর প্রধান হবেন সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। কমিশন নাগরিকের অভিযোগ অনুসন্ধান-নিষ্পত্তি, পুলিশ সদস্যদের সংক্ষোভ নিরসন ইত্যাদি বিষয়ে সরকারের কাছে সুপারিশ করবে।
৩ ঘণ্টা আগে
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বা ওসি পদে রদবদল করা হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিনও সম্প্রতি বলেছেন, নির্ধারিত সময়েই তফশিল ঘোষণা হবে। তিনি জানান, গণভোট বিষয়ে এখনো তেমন প্রচার শুরু হয়নি। তবে সরকার ও নির্বাচন কমিশন যৌথভাবে বড় ধরনের প্রচার চালাবে।
৬ ঘণ্টা আগে