শাহরিয়ার শরীফ
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির প্রয়োগ— এই দাবিগুলোই রয়েছে ইসলামি দলগুলোর দাবি-দাওয়ার তালিকার শুরুতে, যেগুলো এখনো রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার টেবিলে। এ কারণেই বিএনপি এ কর্মসূচির সরাসরি বিরোধিতা করে তীব্র সমালোচনা করেছে আন্দোলনে নামা দলগুলোর।
ঐকমত্যের টেবিলে বসে রাজপথের কর্মসূচি পালনকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার উদ্যোগ বলেই অভিহিত করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, ইসলামি দলগুলোর এসব কর্মসূচি নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে সন্দেহ ও সংশয়ের জন্ম দিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সমান্তরালে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ায় অবিশ্বাসের জন্ম দেবে, তৈরি করবে অস্থিরতা। নির্বাচন পেছাতেই এ আন্দোলনের সূচনা কি না, এমন সন্দেহও রয়েছে বিএনপির মধ্যে।
নির্বাচন সামনে রেখে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে এক প্ল্যাটফর্মে থাকা দলগুলোর কেউ কেউ আন্দোলনে নামায় রাজনীতির গতিপথ অনিশ্চয়তার দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা যতটা অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল, ততটা হয়নি। বরং ঐক্যের উলটোটাই ঘটে চলেছে।
ঐক্যের পথে না হেঁটে রাজনৈতিক দলগুলো যার যার মতো করে দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভক্ত হয়ে রাজপথে আন্দোলন শুরু করলে তা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাদের আশঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে আবারও ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে তাই আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি-দাওয়া আদায়ের চেষ্টার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘যে ইস্যুগুলোকে কেন্দ্র করে কয়েকটি দল মাঠে নেমেছে, তারা আসলে কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে? সরকার নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে? আসলে নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে এমন আন্দোলন করলে তার ফলাফল কী হবে, কেউ বলতে পারবে না।’
রাজপথে নামার পেছনে ইসলামি দলগুলোর যেসব দাবি-দাওয়া, তার মধ্যে প্রধানতম হলো পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন। এটি এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে সংসদীয় আসনগুলোতে কেবল রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সারা দেশে সেই দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ভাগ করা হয় সংসদীয় আসন।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন দৃঢ়ভাবে সংসদের দুই কক্ষ ও দুটিতেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। জামায়াত বলছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে জনমতের প্রতিফলন ঘটছে না বলেই তারা পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
অন্যদিকে বিএনপি সুস্পষ্টভাবেই পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি বরং সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি হিসেবে পিআরের পক্ষে জামায়াতের অবস্থানকে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল’ হিসেবে দেখছে। অবশ্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে কি না কিংবা সংসদে দুই কক্ষ থাকলে কোনটিতে কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে— এসব বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পিআর পদ্ধতিকে বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য ‘অনুপযুক্ত’ বলে মনে করেন জাবি অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম। তিনি বলেন, ‘এগুলো হতে পারে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের আসন-সংক্রান্ত দরকষাকষি করার কৌশল। আবার একটি পক্ষ হয়তো নির্বাচন যেন না হয়, দেশ যেন অস্থিতিশীল হয়, এসব কারণেও এসব দাবি নিয়ে উচ্চকিত হতে পারে। তবে সরকার নির্বাচন করার বিষয়ে সিরিয়াস বলেই মনে হয়েছে।’
জামায়াত-আওয়ামী লীগের মধ্যে আঁতাতের গুঞ্জন আছে— এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক শামছুল বলেন, ‘অনেকেই কিন্তু এমনটা বলছেন যে জামায়াত-আওয়ামী লীগ আঁতাত হতে পারে। তেমনটা সত্যি হলে রাজনৈতিক সংকট বাড়াবে। দেশ অস্থিতিশীল হবে। নিজেদের ছোটখাটো দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভেদে না জড়িয়ে আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। তা না হলে আবারও কোনো ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে।’
এদিকে জামায়াত ও চরমোনাই পীরের দলসহ ইসলামী দলের মাঠে নামার আগে এনসিপি, এবি পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলের যুগপৎ আন্দোলনের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। পরে অবশ্য এসব দল জানিয়েছে, আপাতত তারা যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতেও এসব দলের মধ্যে ঐক্যের স্থলে বিভেদ দেখা দিয়েছে কি না, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর একযোগে পালন করতে যাওয়া কর্মসূচি নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন। রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকেও এসব কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ কর্মসূচি ঘিরে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে— এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে বৈঠকে।
ঐকমত্য কমিশন মূলত জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার সুযোগ তৈরির জন্য গঠিত হয়েছে। এখনো কমিশনের বৈঠকে প্রতিষ্ঠিত প্রায় সব দলই অংশ নিচ্ছে। একই সময়ে কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল রাজপথে নেমে পড়েছে।
জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা জনগণের দাবিকে শক্তিশালী করতে রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে। বিশেষ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জনগণই আদায় করবে— এমনও বলছে জামায়াত।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল ও তার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন। ছবি: ফোকাস বাংলা
তবে বিএনপির আপত্তি, আলোচনার পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগেই রাজপথের কর্মসূচি দেওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এতে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে।
শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অন্তত একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তার উলটো চিত্র ফুটে উঠছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের আন্দোলনপন্থি কৌশল একদিকে যেমন সক্রিয়, অন্যদিকে বিএনপি বলছে তারা আপাতত আন্দোলনের পথে নয়, বরং আলোচনার পথেই সমাধান খুঁজতে চায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান সাধারণ মানুষতেও দ্বিধাগ্রস্ত করেছে। নাগরিকদের প্রত্যাশা ছিল, সংলাপের মাধ্যমে অন্তত একটি কার্যকর রোডম্যাপ আসবে। কিন্তু এর পরিবর্তে আলোচনার টেবিলে গিয়েও রাজপথে শক্তি প্রদর্শনে নেমে পড়ছেন নেতারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মূল সমস্যা হচ্ছে আস্থার অভাব। আগে বিভিন্ন সময়ে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি। এবারও একই চিত্র ফুটে উঠছে।
তারা বলছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি আস্থা তৈরি না হয়, তবে কোনো নির্বাচনই স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। একদিকে কমিশনের উদ্যোগ, অন্যদিকে সমান্তরাল আন্দোলন— এ দুই মেরু টানাপোড়েনের ফলে সংশয় আরও প্রকট হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামছুল আলমের ভাষ্য, ‘আলোচনার পথে যদি আন্তরিকতা থাকত, তবে আন্দোলন ঘোষণার আগে অন্তত কমিশনের আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করা যেত। কিন্তু সেটি না করে সরাসরি রাজপথে কর্মসূচি দেওয়া আস্থার সংকটকেই প্রমাণ করছে।’
জামায়াতসহ দলগুলো কর্মসূচিতে নামার ঘোষণার আগে থেকেই এ নিয়ে বিপরীত অবস্থান পরিষ্কার করেছে বিএনপি। কেউ কেউ এ জন্য জামায়াতকে দায়ী করে বক্তব্যও দিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ায় প্রমাণ হয়, জামায়াত ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে না এবং নির্বাচনকে অগ্রাহ্য করছে। দেশের মানুষ ভোটের অপেক্ষায় আছে। যারা ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করবে, তারা দেশের মানুষের আস্থা হারাবে। গণতন্ত্রের স্বার্থে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই।’
সাবেক বিএনপি সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘এখনো আলোচনা চলছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ইস্যুতে ঐকমত্য হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আন্দোলনের ডাক বিষয়ে জনগণের প্রশ্ন থেকে যাবে। যেটা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি এখনো, আলেচনাও চলমান, সেখানে আন্দোলন ডাকার অর্থ আলোচনার টেবিলকে অসম্মান করা।’
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপির প্রতিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের দাবি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি আলোচনাধীন। এমন সময় আন্দোলন করা কতটা উচিত, সেটা জনগণ দেখবে।’
চিকিৎসা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরপর সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছিলেন তাকে, জানতে চেয়েছিলেন চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। তিনিও ইসলামি দলগুলোর আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
রাজপথে নেমে গেলেই সমাধান হবে কি না— এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। আলোচনা চলছিল, সেই অবস্থায় এ ধরনের কর্মসূচির অর্থই হচ্ছে একটা অহেতুক চাপ তৈরি করা। এগুলো গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারেও শুভ নয়।’
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে, রাজনৈতিক দলগুলো এখনো নিজেদের অবস্থান নিয়ে দ্বিধায় আছে। এক অংশ আলোচনায় সক্রিয়, আরেক অংশ আন্দোলনে আগ্রহী। এই দ্বৈত অবস্থান চলতে থাকলে ঐকমত্য কমিশনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দলগুলোর এমন দ্বিমুখী অবস্থান দূর না করলে সাধারণ মানুষদের মধ্যেও বিভ্রান্তি ছড়াবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আলোচনা করে যখন সমাধানে দিকে সবাই এগিয়ে যাচ্ছি তখন রাজপথে নামার ঘটনা অবশ্যই চিন্তার কারণ। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলে দায় কে নেবে?’
সাইফুল হক আরও বলেন, ‘বরং কিছু কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ফিরে এসেছিল। এখন তার বদলে দূরত্ব বাড়বে। রাজপথ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।’
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনসহ আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ঐকমত্য কমিশনের উদ্যোগে টেবিলে একদিকে যখন চলছে বৈঠক, অন্যদিকে একই সময়ে রাজপথে নেমেছে একাধিক রাজনৈতিক দল। জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনসহ ধর্মভিত্তিক অন্তত সাতটি দল এরই মধ্যে প্রথম দিনের কর্মসূচি বাস্তবায়নও করে ফেলেছে।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি, জাতীয় নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক (পিআর) পদ্ধতির প্রয়োগ— এই দাবিগুলোই রয়েছে ইসলামি দলগুলোর দাবি-দাওয়ার তালিকার শুরুতে, যেগুলো এখনো রয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার টেবিলে। এ কারণেই বিএনপি এ কর্মসূচির সরাসরি বিরোধিতা করে তীব্র সমালোচনা করেছে আন্দোলনে নামা দলগুলোর।
ঐকমত্যের টেবিলে বসে রাজপথের কর্মসূচি পালনকে বিভক্তির দিকে ঠেলে দেওয়ার উদ্যোগ বলেই অভিহিত করেছেন বিএনপি নেতারা। তারা বলছেন, ইসলামি দলগুলোর এসব কর্মসূচি নতুন করে রাজনৈতিক অঙ্গনে সন্দেহ ও সংশয়ের জন্ম দিয়েছে। ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার সমান্তরালে দাবি-দাওয়া নিয়ে আন্দোলন রাজনৈতিক ঐক্য প্রক্রিয়ায় অবিশ্বাসের জন্ম দেবে, তৈরি করবে অস্থিরতা। নির্বাচন পেছাতেই এ আন্দোলনের সূচনা কি না, এমন সন্দেহও রয়েছে বিএনপির মধ্যে।
নির্বাচন সামনে রেখে জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে এক প্ল্যাটফর্মে থাকা দলগুলোর কেউ কেউ আন্দোলনে নামায় রাজনীতির গতিপথ অনিশ্চয়তার দিকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তারা মনে করছেন, ঐকমত্য গঠনের চেষ্টা যতটা অগ্রসর হওয়ার কথা ছিল, ততটা হয়নি। বরং ঐক্যের উলটোটাই ঘটে চলেছে।
ঐক্যের পথে না হেঁটে রাজনৈতিক দলগুলো যার যার মতো করে দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভক্ত হয়ে রাজপথে আন্দোলন শুরু করলে তা দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটকে অস্থিতিশীল করে তুলতে পারে বলেও মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা। তাদের আশঙ্কা, এর মধ্য দিয়ে আবারও ফ্যাসিবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। চলমান পরিস্থিতিতে তাই আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি-দাওয়া আদায়ের চেষ্টার চেয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আসার তাগিদ দিয়েছেন তারা।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সরকার ও রাজনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘যে ইস্যুগুলোকে কেন্দ্র করে কয়েকটি দল মাঠে নেমেছে, তারা আসলে কার বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে? সরকার নাকি বিএনপির বিরুদ্ধে? আসলে নিজেরা নিজেদের বিরুদ্ধে এমন আন্দোলন করলে তার ফলাফল কী হবে, কেউ বলতে পারবে না।’
রাজপথে নামার পেছনে ইসলামি দলগুলোর যেসব দাবি-দাওয়া, তার মধ্যে প্রধানতম হলো পিআর বা সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন। এটি এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে সংসদীয় আসনগুলোতে কেবল রাজনৈতিক দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সারা দেশে সেই দলের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে ভাগ করা হয় সংসদীয় আসন।
জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন দৃঢ়ভাবে সংসদের দুই কক্ষ ও দুটিতেই পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি করে আসছে। জামায়াত বলছে, প্রচলিত পদ্ধতিতে জনমতের প্রতিফলন ঘটছে না বলেই তারা পিআর পদ্ধতির পক্ষে।
অন্যদিকে বিএনপি সুস্পষ্টভাবেই পিআর পদ্ধতির বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়েছে। বিএনপি বরং সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি হিসেবে পিআরের পক্ষে জামায়াতের অবস্থানকে ‘নির্বাচন বিলম্বিত করার কৌশল’ হিসেবে দেখছে। অবশ্য পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে কি না কিংবা সংসদে দুই কক্ষ থাকলে কোনটিতে কী পদ্ধতিতে নির্বাচন হবে— এসব বিষয় এখনো চূড়ান্ত হয়নি।
পিআর পদ্ধতিকে বাংলাদেশের নির্বাচনের জন্য ‘অনুপযুক্ত’ বলে মনে করেন জাবি অধ্যাপক ড. শামছুল আলম সেলিম। তিনি বলেন, ‘এগুলো হতে পারে বিএনপির সঙ্গে নির্বাচনের আসন-সংক্রান্ত দরকষাকষি করার কৌশল। আবার একটি পক্ষ হয়তো নির্বাচন যেন না হয়, দেশ যেন অস্থিতিশীল হয়, এসব কারণেও এসব দাবি নিয়ে উচ্চকিত হতে পারে। তবে সরকার নির্বাচন করার বিষয়ে সিরিয়াস বলেই মনে হয়েছে।’
জামায়াত-আওয়ামী লীগের মধ্যে আঁতাতের গুঞ্জন আছে— এমন মন্তব্য করে অধ্যাপক শামছুল বলেন, ‘অনেকেই কিন্তু এমনটা বলছেন যে জামায়াত-আওয়ামী লীগ আঁতাত হতে পারে। তেমনটা সত্যি হলে রাজনৈতিক সংকট বাড়াবে। দেশ অস্থিতিশীল হবে। নিজেদের ছোটখাটো দাবি-দাওয়া নিয়ে বিভেদে না জড়িয়ে আলোচনা করে সমাধান করা উচিত। তা না হলে আবারও কোনো ফ্যাসিবাদ সুযোগ নেবে।’
এদিকে জামায়াত ও চরমোনাই পীরের দলসহ ইসলামী দলের মাঠে নামার আগে এনসিপি, এবি পার্টিসহ আরও কয়েকটি দলের যুগপৎ আন্দোলনের গুঞ্জন শোনা গিয়েছিল। পরে অবশ্য এসব দল জানিয়েছে, আপাতত তারা যুগপৎ আন্দোলনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাতেও এসব দলের মধ্যে ঐক্যের স্থলে বিভেদ দেখা দিয়েছে কি না, তা নিয়ে চলছে আলোচনা।
জামায়াতসহ ইসলামী দলগুলোর একযোগে পালন করতে যাওয়া কর্মসূচি নিয়ে সরকারও উদ্বিগ্ন। রোববার সচিবালয়ে আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকেও এসব কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ কর্মসূচি ঘিরে দেশে একটি অস্থিতিশীল পরিবেশ ও রাজনৈতিক অচলাবস্থা তৈরি হতে পারে— এমন আশঙ্কাও প্রকাশ করা হয়েছে বৈঠকে।
ঐকমত্য কমিশন মূলত জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সংলাপ ও সমঝোতার সুযোগ তৈরির জন্য গঠিত হয়েছে। এখনো কমিশনের বৈঠকে প্রতিষ্ঠিত প্রায় সব দলই অংশ নিচ্ছে। একই সময়ে কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল রাজপথে নেমে পড়েছে।
জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, তারা জনগণের দাবিকে শক্তিশালী করতে রাজপথে কর্মসূচি দিয়েছে। বিশেষ করে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জনগণই আদায় করবে— এমনও বলছে জামায়াত।
বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ মিছিল ও তার আগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে ইসলামী আন্দোলন। ছবি: ফোকাস বাংলা
তবে বিএনপির আপত্তি, আলোচনার পরিবেশ তৈরি হওয়ার আগেই রাজপথের কর্মসূচি দেওয়ায় বিরূপ প্রভাব পড়েছে রাজনৈতিক অঙ্গনে। এতে আস্থার সংকট আরও গভীর হবে।
শুরুতে ধারণা করা হয়েছিল, ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় রাজনৈতিক দলগুলো অন্তত একটি সাধারণ প্ল্যাটফর্মে একত্রিত হবে। কিন্তু বাস্তবে তার উলটো চিত্র ফুটে উঠছে। জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের আন্দোলনপন্থি কৌশল একদিকে যেমন সক্রিয়, অন্যদিকে বিএনপি বলছে তারা আপাতত আন্দোলনের পথে নয়, বরং আলোচনার পথেই সমাধান খুঁজতে চায়।
রাজনৈতিক দলগুলোর এই ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান সাধারণ মানুষতেও দ্বিধাগ্রস্ত করেছে। নাগরিকদের প্রত্যাশা ছিল, সংলাপের মাধ্যমে অন্তত একটি কার্যকর রোডম্যাপ আসবে। কিন্তু এর পরিবর্তে আলোচনার টেবিলে গিয়েও রাজপথে শক্তি প্রদর্শনে নেমে পড়ছেন নেতারা।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মূল সমস্যা হচ্ছে আস্থার অভাব। আগে বিভিন্ন সময়ে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত সমঝোতায় পৌঁছানো যায়নি। এবারও একই চিত্র ফুটে উঠছে।
তারা বলছেন, রাজনৈতিক অঙ্গনে যদি আস্থা তৈরি না হয়, তবে কোনো নির্বাচনই স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হবে না। একদিকে কমিশনের উদ্যোগ, অন্যদিকে সমান্তরাল আন্দোলন— এ দুই মেরু টানাপোড়েনের ফলে সংশয় আরও প্রকট হচ্ছে।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক শামছুল আলমের ভাষ্য, ‘আলোচনার পথে যদি আন্তরিকতা থাকত, তবে আন্দোলন ঘোষণার আগে অন্তত কমিশনের আলোচনায় বিষয়টি উত্থাপন করা যেত। কিন্তু সেটি না করে সরাসরি রাজপথে কর্মসূচি দেওয়া আস্থার সংকটকেই প্রমাণ করছে।’
জামায়াতসহ দলগুলো কর্মসূচিতে নামার ঘোষণার আগে থেকেই এ নিয়ে বিপরীত অবস্থান পরিষ্কার করেছে বিএনপি। কেউ কেউ এ জন্য জামায়াতকে দায়ী করে বক্তব্যও দিয়েছেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী কর্মসূচির কড়া সমালোচনা করে বলেছেন, ‘আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়ায় প্রমাণ হয়, জামায়াত ঐকমত্য কমিশনের আলোচনার প্রতি সম্মান দেখাচ্ছে না এবং নির্বাচনকে অগ্রাহ্য করছে। দেশের মানুষ ভোটের অপেক্ষায় আছে। যারা ভোট বানচালের ষড়যন্ত্র করবে, তারা দেশের মানুষের আস্থা হারাবে। গণতন্ত্রের স্বার্থে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বিকল্প নেই।’
সাবেক বিএনপি সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ‘এখনো আলোচনা চলছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ ইস্যুতে ঐকমত্য হয়ে গেছে। এ অবস্থায় আন্দোলনের ডাক বিষয়ে জনগণের প্রশ্ন থেকে যাবে। যেটা নিয়ে ঐকমত্য হয়নি এখনো, আলেচনাও চলমান, সেখানে আন্দোলন ডাকার অর্থ আলোচনার টেবিলকে অসম্মান করা।’
ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপির প্রতিধি দলের নেতৃত্ব দেওয়া স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘যারা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, তাদের দাবি জুলাই সনদ বাস্তবায়ন। বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটি আলোচনাধীন। এমন সময় আন্দোলন করা কতটা উচিত, সেটা জনগণ দেখবে।’
চিকিৎসা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পরপর সিঙ্গাপুর থেকে ঢাকা ফিরেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। বিমানবন্দরে সাংবাদিকরা ঘিরে ধরেছিলেন তাকে, জানতে চেয়েছিলেন চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে। তিনিও ইসলামি দলগুলোর আন্দোলন নিয়ে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন।
রাজপথে নেমে গেলেই সমাধান হবে কি না— এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এর কোনো প্রয়োজন ছিল না। আলোচনা চলছিল, সেই অবস্থায় এ ধরনের কর্মসূচির অর্থই হচ্ছে একটা অহেতুক চাপ তৈরি করা। এগুলো গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়। সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারেও শুভ নয়।’
বর্তমান পরিস্থিতি ইঙ্গিত করছে, রাজনৈতিক দলগুলো এখনো নিজেদের অবস্থান নিয়ে দ্বিধায় আছে। এক অংশ আলোচনায় সক্রিয়, আরেক অংশ আন্দোলনে আগ্রহী। এই দ্বৈত অবস্থান চলতে থাকলে ঐকমত্য কমিশনের কার্যকারিতা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, দলগুলোর এমন দ্বিমুখী অবস্থান দূর না করলে সাধারণ মানুষদের মধ্যেও বিভ্রান্তি ছড়াবে।
গণতন্ত্র মঞ্চের অন্যতম শীর্ষ নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আলোচনা করে যখন সমাধানে দিকে সবাই এগিয়ে যাচ্ছি তখন রাজপথে নামার ঘটনা অবশ্যই চিন্তার কারণ। কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হলে দায় কে নেবে?’
সাইফুল হক আরও বলেন, ‘বরং কিছু কর্মসূচি ঘিরে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সৌহার্দ্য ফিরে এসেছিল। এখন তার বদলে দূরত্ব বাড়বে। রাজপথ নয়, আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করা হবে বুদ্ধিমানের কাজ।’
মঈন খান বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো সবাই সংস্কার নিয়ে একমত হয়ে যাবে এটা ভাবা ভুল। সবাইকে একমতে এনে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারণায় বিশ্বাস করি না। প্রথাগত পদ্ধতি থেকে আমাদের বের হতে হবে। প্রথাগত ধারণা ও বদ্ধ চিন্তা ভাবনা নিয়ে রাজনীতি করলে ৫ আগস্টের মতো পরিণতি আবারও ঘটতে পারে।
১৮ ঘণ্টা আগেআমীর খসরু বলেন, অনেকে অনেক কিছু চাইবে, সব জায়গায় ঐকমত্য হবে না। তবে যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে তাদের অবশ্যই জনগণের কাছে যেতে হবে। জনগণের প্রতি আস্থা না থাকলে পরাজিত শক্তির উত্থানের সুযোগ থাকবে।
২০ ঘণ্টা আগেতারেক রহমান বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিতব্য জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমাদের অন্যতম দায়িত্ব হলো দেশের প্রতিটি ভোটারের আস্থা নিশ্চিত করা। সেই লক্ষ্যে, আজকের ও আগামী দিনের তরুণ প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি ছুটে যাচ্ছে তৃণমূল থেকে শুরু
১ দিন আগে