‘দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমানতের খেয়ানত করেছে’

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

বাংলাদেশ জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতার পরে দফায় দফায় যারা ক্ষমতায় এসেছে, তারাই আমানতের খেয়ানত করেছে। কম-বেশি সবাই এ জাতিকে কষ্ট দিয়েছে। সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে গত ১৫ বছর যারা ছিল। সর্বশেষ ২০২৪ সালে নিজের দেশের মানুষের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছে। বিভিন্ন সংস্থার হিসাব অনুযায়ী গত ১৫ বছরে ২৬ লক্ষ কোটি টাকা চুরি করা হয়েছে।

শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) দুপুর ১২টায় নবাব সিরাজ-উদ-দ্দৌলা সরকারি কলেজ মাঠে নাটোর জেলা জামায়া‌তের কর্মী স‌ম্মেল‌নে প্রধান অতিথির বক্ত‌ব্যে তি‌নি এসব কথা ব‌লেন।

শ‌ফিকুর রহমান বলেন, এতো মানুষ কেন জীবন দিয়েছে? তারা বৈষম্যহীন সমাজ চায়। তারা বলেছে, আমরা চাঁদাবাজি বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে। দশমাসের সন্তান থেকে শুরু করে ৮০ বছরের বৃদ্ধরা জুলাই আন্দোলনে নেমেছিল। সব শ্রেণি পেশার মানুষ আন্দোলনে সংহতি জানিয়েছিল।

ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, জরুরী, অতি জরুরী সংস্কারগুলো সাধন করে বর্তমান সরকার দ্রুত নির্বাচন দিয়ে যার যার জায়গায় চলে যাবে। এ নির্বাচনে জনগণ যাকে ভালবাসবে, যাদের উপর বিশ্বাস-আস্থা রাখবে, যারা দেশের মানুষকে ভালবাসবে, সম্মান করবে, দেশবাসীর আমানত শশুরবাড়ীর নিয়ামত মনে করবে না, যারা দেশের সম্পদ চুরি করে বিদেশে পাচার করবে না, জনগণ তাদের ভোট দেবে।

আগামী নির্বাচনে আওয়ামীলীগের অংশগ্রহণের বিষয়ে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, নির্বাচন করা করে? নির্বাচন তাদের জন্য, যারা মানুষকে সম্মান করে, দেশবাসীকে ভালোবাসে, যারা দেশবাসীর প্রতি ইঞ্চি জমিকে আমানত মনে করে। এ বিশ^াস, আস্থা যাদের নয় নির্বাচন তাদের কপালে নাই। গত ১৫ বছর তিন তিনটি অবৈধ নির্বাচনে অবৈধভাবে ক্ষমতায় থাকার সময় ফ্যাসিস্ট সরকার কি পরিমাণ তান্ডব চালিয়েছে দেশবাসী তা ভুলে যায়নি। যারা নির্বাচনে বিশ্বাস করে না, তাদের আবার কিসের নির্বাচন!

তিনি বলেন, গণ অভ্যুস্থানে আহত, পুঙ্গদের দেশে বিদেশে চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে, দ্রুত নির্বাচন দিতে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম নাগালের মধ্যে আনতে বর্তমান সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি।

তিনি বলেন, জায়ামাত ক্ষমতায় গেলে এদেশের নারীরা সর্বোচ্চ অধিকার নিয়ে গর্বে সাথে নিরাপত্তার সাথে দেশের জন্য কাজ করবে। রাস্তা-ঘাটে জালিমদের চোখগুলো নারীদের প্রতি খারাপ দৃষ্টিতে তাকাতে পারবে না। রাষ্ট্র জালিমদের চোখ উপড়ে ফেলবে। জামায়াত ক্ষমতায় গেলে আমাদের সন্তানরা সেই শিক্ষা নিয়ে বের হবে, যে শিক্ষায় থাকবে দেশাত্ববোধ, মমত্ববোধ, মানুষের প্রতি থাকবে ভালবাসা, শ্রদ্ধা, যে শিক্ষা মানুষ হতে শেখাবে। আমাদের সন্তানরা উন্নত শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে বের হওয়ার আগেই তাদের হাতে উপযুক্ত কাজ পৌছে যাবে। যুবকদের হাতকে দেশ গড়ার কারিগরের হাতে পরিণত করব।

তিনি বলেন, দেশের জনগণ জীবন দেবে কিন্তু দেশের সার্বভৌমত্বকে আর অন্যের হাতে তুলে দিতে চায় না। আমরা বিদেশি বন্ধু চাই, কোন প্রভু চাই না। আমরা সমমর্যাদার ভিত্তিতে সকলের সাথে বৈদেশিক সম্পর্ক রক্ষা করব। কারো লাল চোখের দিকে আমরা আর তাকাব না। অন্যের লাল চোখ আমরা বরদাস্ত করব না। জামায়াতে ইসলাম বৈষম্যহীন মানবিক সমাজ গঠন করতে চায়। আমরা বিভেদ নয়, ঐক্য চাই। এদেশের হিন্দু-মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই গর্বিত নাগরিক।

জেলা জামায়াতের আমির ড. মীর নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, জামায়াতে ইসলামের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদের সদস্য অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন, মোবারক হোসেন প্রমূখ।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

পিআরের বিষয়টি জনগণের ওপর ছেড়ে দিতে হবে: খসরু

আমীর খসরু বলেন, যারা পিআর পদ্ধতির পক্ষে তাদের উচিত হবে জনগণের কাছে গিয়ে ম্যান্ডেট আনা। কিছু রাজনৈতিক দল নিয়ে আলোচনা করে আগামীর বাংলাদেশে কী হবে- তা ঠিক করতে মানুষ দায়িত্ব দেয় নাই। তাই সনদেরও ম্যান্ডেট লাগবে।

৬ ঘণ্টা আগে

কন্যাশিশুর স্বপ্নের পাশে রাষ্ট্রকে অংশীদার হতে হবে: তারেক রহমান

একজন কন্যাসন্তানের বাবা হিসেবে আমি জানি মেয়েদের ক্ষমতায়ন কোনো নীতি নয়, এটি ব্যক্তিগত দায়িত্ব ও অঙ্গীকার। বাংলাদেশের জন্য আমাদের স্বপ্ন হলো যেখানে প্রতিটি মেয়ের জন্য একই স্বাধীনতা, সুযোগ এবং নিরাপত্তা থাকবে, যা যেকোনো বাবা-মা তাদের সন্তানের জন্য কামনা করেন।

১০ ঘণ্টা আগে

তৃণমূলে বিএনপি-জামায়াত টক্কর, দুই দলের নজর আওয়ামী লীগের ভোটে

বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে চলে এসেছে বিএনপিরই একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটি নির্বাচনের প্রার্থী নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি শুরু করেছে আরও প্রায় বছরখানেক আগে।

১২ ঘণ্টা আগে

লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে না : মিয়া গোলাম পরওয়ার

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, আমরা দেখতে পাচ্ছি নির্বাচনের আগে কোথাও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে না। পুলিশ থেকে শুরু করে আমলা পর্যন্ত অনেককেই দেখা যাচ্ছে, বিশেষ দলের প্রতি দুর্বল হয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছেন। এগুলো পরিহার করে নির্বাচনের মাঠকে সমান ও সমতল করতে হবে।

১ দিন আগে