বগুড়ায় মা হত্যার ঘটনায় নাটকীয় মোড়

বগুড়া প্রতিনিধি

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মাকে হত্যার অভিযোগে ছেলেকে গ্রেফতারের ঘটনাটি নাটকীয় মোড় নিয়েছে। পুলিশের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে আসল তথ্য। জানা যায়, এ হত্যাকাণ্ড ছেলে নয় ঘটিয়েছে নিহতের বাসায়ই ভাড়া থাকা ভাড়াটিয়া ও তার দুই সহযোগী।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) বগুড়ার গোয়েন্দা পুলিশ ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া এক নারী ও দুই পুরুষকে গ্রেফতারের পর বেরিয়ে আসে এই তথ্য।

গ্রেফতাররা হচ্ছেন, আজিজিয়া মঞ্জিল নামের ওই বাড়ির চতুর্থ তলার ভাড়াটিয়া মাবিয়া (৪২) ও তার দুই সহযোগী সুমন চন্দ্র (৩৫) এবং মোসলেম উদ্দিন (৪৫)।

দুপচাঁচিয়া থানা পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় সাদ বিন আজিজুর রহমানকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদে সাদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় নিহত উম্মে সালমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি মোসলেম উদ্দিনের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। পরে মোসলেম উদ্দিনের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ভ্যান চালক সুমন চন্দ্র ও ভাড়াটিয়া মাবিয়া খাতুনকে গ্রেফতার করা হয়।

আটকের পর মাবিয়া, সুমন ও মোসলেম উম্মে সালমাকে হত্যার কথা স্বীকার করে ঘটনার পুরো বর্ণনা দিয়েছে। পরে তাদের দেখানো জায়গা থেকে পুলিশ আলামত হিসেবে প্রধান গেটের তালার চাবি, রাউডার, মোবাইল ফোন উদ্ধার করে।

গ্রেফতারের পর মাবিয়া পুলিশকে জানান, চার মাস আগে উম্মে সালমা আজিজিয়া মঞ্জিলের চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়ে একাই বসবাস করতেন। বাসায় মাদক বিক্রি এবং অনৈতিক কাজের অভিযোগ তুলে উম্মে সালমা ও তার স্বামী আজিজুর রহমান তাকে এক মাসের মধ্যে বাসা ছেড়ে দিতে বলেন। তার কাছে দুই মাসের ভাড়াও পাওনা ছিলো। বিষয়গুলো নিয়ে মাবিয়া উম্মে সালমার উপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। তাই তিনি তার সহযোগী ও মাদক ব্যবসায়ী সুমন চন্দ্র সরকার এবং মোসলেমকে নিয়ে গত শনিবার উম্মে সালমাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

পরিকল্পনা মাফিক রোববার সুমনের ভ্যানে মোসলেম ওই বাসায় আসেন। বেলা ১২টার দিকে মাবিয়া প্রথমে তিন তলায় প্রবেশ করেন। তারপর পরই সুমন ও মোসলেম বাসায় ঢুকেই চেতনানাশক স্প্রে করে উম্মে সালমাকে অচেতন করেন। এরপর তার নাক মুখ ও হাত বেঁধে বাসার ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রেখে তারা তিনজন সেখান থেকে বেরিয়ে যায়।

বগুড়া জেলা পুলিশের মুখপত্র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার বলেন, উম্মে সালমা হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী কিছু আলামত উদ্ধারের পর তাদেরকে শুক্রবার বিকেলে আদালতে নেয়া হয়েছে। আদালতে জবানবন্দী দেয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে।

এই হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত এখনও শেষ হয়নি বলেও জানান তিনি।

উল্লেখ্য, গত রোববার দুপচাঁচিয়া পৌর শহরের জয়পুরপাড়া এলাকায় আজিজিয়া মঞ্জিল নামের নিজ বাড়িতে হত্যাকাণ্ডের পর খুনিরা উম্মে সালমার মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রেখে যান। দু'দিন পর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য উম্মে সালমার ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে আটক করে র‍্যাব। পরদিন র‍্যাব প্রেস ব্রিফিং করে জানায় উম্মে সালমার ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমান স্বীকার করেছেন তিনি নিজেই তার মাকে হত্যা করেছেন।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

নৌকায় ভোট চেয়ে পদ হারানো হেলাল ‘ঘরে ফিরলেন’

এ বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের মধ্য দিয়ে দলীয় পদ হারানোর এক বছর ১০ মাস পর আবারও ‘ঘরে ফিরলেন’ রাঙ্গামাটি শহরের রিজার্ভ বাজার এলাকাকেন্দ্রিক প্রভাবশালী বিএনপি নেতা ও সাবেক কাউন্সিলর হেলাল উদ্দিন।

২ দিন আগে

রাবির দুই শিক্ষার্থীকে প্রকাশ্যে অপহরণ, ক্যাম্পাসে তোলপাড়

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজলা গেট সংলগ্ন একটি খাবার হোটেল থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে দুই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুখোশধারী একদল হামলাকারী। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনা ক্যাম্পাসজুড়ে চাঞ্চল্য ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

২ দিন আগে

গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেতে হলে তত্ত্বাবধায়ক সরকার লাগবে : মাহমুদুর রহমান

বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না—২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা তার প্রমাণ দেখেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে ক্ষমতাসীনরা দানবে পরিণত

২ দিন আগে

বিচারকের ছেলে হত্যায় আসামি লিমন মিয়া ফের ৫ দিনের রিমান্ডে

রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি লিমন মিয়ার আরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর আদালত-৫ এর বিচারক আশিকুর রহমান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২ দিন আগে