
শেখ জাহাঙ্গীর আলম শাহীন

নীলফামারীর হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্বকদমা গ্রামের বড়দল বিল আর সীমান্তঘেঁষা মালদা নদীর জলাভূমি যেন এক অদ্ভুত নৈঃশব্দ্যের আশ্রয়। ভারত সীমান্তের কাটাতারের পাশের নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থিত এই বিলগুলোতে মানুষের চলাফেরা খুবই কম। নির্জনতার এই শান্তি যেন প্রকৃতিকে নতুন করে প্রাণ দিয়েছে। এখানে আবার ফিরেছে অতিথি পাখি, সাথে দেশীয় পাখিও। সেই দেশীয় পাখিদের মধ্যেই অন্যতম লাল লতিকা হট্টিটি (Vanellus indicus)।
একসময় এই হট্টিটির ডাক গ্রামীণ বাংলার ভোরবেলার পরিচিত সুর ছিল। খাল-বিল, ধানক্ষেত আর জলাভূমি জুড়ে দেখা যেত এদের। কিন্তু আধুনিক কৃষিকাজে কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয়ের ভরাট, বন-ঝোপঝাড় উজাড় আর অতিরিক্ত শিকারের কারণে এরা আজ অনেকটাই বিরল। তবু পূর্বকদমার মতো কিছু জায়গায় এখনও তারা প্রাকৃতিক ভারসাম্যের অংশ হয়ে টিকে আছে।
রূপ-গুণে অনন্য
লাল লতিকা হট্টিটির দৈর্ঘ্য ৩৪–৩৭ সেন্টিমিটার। চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়ার রেখা—যাকে স্থানীয়রা “লতিকা” বলে—মুখমণ্ডল ঘিরে যেন লাল চশমার মতো দেখায়। মাথা-গলা সাদা, পিঠ-ডানা বাদামি-ধূসর, ঠোঁট লাল আর পা উজ্জ্বল হলুদ বা সবুজাভ। এরা চঞ্চল, সতর্ক আর দ্রুত দৌড়াতে পারায় আলাদা করে চোখে পড়ে। পুরুষ-স্ত্রীতে চেহারার তেমন পার্থক্য নেই, যা অনেক পাখির মধ্যে বিরল।
অভ্যাস ও জীবনচক্র
লাল লতিকা হট্টিটি পানির ধারে ঘন ঘাসঝোপে বাস করে। এরা ভালো সাঁতারু নয়, বরং হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে দৌড়ানোতেই পারদর্শী। তবে বিপদের সময় পানিতে ঝাঁপ দিয়েও বাঁচতে পারে।
খাবারের তালিকায় থাকে ছোট মাছ, পোকামাকড়, শামুক, ব্যাঙাচি, ধান ও শস্য। এরা সাধারণত একা বা জোড়ায় দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম বসন্ত থেকে বর্ষা পর্যন্ত। ঘাস, পাতা আর ছোট ডালপালা দিয়ে বাসা বানায় পানির ধারে। স্ত্রী পাখি ৩–৪টি ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়া থেকে শুরু করে ছানাদের খাবার জোগানো পর্যন্ত মা-বাবা দু’জনেই দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। ছানা প্রথমে হাঁটাহাঁটি শিখে, পরে উড়তে শেখে। তখন বাবা-মা তাদের স্বাধীন করে দেয়।
গ্রামীণ বিশ্বাস ও লোককথা
বাংলার গ্রামে লাল লতিকা হট্টিটি সৌভাগ্যের প্রতীক। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এদের ডাক বর্ষার আগমনী বার্তা। গ্রামের মানুষের ভাষায়, “হট্টিটির ডাক শুনলেই বোঝা যায়, এবার মেঘ নামবে।”
পূর্বকদমার কৃষক ও পাখিপ্রেমী আরাফাত হোসেন কাকনের কাছে এই ডাক এক বিশেষ অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ভোরের আলো ফুটবার আগেই বড়দল বিল থেকে ভেসে আসে তীক্ষ্ণ সেই সুর। কখনো ঘাসের ফাঁক দিয়ে মাথা উঁচু করে তাকায়, আবার হঠাৎ দৌড়ে মিলিয়ে যায় ঝোপে। যেন জলাভূমির নীরব প্রহরী।
পরিবেশের বন্ধু
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, লাল লতিকা হট্টিটি জলাভূমির পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ। এরা পোকামাকড় ও জলজ প্রাণী খেয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিজ্ঞানীরা বলেন, কোনো এলাকায় লাল লতিকা হট্টিটির উপস্থিতি মানে সেখানে জলাশয় এখনও সুস্থ আছে। তাই এরা প্রকৃতির “জীবন্ত সূচক”।
সংকট ও সংরক্ষণ
তবু এই পাখির টিকে থাকার পথ সহজ নয়।
সংরক্ষণবিদদের মতে, স্থানীয়ভাবে মানুষকে সচেতন করা, জলাশয় সংরক্ষণ, এবং কীটনাশক কমানো ছাড়া এ প্রজাতিকে রক্ষা সম্ভব নয়।

নীলফামারীর হাতীবান্ধা উপজেলার ভেলাগুড়ি ইউনিয়নের পূর্বকদমা গ্রামের বড়দল বিল আর সীমান্তঘেঁষা মালদা নদীর জলাভূমি যেন এক অদ্ভুত নৈঃশব্দ্যের আশ্রয়। ভারত সীমান্তের কাটাতারের পাশের নোম্যান্স ল্যান্ডে অবস্থিত এই বিলগুলোতে মানুষের চলাফেরা খুবই কম। নির্জনতার এই শান্তি যেন প্রকৃতিকে নতুন করে প্রাণ দিয়েছে। এখানে আবার ফিরেছে অতিথি পাখি, সাথে দেশীয় পাখিও। সেই দেশীয় পাখিদের মধ্যেই অন্যতম লাল লতিকা হট্টিটি (Vanellus indicus)।
একসময় এই হট্টিটির ডাক গ্রামীণ বাংলার ভোরবেলার পরিচিত সুর ছিল। খাল-বিল, ধানক্ষেত আর জলাভূমি জুড়ে দেখা যেত এদের। কিন্তু আধুনিক কৃষিকাজে কীটনাশক ব্যবহার, জলাশয়ের ভরাট, বন-ঝোপঝাড় উজাড় আর অতিরিক্ত শিকারের কারণে এরা আজ অনেকটাই বিরল। তবু পূর্বকদমার মতো কিছু জায়গায় এখনও তারা প্রাকৃতিক ভারসাম্যের অংশ হয়ে টিকে আছে।
রূপ-গুণে অনন্য
লাল লতিকা হট্টিটির দৈর্ঘ্য ৩৪–৩৭ সেন্টিমিটার। চোখের সামনে টকটকে লাল চামড়ার রেখা—যাকে স্থানীয়রা “লতিকা” বলে—মুখমণ্ডল ঘিরে যেন লাল চশমার মতো দেখায়। মাথা-গলা সাদা, পিঠ-ডানা বাদামি-ধূসর, ঠোঁট লাল আর পা উজ্জ্বল হলুদ বা সবুজাভ। এরা চঞ্চল, সতর্ক আর দ্রুত দৌড়াতে পারায় আলাদা করে চোখে পড়ে। পুরুষ-স্ত্রীতে চেহারার তেমন পার্থক্য নেই, যা অনেক পাখির মধ্যে বিরল।
অভ্যাস ও জীবনচক্র
লাল লতিকা হট্টিটি পানির ধারে ঘন ঘাসঝোপে বাস করে। এরা ভালো সাঁতারু নয়, বরং হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে দৌড়ানোতেই পারদর্শী। তবে বিপদের সময় পানিতে ঝাঁপ দিয়েও বাঁচতে পারে।
খাবারের তালিকায় থাকে ছোট মাছ, পোকামাকড়, শামুক, ব্যাঙাচি, ধান ও শস্য। এরা সাধারণত একা বা জোড়ায় দেখা যায়। প্রজনন মৌসুম বসন্ত থেকে বর্ষা পর্যন্ত। ঘাস, পাতা আর ছোট ডালপালা দিয়ে বাসা বানায় পানির ধারে। স্ত্রী পাখি ৩–৪টি ডিম পাড়ে। ডিমে তা দেওয়া থেকে শুরু করে ছানাদের খাবার জোগানো পর্যন্ত মা-বাবা দু’জনেই দায়িত্ব ভাগ করে নেয়। ছানা প্রথমে হাঁটাহাঁটি শিখে, পরে উড়তে শেখে। তখন বাবা-মা তাদের স্বাধীন করে দেয়।
গ্রামীণ বিশ্বাস ও লোককথা
বাংলার গ্রামে লাল লতিকা হট্টিটি সৌভাগ্যের প্রতীক। অনেকেই বিশ্বাস করেন, এদের ডাক বর্ষার আগমনী বার্তা। গ্রামের মানুষের ভাষায়, “হট্টিটির ডাক শুনলেই বোঝা যায়, এবার মেঘ নামবে।”
পূর্বকদমার কৃষক ও পাখিপ্রেমী আরাফাত হোসেন কাকনের কাছে এই ডাক এক বিশেষ অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ভোরের আলো ফুটবার আগেই বড়দল বিল থেকে ভেসে আসে তীক্ষ্ণ সেই সুর। কখনো ঘাসের ফাঁক দিয়ে মাথা উঁচু করে তাকায়, আবার হঠাৎ দৌড়ে মিলিয়ে যায় ঝোপে। যেন জলাভূমির নীরব প্রহরী।
পরিবেশের বন্ধু
শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্য নয়, লাল লতিকা হট্টিটি জলাভূমির পরিবেশ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ। এরা পোকামাকড় ও জলজ প্রাণী খেয়ে ইকোসিস্টেমের ভারসাম্য বজায় রাখে। বিজ্ঞানীরা বলেন, কোনো এলাকায় লাল লতিকা হট্টিটির উপস্থিতি মানে সেখানে জলাশয় এখনও সুস্থ আছে। তাই এরা প্রকৃতির “জীবন্ত সূচক”।
সংকট ও সংরক্ষণ
তবু এই পাখির টিকে থাকার পথ সহজ নয়।
সংরক্ষণবিদদের মতে, স্থানীয়ভাবে মানুষকে সচেতন করা, জলাশয় সংরক্ষণ, এবং কীটনাশক কমানো ছাড়া এ প্রজাতিকে রক্ষা সম্ভব নয়।

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাসকে পিটিয়ে হত্যা ও তার মরদেহ আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে ভারতে কয়েকদিন ধরে এমন বিক্ষোভ চলছে। এর মধ্যে দিল্লিতে বাংলাদেশ দূতাবাস ও কলকাতায় উপতদূতাবাসের কার্যক্রম সীমিত করা হয়েছে। শিলিগুড়িতে ভিসা কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
১৩ ঘণ্টা আগে
ডিএমপি জানায়, তারেক রহমানকে অভ্যর্থনা জানানো ব্যক্তিদের কোনো ব্যাগ, লাঠি ইত্যাদি বহন না করতে অনুরোধ করা হলো; অভ্যর্থনাকারীরা কোন যানবাহন নিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের গাড়িবহরে যুক্ত হতে পারবেন না।
১৪ ঘণ্টা আগে
এ সময় ময়মনসিংহে দীপু হত্যার বিষয়ে শফিকুল আলম বলেন, দীপু চন্দ্র দাস হত্যার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানিয়েছি এবং যারা জড়িত ছিলেন, ভিডিও এবং ভিজ্যুয়াল দেখে অন্তত ১২ জনকে গ্রেফতার করেছি। এ বিষয়ে আজ বুধবার আইন উপদেষ্টা জানিয়েছেন, এই মামলার বিচার হবে দ্রুত বিচার আইনে। সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার জন্য আমরা
১৫ ঘণ্টা আগে
তেজগাঁও বিভাগের হাতিরঝিল জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) রব্বানী হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে আছি। গুলি নাকি ককটেল এখনও বলা যাচ্ছে না। নিহতের বাড়ি খুলনা। তিনি পাশেই একটা অফিসে কাজ করতেন।
১৬ ঘণ্টা আগে