‘গোপালগঞ্জে যাদের প্রাণনাশের হুমকি ছিল তাদের সহায়তা করেছে সেনাবাহিনী’

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ২২: ৫৪
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে দিনভর সহিংসতায় কোনো নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলকে সহায়তা করার অভিযোগ অস্বীকার করেছে সেনাবাহিনী। মিলিটারি অপারেশনস ডাইরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, সে দিন যাদের জীবন নাশের হুমকি ছিল, কেবল তাদেরই সহায়তা করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি। সেনাবাহিনী কখনো কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে সহায়তা করেনি বলে এ সময় দাবি করেন তিনি।

কর্নেল শফিকুল বলেন, আমরা কোনো রাজনৈতিক দলকে বিশেষভাবে কখনো কাউকে সহায়তা করিনি। আমাদের দায়িত্বের মধ্যেও আমরা কাউকে বিশেষভাবে দেখি না। গোপালগঞ্জে যেটা হয়েছে, ওই রাজনৈতিক দলের অনেকেরই জীবন নাশের হুমকি ছিল, তাদের জীবন বাঁচানোর জন্যই সেনাবাহিনী সহায়তা করেছে। এখানে জীবন বাঁচানোই মূল লক্ষ্য ছিল, অন্য কিছু না।

কোনো রাজনৈতিক দল কোথায় তাদের সভা-সমাবেশ বা বৈঠক করবে সে বিষয়ে সাধারণত স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছ থেকে ক্লিয়ারেন্স নিতে হয় উল্লেখ করে সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশ জানত।

গত ১৬ জুলাই গোপালগঞ্জে এনসিপির কর্মসূচি ঘিরে দফায় দফায় হামলা চলে। সকালে পুলিশের গাড়িতে আগুন দেন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা, হামলা ও ভাঙচুর করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) গাড়ি। তারা এনসিপির সমাবেশেও হামলা করেন। পরে দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে তাদের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হন।

সে দিন সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহার করেনি, বরং কেবল আত্মরক্ষা করতে বল প্রয়োগ করতে বাধ্য হয়েছে বলে জানান কর্নেল শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, একটা অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি ছিল, যেখানে ইট-পাটকেলই শুধু নিক্ষেপ করা হয়নি, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। যখন সেখানে জীবন নাশের হুমকি ছিল, তখন আত্মরক্ষার্থে আমাদের যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছিল, তারা বলপ্রয়োগ করেছে বা করতে বাধ্য হয়েছে। এখানে প্রাণঘাতী কোনো অস্ত্রের ব্যবহার করা হয়নি।

গোপালগঞ্জে কী হয়েছিল তা জানতে অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারকের নেতৃত্বে একটি তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছে বলে জানান কর্নেল শফিকুল। এই তদন্ত কমিটি সঠিক ও সত্য ঘটনা উন্মোচনে সক্ষম হবে বলে আশাপ্রকাশ করেন তিনি।

গোপালগঞ্জে সেনাবাহিনী সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করলে আরও হতাহত বা জীবন নাশের আশঙ্কা থাকতে মন্তব্য করে শফিকুল ইসলাম বলেন, বিশেষ কোনো দলের ক্ষেত্রে আমাদের আলাদা কোনো নজর নেই। যেখানে জীবনের হুমকি থাকে সেখানে আমরা কঠোর হই বা আমরা জনসাধারণকে সহায়তা করে থাকি। সেখানে আমরা যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন না করতাম তাহলে হয়তো আরও হতাহত বা জীবন নাশের আশঙ্কা থাকতে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সব বাহিনীকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং যাদের অগ্রভাগে কাজ করা দরকার তাদের আরও কার্যকর হতে হবে বলে মন্তব্য করেন মিলিটারি অপারেশন্সের এই কর্মকর্তা।

সেনাবাহিনীকে যে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সে বিষয়ে কর্নেল শফিকুল বলেন, অপরাধীকে গ্রেপ্তার করে বিচারিক প্রক্রিয়ায় হস্তান্তর করার পরে আসলে আমাদের আর কিছু করার থাকে না। এ জন্য বলছি, যেসব আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সর্বাগ্রে কাজ করার দরকার তাদেরকে আরও ইফেক্টিভ হতে হবে।

সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের উত্তরে এই কর্নেল বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাবাহিনী নিরাপত্তা দিতে পারছে না, এটা ঠিক না। এটা সঠিক নয়। সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রামে নিরাপত্তা দিয়ে যাচ্ছে এবং ভালোভাবেই দিচ্ছে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

পুলিশের লাঠিচার্জ, ৩২ ঘণ্টা পর শাহবাগ ছাড়লেন অবরোধকারীরা

এই কর্মসূচির ফলে শাহবাগ মোড় অবরুদ্ধ থাকায় কাটাবন মোড়, হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়, মৎস্যভবন মোড় ও শাহবাগ থানার সামনের সড়ক দিয়ে যান চলাচল প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।

৩ ঘণ্টা আগে

দেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কোনো চুক্তি হয়নি: প্রেস সচিব

শফিকুল আলম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যেসব চুক্তি হয়েছে, সেগুলো আসলে নন-ডিসক্লোজার (অপ্রকাশ্য)। অনেক কিছু জানলেও এখন বলা সম্ভব নয়। তবে বাংলাদেশের স্বার্থ বিসর্জন দিয়ে কোনো চুক্তি করা হয়নি, কোনো সামরিক চুক্তিও হয়নি। সরকারের জন্য একটি সফলতা।’

৩ ঘণ্টা আগে

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষে নিয়োগ, পদসংখ্যা ১০

৪ ঘণ্টা আগে

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে নিয়োগ, লাগবে ডিপ্লোমা

৫ ঘণ্টা আগে