মোবাইল অপারেটরদের কাজের পরিসর সীমিত করা হয়েছে: অ্যামটব

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ০৩ জুন ২০২৫, ২২: ৫৩

টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতিতে মোবাইল অপারেটরগুলোর কাজের পরিসর সীমিত করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিকম অপারেটরস অব বাংলাদেশ (অ্যামটব)।

মঙ্গলবার (৩ জুন) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অ্যামটের পক্ষ থেকে এমন মন্তব্য করা হয়েছে। টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার ও শিল্পখাতে এর প্রভাব নিয়ে সাম্প্রতিক মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে অ্যামটব বিজ্ঞপ্তিতে দিয়ে বক্তব্য তুলে ধরেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বা হয়েছে, টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক লাইসেন্সিং ব্যবস্থার সংস্কার নীতি ২০২৫-এর প্রস্তাবিত খসড়া নিয়ে সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন মহলের প্রদত্ত মতামত গুরুত্ব দিয়ে পর্যবেক্ষণ করেছে অ্যামটব। অংশীজনদের উদ্বেগের প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে এবং একইসঙ্গে আমরা মনে করি, প্রস্তাবিত সংস্কার নিয়ে স্পষ্ট ও তথ্যনির্ভর চিত্র তুলে ধরা অত্যন্ত জরুরি।

সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে অ্যামটব বলছে, সংস্কারের প্রস্তাবগুলোর মাধ্যমে বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা মোবাইল অপারেটরদের সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বা এটি তাদের পক্ষে যাচ্ছে— এমন ধারণার বিপরীতে আমরা স্পষ্টভাবে জানাতে চাই, বর্তমান খসড়া সংস্কার নীতিতে মোবাইল অপারেটরদের এ ধরনের কোনো সুবিধা দেওয়া হয়নি।

অ্যামটব আরও বলছে, প্রকৃতপক্ষে মোবাইল অপারেটরগুলো দেশ জুড়ে টেলিযোগাযোগ ও ডিজিটাল সেবা নিশ্চিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করলেও প্রস্তাবিত সংস্কার নীতিতে তাদের কাজের পরিসরকে আরও সীমিত করা হয়েছে। এ সীমাবদ্ধ ব্যবসায়িক কাঠামোর ফলে গ্রাহকদের জন্য নিরবচ্ছিন্ন ও মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করা আমাদের জন্য দিন দিন কঠিন হয়ে উঠেছে।

২০০৭ সালের ইন্টারন্যাশনাল লং ডিসট্যান্স টেলিকমিউনিকেশন সার্ভিসেস পলিসির (আইএলডিটিএস) মতো অপ্রচলিত পুরানো কিছু নীতিমালার কারণে নিয়ন্ত্রক ও অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এ খাতের সম্ভাবনা নিশ্চিতে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছে অ্যামটব।

এতে বলা হয়েছে, আইএলডিটিএস নীতিমালা টেলিযোগাযোগ খাতকে বিভক্ত করেছে এবং এর ফলে অনেক মধ্যস্থতাকারী প্রতিষ্ঠান (আইজিডব্লিউ, আইআইজি, আইসিএক্স, এনটিটিএন ইত্যাদি) তৈরি হয়েছে। এ প্রতিষ্ঠানগুলো নিরবচ্ছিন্ন কানেক্টিভিটি সুবিধা নিশ্চিতে তেমন কোনো অবদান রাখছে না। বরং তাদের কারণে ব্যয় বেড়েছে, উদ্ভাবন ব্যাহত হয়েছে।

অ্যামটব সরকারের সংস্কার প্রচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করে বলে উল্লেখ করেছে। বলেছে, প্রস্তাবিত খসড়ায় দীর্ঘমেয়াদি কিছু সমস্যার সমাধান হয়নি। তবু আমরা সংস্কার উদ্যোগকে একটি সাহসী ও জরুরি পদক্ষেপ বলে বিবেচনা করছি। আমরা মনে করি, এ উদ্যোগ টেলিযোগাযোগ খাতকে আরও কার্যকর করে তুলতে ভূমিকা রাখবে।

সংস্কার প্রস্তাবনা অনুযায়ী লাইসেন্সিং কাঠামোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে— ইন্টারন্যাশনাল কানেক্টিভিটি সার্ভিসেস, ন্যাশনাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার কানেক্টিভিটি সার্ভিসেস ও অ্যাকসেস নেটওয়ার্ক সার্ভিসেস।

অ্যামটব বলছে, এতে মোবাইল অপারেটরদের ফাইবার বসানো কিংবা নিজেদের টাওয়ার স্থাপনের স্বাধীনতা থাকছে না, যা আগে ছিল। তবে সরকারের এ উদ্যোগ আন্তর্জাতিক সর্বোত্তম অনুশীলনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলেও স্বীকার করে নিয়েছে সংগঠনটি।

কম খরচে উন্নত সেবার সুযোগ দিতে বিশ্ব জুড়ে মোবাইল অপারেটরদের পুরো অবকাঠামো পরিচালনার সুযোগ দেওয়া হলেও বাংলাদেশে বিভিন্ন ধাপে বিভিন্ন লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করায় খাতটির বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়েছে এবং সাধারণ গ্রাহকও ভোগান্তিতে পড়েছেন এবং তারা সেরা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানিয়েছে মোবাইল অপারেটরদের এই সংগঠন।

অ্যামটব বলছে, টেলিযোগাযোগ খাতের সংস্কার কেবল এ শিল্প খাতের জন্যই নয়, জাতীয় স্বার্থের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুসংগঠিত ও প্রতিযোগিতামূলক খাত দেশের ডিজিটাল অগ্রগতির ভিত্তি। এটি উদ্ভাবনকে ত্বরান্বিত করবে, নাগরিকদের ক্ষমতায়নে ভূমিকা রাখবে ও ডিজিটাল সুশাসন নিশ্চিতে অবদান রাখবে এবং সার্বিকভাবে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, সবার অংশগ্রহণে এ সংস্কার কাঠামো তৈরি এবং এর যুক্তিসম্মত বাস্তবায়ন নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ ও ব্যবস্থাপনায় গতি আনবে, গ্রাহকদের খরচ কমাবে, শহর ও গ্রামে সেবার মান বাড়াবে এবং সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করবে।

খাতসংশ্লিষ্ট অংশীদার আইজিডব্লিউ অপারেটর ও এনটিটিএনসহ সবাইকে একসঙ্গে দেশের টেলিযোগাযোগ খাতের উন্নয়নের লক্ষ্য নিয়ে ইতিবাচক পরিবর্তনে ভূমিকা রাখার আহ্বানও জানিয়েছে অ্যামটব। সংগঠনটি বলছে, এ খাতের বিকাশে, সর্বোপরি, বাংলাদেশের মানুষের জন্য বাস্তবসম্মত ও কার্যকর নীতিমালা তৈরি ও বাস্তবায়নে অ্যামটব সরকার ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) সঙ্গে একযোগে কাজ করতে প্রস্তুত

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন যাচ্ছেন ৯ জুন

প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ৪ দিনের সরকারি সফরে আগামী ৯ জুন লন্ডন যাচ্ছেন। সেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের রাজা তৃতীয় চার্লসের কাছ থেকে কিংস চার্লস হারমোনি অ্যাওয়ার্ড গ্রহণ করবেন। এ ছাড়া তিনি সে দেশের প্রধানমন্ত্রী কেইর স্টারমারের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। বৈঠকে সে দেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার

৫ ঘণ্টা আগে

বাড়তি ভাড়া নিলেই কঠোর ব্যবস্থা: জ্বালানি উপদেষ্টা

জ্বালানি তেলের দাম কমানোর পর বাসে বাড়তি ভাড়া আদায় করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেল মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান।

৬ ঘণ্টা আগে

যমুনা সেতুতে ২৪ ঘণ্টায় টোল আদায় ৩ কোটি ৫৯ লাখ

নাড়ির টানে বাড়ি ফিরছেন মানুষ। এর ফলে ঢাকা-টাঙ্গাইল-যমুনা সেতু মহাসড়ক দিয়ে ঘরমুখো যানবাহনের চাপ বেড়েছে। এদিকে যমুনা সেতু’র ওপর দিয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫১ হাজার ৮৪৯টি যানবাহন পারাপার হয়েছে। এতে টোল আদায় হয়েছে ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৮৩ হাজার টাকা। বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকালে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ যমুনা সেতু সাইট অফি

৯ ঘণ্টা আগে

আরাফাতের অপেক্ষায় আল্লাহর মেহমানরা

১০ ঘণ্টা আগে