প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৩৬টি। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মূলধনের বড় একটি অংশের যোগানদাতা পুঁজিবাজার কেন্দ্রীক বিদেশি, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারী। মূলত যে ব্যাংকের আর্থিক মৌলভিত্তি যত বেশি শক্তিশালী সে ব্যাংকে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখায় বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে আর্থিকভাবে ভালো করেছে এমন ১০টি তালিকাভুক্ত ব্যাংকের আর্থিক পারফর্মেন্স বিশ্লেষণ করেছে রাজনীতি ডটকম। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভালো লভ্যাংশ দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় রয়েছে এ ব্যাংকগুলো।
একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি করেন তানভির ইসলাম। তিনি দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ করছি। আমার কাছে বর্তমানে প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার আছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক বাদে সবগুলোতে ভালো মুনাফা আসছে। শেয়ারে রিটার্ন আসার পাশাপাশি ভালো লভ্যাংশও পাচ্ছি। অন্য সেক্টরের আরো কিছু শেয়ারে আমার বিনিয়োগ আছে। সেগুলোর তুলনায় এখানে ভালো পাচ্ছি।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকারত জায়াগা। এখানে বিনিয়োগ করা তুলনামূলক কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বুঝে-শুনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারলে এখানে অনেক ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ তাদের ভালো রিটার্ন দেয়ার সক্ষমতা রাখে। এ খাতের কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতাও তুলনামূলক বেশি। কেননা, এখানে সক্রিয় দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিগুলোকে মনিটরিং করে। তাই বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে ভালো রিটার্ন দিতে ব্যাংক খাত উত্তম প্লাটফর্ম হতে পারে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল আমিন বলেন, যদিও এই মুহুর্তে বড় একটা অংশ দ্রুত মুনাফা পাওয়ার প্রবণতা নিয়ে পুঁজিবাজারে আসেন। সে অর্থে ব্যাংকের শেয়ারে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখছি না। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক খাতে অনেক ভালো ভালো শেয়ার রয়েছে। যেখানে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে ডিপোজিট কিংবা যে কোনো ধরনের সঞ্চয়ের থেকে ভালো মুনাফা পেতে পারেন। এজন্য অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আসতে হবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া একীভুতকরণ প্রক্রিয়া অনেক বিনিয়োগকারীকে ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে চিন্তা করাতে বাধ্য করছে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ। তার মতে, একটি খারাপ ব্যাংককে একীভুত করে ভালো ব্যাংকের পক্ষে টিকে থাকতে হলে অনেকটা পরীক্ষা পার করতে হবে। এজন্য কোন ব্যাংক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ভালো করতে পারবে, আর কোনটা পারবে না বিনিয়োগকারীদের তা ভাবাচ্ছে। তবে আমি মনে করি বিগত বছরগুলোতে ভালো ব্যাংকগুলোর যে হারে প্রবৃদ্ধি করছে, তাতে এখানে বিনিয়োগ করে দীর্ঘমেয়াদে অনেক ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৭৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৭৫ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২৬ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগের বছরে যেখানে সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে মুনাফা বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত হয় দ্য সিটি ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২৮ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরে যেখানে ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন তারা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি।
২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৭২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৭ টাকা ৫৭ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের ইপিএস বেড়েছে ২৯ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। আগের বছরে যেখানে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদের পাশাপাশি সাড়ে ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়ায় বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
১৯৯৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৪ টাকা ২৪ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরেও একই হারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
দেশের পুঁজিবাজারে ১৯৮৫ সালে তালিকাভুক্ত হয় ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৮৩ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরেও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায় বিনিয়োগকারীরা।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৯১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ২ টাকা ৪১ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরে যেখানে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা।
ডিএসইতে ২০০০ সালে তালিকাভুক্ত হয় প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ২৪ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৫৩ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরেও সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায় বিনিয়োগকারীরা।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় পূবালী ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৬ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৫ টাকা ৪৯ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটির পর্ষদ। এর মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। ২০২২ হিসাব বছরে যেখানে মাত্র সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
দেশের পুঁজিবাজারে ২০২৭ সালে তালিকাভুক্ত হয় ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৯৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৪১ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৮ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরে যেখানে বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।
১৯৮৪ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় উত্তরা ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৩২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৬৯ পয়সা। অথাৎ বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ১৭ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি।এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। আগের হিসাব বছরে যেখানে বিনিয়োগকারীদের ১৪ শতাংশ নগদ ও ১৪ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। সে হিসেবে মুনাফা বাড়ায় বছরের ব্যবধানে ২ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
দেশে তফসিলি ব্যাংকের সংখ্যা ৬১টি। এর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত রয়েছে ৩৬টি। তালিকাভুক্ত ব্যাংকগুলোর মূলধনের বড় একটি অংশের যোগানদাতা পুঁজিবাজার কেন্দ্রীক বিদেশি, প্রাতিষ্ঠানিক ও সাধারণ বিনিয়োগকারী। মূলত যে ব্যাংকের আর্থিক মৌলভিত্তি যত বেশি শক্তিশালী সে ব্যাংকে বিনিয়োগে বেশি আগ্রহ দেখায় বিনিয়োগকারীরা। সর্বশেষ ৩১ ডিসেম্বর সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে আর্থিকভাবে ভালো করেছে এমন ১০টি তালিকাভুক্ত ব্যাংকের আর্থিক পারফর্মেন্স বিশ্লেষণ করেছে রাজনীতি ডটকম। বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভালো লভ্যাংশ দিয়ে বিনিয়োগকারীদের আস্থায় রয়েছে এ ব্যাংকগুলো।
একটি ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানিতে চাকরি করেন তানভির ইসলাম। তিনি দীর্ঘ ৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করছেন। এ প্রতিবেদককে তিনি বলেন, আমি শুরু থেকেই ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ করছি। আমার কাছে বর্তমানে প্রাইম ব্যাংক, পূবালী ব্যাংক, উত্তরা ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংকের শেয়ার আছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংক বাদে সবগুলোতে ভালো মুনাফা আসছে। শেয়ারে রিটার্ন আসার পাশাপাশি ভালো লভ্যাংশও পাচ্ছি। অন্য সেক্টরের আরো কিছু শেয়ারে আমার বিনিয়োগ আছে। সেগুলোর তুলনায় এখানে ভালো পাচ্ছি।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, পুঁজিবাজার একটি স্পর্শকারত জায়াগা। এখানে বিনিয়োগ করা তুলনামূলক কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ। তবে বুঝে-শুনে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগ করতে পারলে এখানে অনেক ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এক্ষেত্রে ব্যাংক খাতে বিনিয়োগ তাদের ভালো রিটার্ন দেয়ার সক্ষমতা রাখে। এ খাতের কোম্পানিগুলোর জবাবদিহিতাও তুলনামূলক বেশি। কেননা, এখানে সক্রিয় দুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানিগুলোকে মনিটরিং করে। তাই বিনিয়োগকারীদের বছর শেষে ভালো রিটার্ন দিতে ব্যাংক খাত উত্তম প্লাটফর্ম হতে পারে বলে মনে করেন তারা।
এ বিষয়ে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মো. আল আমিন বলেন, যদিও এই মুহুর্তে বড় একটা অংশ দ্রুত মুনাফা পাওয়ার প্রবণতা নিয়ে পুঁজিবাজারে আসেন। সে অর্থে ব্যাংকের শেয়ারে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা দেখছি না। তবে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য ব্যাংক খাতে অনেক ভালো ভালো শেয়ার রয়েছে। যেখানে বিনিয়োগ করে বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘমেয়াদে ডিপোজিট কিংবা যে কোনো ধরনের সঞ্চয়ের থেকে ভালো মুনাফা পেতে পারেন। এজন্য অবশ্যই বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়ে আসতে হবে।
তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নেয়া একীভুতকরণ প্রক্রিয়া অনেক বিনিয়োগকারীকে ব্যাংক খাতের শেয়ারে বিনিয়োগ করার ক্ষেত্রে চিন্তা করাতে বাধ্য করছে বলে মনে করেন এ অর্থনীতিবিদ। তার মতে, একটি খারাপ ব্যাংককে একীভুত করে ভালো ব্যাংকের পক্ষে টিকে থাকতে হলে অনেকটা পরীক্ষা পার করতে হবে। এজন্য কোন ব্যাংক প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে ভালো করতে পারবে, আর কোনটা পারবে না বিনিয়োগকারীদের তা ভাবাচ্ছে। তবে আমি মনে করি বিগত বছরগুলোতে ভালো ব্যাংকগুলোর যে হারে প্রবৃদ্ধি করছে, তাতে এখানে বিনিয়োগ করে দীর্ঘমেয়াদে অনেক ভালো রিটার্ন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
২০০৭ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি সমন্বিত মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৭৩ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৭৫ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২৬ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আগের বছরে যেখানে সাড়ে ৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে মুনাফা বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের জন্য ৫ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ১৯৮৬ সালে তালিকাভুক্ত হয় দ্য সিটি ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ২১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৯০ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২৮ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৫ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরে যেখানে ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন তারা। অর্থাৎ বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১৩ শতাংশ লভ্যাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ব্যাংকটি।
২০০১ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ডাচ্-বাংলা ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির ইপিএস হয়েছে ১০ টাকা ৭২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৭ টাকা ৫৭ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের ইপিএস বেড়েছে ২৯ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। আগের বছরে যেখানে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদের পাশাপাশি সাড়ে ৭ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা। অর্থাৎ মুনাফায় প্রবৃদ্ধি হওয়ায় বছরের ব্যবধানে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
১৯৯৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৪ টাকা ২৪ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২০ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরেও একই হারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা।
দেশের পুঁজিবাজারে ১৯৮৫ সালে তালিকাভুক্ত হয় ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৩ টাকা ৯৫ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৮৩ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ৩ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরেও ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায় বিনিয়োগকারীরা।
২০০৩ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৯১ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ২ টাকা ৪১ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২১ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি। আগের হিসাব বছরে যেখানে ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা।
ডিএসইতে ২০০০ সালে তালিকাভুক্ত হয় প্রাইম ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ২৪ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৫৩ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ২০ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরেও সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পায় বিনিয়োগকারীরা।
১৯৮৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় পূবালী ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৬ টাকা ৭৬ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৫ টাকা ৪৯ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ২৩ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য ২৫ শতাংশ লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে ব্যাংকটির পর্ষদ। এর মধ্যে সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। ২০২২ হিসাব বছরে যেখানে মাত্র সাড়ে ১২ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ পেয়েছিলেন বিনিয়োগকারীরা।
দেশের পুঁজিবাজারে ২০২৭ সালে তালিকাভুক্ত হয় ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি। সর্বশেষ সমাপ্ত ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৯৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৪১ পয়সা। সে হিসেবে বছরের ব্যবধানে ব্যাংকের সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে প্রায় ৪৬ শতাংশ। সর্বশেষ হিসাব বছরে এ ব্যাংকটি বিনিয়োগকারীদের জন্য ১২ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ৮ শতাংশ স্টক লভ্যাংশের ঘোষণা দিয়েছে। আগের হিসাব বছরে যেখানে বিনিয়োগকারীরা ১০ শতাংশ নগদের পাশাপাশি ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ পেয়েছিলেন।
১৯৮৪ সালে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় উত্তরা ব্যাংক পিএলসি। ২০২৩ হিসাব বছরে ব্যাংকটির সমন্বিত ইপিএস হয়েছে ৪ টাকা ৩২ পয়সা। আগের হিসাব বছরে যা হয়েছিল ৩ টাকা ৬৯ পয়সা। অথাৎ বছরের ব্যবধানে সমন্বিত ইপিএস বেড়েছে ১৭ শতাংশের বেশি। সর্বশেষ হিসাব বছরে বিনিয়োগকারীদের জন্য মোট ৩০ শতাংশ লভ্যাংশের সুপারিশ করেছে ব্যাংকটি।এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ রয়েছে। আগের হিসাব বছরে যেখানে বিনিয়োগকারীদের ১৪ শতাংশ নগদ ও ১৪ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছিল তারা। সে হিসেবে মুনাফা বাড়ায় বছরের ব্যবধানে ২ শতাংশ লভ্যাংশও বাড়িয়েছে ব্যাংকটি।
ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আব্দুল হাই সরকার বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে কোনো সমস্যা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশ কিছু নিয়ম পরিপালন করতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। তাঁর পদত্যাগপত্র আমরা পেয়েছি।’
২ দিন আগেগণতন্ত্রের মূলমন্ত্র জনগণই ক্ষমতার উৎস। সেটা আজকাল কেউ মানে বলে মনে হয় না। সে বাংলাদেশেই হোক বা যুক্তরাষ্ট্র—ক্ষমতাসীন নেতাদের সবাই নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করে। গণতন্ত্রের অন্যতম পুরোধা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় বলেছিলেন, ‘গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য
৩ দিন আগেমামলার এজাহারে বলা হয়েছে, গতকাল শুক্রবার (১৫ আগস্ট) কামরুল হাসান তার নিজ দোকানের সামনে ইটের রাস্তায় পুরাতন মোটরসাইকেলের টায়ার জ্বালিয়ে নাশকতা সৃষ্টি ও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে কামরুলকে আটক করে। পরে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করে অন্য আসামিদের নাম জানতে পারে পুলিশ।
৩ দিন আগেশিল্প উপদেষ্টা বলেন, বিশ্বজুড়ে পরিবেশবান্ধব ও স্বল্প কার্বন নিঃসরণ জাহাজের চাহিদা দ্রুত বাড়ছে। আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক সংস্থা (আইএসও) ২০৩০ সালের মধ্যে কার্বন নিঃসরণ ৪০ শতাংশ এবং ২০৫০ সালের মধ্যে ৭০ শতাংশ কমানোর লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেছে। যে দেশগুলো পরিবেশবান্ধব, স্বল্প-নিঃসরণ জাহাজ তৈরি ও রপ্তানি করত
৩ দিন আগে