
নাজমুল ইসলাম হৃদয়

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঢাকা-২ আসনেও (কেরানীগঞ্জ-সাভার) ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এরই এ মধ্যে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের পরিচিতমুখ আমানউল্লাহ আমানের নাম। জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সক্রিয়তায় পিছিয়ে নেই কেরানীগঞ্জের একাংশ ও সাভারের একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে। বরং নতুন এ রাজনৈতিক দলটি ভোটের মাঠে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রার্থিতা নিয়ে। অনেক আসনেই দলটি থেকে একজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকলেও এ আসনে পাঁচজন নেতা দলের প্রার্থী হতে মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
ঢাকা-২ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই পাঁচজন হলেন—কেরানীগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. জাবেদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ইমরান হোসেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয় সদস্য মো. সুমন হোসেন (শান্ত), সাভার উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলকার নাইন ও দলের সদস্য মুহাম্মদ কামাল হুছাইন।
এই পাঁচ নেতার প্রত্যেকেই বিশ্বাস করেন, দল তাকেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন পেলে এ আসনে এনসিপির হয়ে জয় ছিনিয়ে আনার বিষয়েও তারা আত্মবিশ্বাসী।
এ আসনে এবার বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে একসময়ের সাড়া জাগানো ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নাম লেখানো আমানউল্লাহ আমানকে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা এর আগে ঢাকা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন একাধিকবার। সীমানা সংশোধনের পর এবার সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর মনোনয়ন ঢাকা-২ আসনে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ আসনে এককভাবে প্রচারে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান। বুয়েটের সাবেক এই শিক্ষার্থী ও এলজিইডির সাবেক উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে নিয়মিত গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম। তিনি ইসলামপন্থিদের পক্ষ থেকে ‘নির্বাচনি সমঝোতা’র প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বড় দলের বড় নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হলেও এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেউ ভড়কে যাচ্ছেন না। আবার একই আসন থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়ে চাপও অনুভব করছেন না। তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে শাপলা কলি প্রতীকে জিতিয়ে আনার জন্যই তারা কাজ করবেন।
একই আসনে দলের একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টিকে ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে’র ইতিবাচক প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও মনোনয়নপ্রত্যাশী ইমরান হোসেন। তার অভিমত, বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে সাধারণত একজনই প্রার্থী হন এবং বাকিরা ভয়ে প্রার্থী হওয়ার সাহসটুকুও দেখাতে পারেন না। সেই জায়গায় তাদের দলের অভ্যন্তরে পূর্ণ গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা বজায় রয়েছে।
ইমরান হোসেন রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারও মনোনয়ন কেনার সুযোগ রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে শেষ পর্যন্ত যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার হয়েই কাজ করব। আমাদের মূল লক্ষ্য ব্যক্তি স্বার্থ নয়, বরং শাপলা কলি প্রতীককে জনগণের মাঝে তুলে ধরা।’
সাভার ও কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিকতার চেয়ে দলের ঐক্য ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সাভার উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলকার নাইন। তিনি বলেন, ‘সাভারের তিনটি ইউনিয়ন ও কেরানীগঞ্জের সাতটি ইউনিয়ন মিলিয়েই ঢাকা-২ আসন। প্রার্থী সাভারের নাকি কেরানীগঞ্জের, সেই ভেদাভেদ ভুলে সমাজ ও দেশের সেবার জন্য যোগ্য মানুষকেই প্রয়োজন।’ দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই মাঠে কাজ করবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
একই সুর শোনা গেছে কেরানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয় সদস্য মো. সুমন হোসেন শান্তর কণ্ঠেও। এনসিপি থেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই প্রার্থী রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘অন্যান্য দলে বা অতীতে আমরা দেখেছি, একই দলের একাধিক প্রার্থীর মধ্যে রেষারেষি বা সংঘাত হয়। আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। কেন্দ্রীয় কমিটি আমাদের পাঁচজনের মধ্য থেকে যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবে, আমরা বাকি চারজন তার পেছনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।’
তৃণমূলের সেবার কথা উল্লেখ করে সুমন হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমার রাজনীতি করার মূল উদ্দেশ্য গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভিন্ন কিছু করা। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ যখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়, তাদের সেই কষ্ট লাঘব করাই আমার লক্ষ্য।’
নিজেদের স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান তুলে ধরেছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মুহাম্মদ কামাল হুছাইন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য নেতাদের মতো আমার অঢেল ধন-সম্পদ নেই। কোনো মাধ্যম থেকে আমি একটি হারাম পয়সাও এখন পর্যন্ত গ্রহণ করিনি। টাকা দিয়ে আমি মোটরসাইকেল বা গাড়ির বিশাল শো-ডাউন দিয়ে মানুষের মাঝে সাড়া জাগাব— এ ধরনের কোনো প্রস্তুতি আমার মধ্যে নেই।’
নির্বাচিত হলে স্থানীয় অনিয়ম-দুর্নীতি যা দিনের পর দিন চলে আসছে, সেগুলোর নির্মূল চান কামাল হুছাইন। কেরানীগঞ্জে দৃশ্যমান চাঁদাবাজ, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি ও মাদকের সাম্রাজ্য সমূলে উৎখাত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে এনসিপির প্রার্থীদের বিষয়ে নিজেদের প্রত্যাশার পাশাপাশি সতর্কবার্তাও জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার আহ্বায়ক আলামীন মিনহাজ বলেন, ‘ঢাকা-২ আসনে এনসিপি থেকে যে পাঁচজন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন তুলেছেন, তারা প্রত্যেকেই ‘জুলাই যোদ্ধা’ এবং তাদের প্রতি আস্থা রয়েছে।’
তবে এই সমর্থন নিঃশর্ত নয়। বিষয়টি স্পষ্ট করে মিনহাজ বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, দল যাচাই-বাছাই করে এমন একজনকে মনোনয়ন দেবে যিনি সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলবেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। দল যদি কোনো যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করব।’
‘তবে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট— এনসিপি যদি কোনো অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, তবে আমরা তাকে কোনো সহায়তা করব না। এনসিপি বিপ্লবের স্পিরিট ধারণ করে বলে তাদের প্রতি আমাদের ভরসা আছে, কিন্তু দিনশেষে আমরা যোগ্যতাকেই প্রাধান্য দেব। যদি এনসিপির প্রার্থী অযোগ্য হন, আর বিএনপি, জামায়াত বা ইসলামী আন্দোলন থেকে যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কোনো যোগ্য প্রার্থী আসেন, তবে আমরা তাকেই সমর্থন করব,’— বলেন কেরানীগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী নেতা আলামীন মিনহাজ।
এক আসনে পাঁচজনের মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহের বিষয়টিকে দলের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে দেখছেন এনসিপির নীতিনির্ধারকরা। দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকা-২ আসন থেকে আমাদের দলের পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন। গণতান্ত্রিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। সমাজের ইতিবাচক মানুষ ও নতুন মুখের এই স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ প্রমাণ করে যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে।’
প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় দল যে কঠোর অবস্থান নেবে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ফরম তুললেই যে কেউ চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন— বিষয়টি এমন নয়। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা মূলত তিনটি বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে ধরছি— প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সংগঠনের প্রতি তার নিবেদিতপ্রাণ মনোভাব এবং স্থানীয় পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা। সবকিছু পর্যালোচনা করেই দল আগামী নির্বাচনের জন্য যোগ্যতম প্রার্থীকে চূড়ান্ত করবে।’

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে সারা দেশের মতো ঢাকা-২ আসনেও (কেরানীগঞ্জ-সাভার) ভোটের হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এরই এ মধ্যে এ আসনে বিএনপি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছে দলের পরিচিতমুখ আমানউল্লাহ আমানের নাম। জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থীরাও মাঠে রয়েছেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টিও (এনসিপি) সক্রিয়তায় পিছিয়ে নেই কেরানীগঞ্জের একাংশ ও সাভারের একাংশ নিয়ে গঠিত এ আসনে। বরং নতুন এ রাজনৈতিক দলটি ভোটের মাঠে আলোচনায় উঠে এসেছে প্রার্থিতা নিয়ে। অনেক আসনেই দলটি থেকে একজনের বেশি মনোনয়নপ্রত্যাশী না থাকলেও এ আসনে পাঁচজন নেতা দলের প্রার্থী হতে মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন।
ঢাকা-২ আসনে এনসিপি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই পাঁচজন হলেন—কেরানীগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী মো. জাবেদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য ইমরান হোসেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয় সদস্য মো. সুমন হোসেন (শান্ত), সাভার উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলকার নাইন ও দলের সদস্য মুহাম্মদ কামাল হুছাইন।
এই পাঁচ নেতার প্রত্যেকেই বিশ্বাস করেন, দল তাকেই আগামী জাতীয় নির্বাচনে শাপলা কলি প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন দেবে। শুধু তাই নয়, মনোনয়ন পেলে এ আসনে এনসিপির হয়ে জয় ছিনিয়ে আনার বিষয়েও তারা আত্মবিশ্বাসী।
এ আসনে এবার বিএনপি মনোনয়ন দিয়েছে একসময়ের সাড়া জাগানো ছাত্রনেতা থেকে জাতীয় রাজনীতিতে নাম লেখানো আমানউল্লাহ আমানকে। বিএনপি চেয়ারপারসনের এই উপদেষ্টা এর আগে ঢাকা-৩ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছেন একাধিকবার। সীমানা সংশোধনের পর এবার সাবেক এই প্রতিমন্ত্রীর মনোনয়ন ঢাকা-২ আসনে।
জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে এ আসনে এককভাবে প্রচারে রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার তৌফিক হাসান। বুয়েটের সাবেক এই শিক্ষার্থী ও এলজিইডির সাবেক উপজেলা ইঞ্জিনিয়ার স্থানীয় বাসিন্দা হিসেবে নিয়মিত গণসংযোগ ও সভা-সমাবেশ করছেন। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় রয়েছেন হাফেজ মাওলানা জহিরুল ইসলাম। তিনি ইসলামপন্থিদের পক্ষ থেকে ‘নির্বাচনি সমঝোতা’র প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন রয়েছে।
বড় দলের বড় নেতারা সম্ভাব্য প্রার্থী হলেও এনসিপির মনোনয়নপ্রত্যাশীরা কেউ ভড়কে যাচ্ছেন না। আবার একই আসন থেকে একাধিক মনোনয়নপ্রত্যাশী নিয়ে চাপও অনুভব করছেন না। তারা বলছেন, শেষ পর্যন্ত দল যাকে মনোনয়ন দেবে তাকে শাপলা কলি প্রতীকে জিতিয়ে আনার জন্যই তারা কাজ করবেন।
একই আসনে দলের একাধিক প্রার্থীর মনোনয়ন চাওয়ার বিষয়টিকে ‘নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে’র ইতিবাচক প্রতিফলন হিসেবে দেখছেন এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও মনোনয়নপ্রত্যাশী ইমরান হোসেন। তার অভিমত, বড় রাজনৈতিক দলগুলোতে সাধারণত একজনই প্রার্থী হন এবং বাকিরা ভয়ে প্রার্থী হওয়ার সাহসটুকুও দেখাতে পারেন না। সেই জায়গায় তাদের দলের অভ্যন্তরে পূর্ণ গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা বজায় রয়েছে।
ইমরান হোসেন রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘কেন্দ্রীয় নেতা থেকে শুরু করে তৃণমূলের ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারও মনোনয়ন কেনার সুযোগ রয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি যাচাই-বাছাই করে শেষ পর্যন্ত যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার হয়েই কাজ করব। আমাদের মূল লক্ষ্য ব্যক্তি স্বার্থ নয়, বরং শাপলা কলি প্রতীককে জনগণের মাঝে তুলে ধরা।’
সাভার ও কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিকতার চেয়ে দলের ঐক্য ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন সাভার উপজেলার প্রধান সমন্বয়কারী জুলকার নাইন। তিনি বলেন, ‘সাভারের তিনটি ইউনিয়ন ও কেরানীগঞ্জের সাতটি ইউনিয়ন মিলিয়েই ঢাকা-২ আসন। প্রার্থী সাভারের নাকি কেরানীগঞ্জের, সেই ভেদাভেদ ভুলে সমাজ ও দেশের সেবার জন্য যোগ্য মানুষকেই প্রয়োজন।’ দল যাকে মনোনয়ন দেবে, সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে তার পক্ষেই মাঠে কাজ করবেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
একই সুর শোনা গেছে কেরানীগঞ্জ উপজেলার সমন্বয় সদস্য মো. সুমন হোসেন শান্তর কণ্ঠেও। এনসিপি থেকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপ্রত্যাশী এই প্রার্থী রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘অন্যান্য দলে বা অতীতে আমরা দেখেছি, একই দলের একাধিক প্রার্থীর মধ্যে রেষারেষি বা সংঘাত হয়। আমরা সেই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে চাই। কেন্দ্রীয় কমিটি আমাদের পাঁচজনের মধ্য থেকে যাকে যোগ্য মনে করে মনোনয়ন দেবে, আমরা বাকি চারজন তার পেছনে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।’
তৃণমূলের সেবার কথা উল্লেখ করে সুমন হোসেন শান্ত বলেন, ‘আমার রাজনীতি করার মূল উদ্দেশ্য গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভিন্ন কিছু করা। বিশেষ করে সাধারণ মানুষ যখন সরকারি প্রতিষ্ঠানে সেবা নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হয়, তাদের সেই কষ্ট লাঘব করাই আমার লক্ষ্য।’
নিজেদের স্বচ্ছতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান তুলে ধরেছেন আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী মুহাম্মদ কামাল হুছাইন। তিনি বলেন, ‘অন্যান্য নেতাদের মতো আমার অঢেল ধন-সম্পদ নেই। কোনো মাধ্যম থেকে আমি একটি হারাম পয়সাও এখন পর্যন্ত গ্রহণ করিনি। টাকা দিয়ে আমি মোটরসাইকেল বা গাড়ির বিশাল শো-ডাউন দিয়ে মানুষের মাঝে সাড়া জাগাব— এ ধরনের কোনো প্রস্তুতি আমার মধ্যে নেই।’
নির্বাচিত হলে স্থানীয় অনিয়ম-দুর্নীতি যা দিনের পর দিন চলে আসছে, সেগুলোর নির্মূল চান কামাল হুছাইন। কেরানীগঞ্জে দৃশ্যমান চাঁদাবাজ, দখলদারিত্ব, টেন্ডারবাজি ও মাদকের সাম্রাজ্য সমূলে উৎখাত করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে এনসিপির প্রার্থীদের বিষয়ে নিজেদের প্রত্যাশার পাশাপাশি সতর্কবার্তাও জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার আহ্বায়ক আলামীন মিনহাজ বলেন, ‘ঢাকা-২ আসনে এনসিপি থেকে যে পাঁচজন সম্ভাব্য প্রার্থী মনোনয়ন তুলেছেন, তারা প্রত্যেকেই ‘জুলাই যোদ্ধা’ এবং তাদের প্রতি আস্থা রয়েছে।’
তবে এই সমর্থন নিঃশর্ত নয়। বিষয়টি স্পষ্ট করে মিনহাজ বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা, দল যাচাই-বাছাই করে এমন একজনকে মনোনয়ন দেবে যিনি সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলবেন এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। দল যদি কোনো যোগ্য ব্যক্তিকে মনোনয়ন দেয়, তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে আমরা মাঠ পর্যায়ে সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে তাকে বিজয়ী করতে কাজ করব।’
‘তবে আমাদের অবস্থান খুবই স্পষ্ট— এনসিপি যদি কোনো অযোগ্য ব্যক্তিকে প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করে, তবে আমরা তাকে কোনো সহায়তা করব না। এনসিপি বিপ্লবের স্পিরিট ধারণ করে বলে তাদের প্রতি আমাদের ভরসা আছে, কিন্তু দিনশেষে আমরা যোগ্যতাকেই প্রাধান্য দেব। যদি এনসিপির প্রার্থী অযোগ্য হন, আর বিএনপি, জামায়াত বা ইসলামী আন্দোলন থেকে যদি অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কোনো যোগ্য প্রার্থী আসেন, তবে আমরা তাকেই সমর্থন করব,’— বলেন কেরানীগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী নেতা আলামীন মিনহাজ।
এক আসনে পাঁচজনের মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহের বিষয়টিকে দলের সাংগঠনিক বিস্তৃতি ও গ্রহণযোগ্যতা হিসেবে দেখছেন এনসিপির নীতিনির্ধারকরা। দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক, ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক ও কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য আরিফুল ইসলাম আদীব রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ঢাকা-২ আসন থেকে আমাদের দলের পাঁচজন প্রার্থী মনোনয়ন আবেদন ফরম সংগ্রহ করেছেন। গণতান্ত্রিক দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া সবার জন্য উন্মুক্ত থাকে। সমাজের ইতিবাচক মানুষ ও নতুন মুখের এই স্বতঃস্ফূর্ত আগ্রহ প্রমাণ করে যে আমাদের গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হচ্ছে।’
প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়ায় দল যে কঠোর অবস্থান নেবে, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘ফরম তুললেই যে কেউ চূড়ান্ত মনোনয়ন পাবেন— বিষয়টি এমন নয়। প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আমাদের নিজস্ব বিচার-বিশ্লেষণ প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা মূলত তিনটি বিষয়কে মানদণ্ড হিসেবে ধরছি— প্রার্থীর ব্যক্তিগত যোগ্যতা, সংগঠনের প্রতি তার নিবেদিতপ্রাণ মনোভাব এবং স্থানীয় পর্যায়ে তার জনপ্রিয়তা। সবকিছু পর্যালোচনা করেই দল আগামী নির্বাচনের জন্য যোগ্যতম প্রার্থীকে চূড়ান্ত করবে।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা ফ্যাসিস্ট, যারা খুনি তাদের বিচার শুরু হয়েছে। আপনারা দেখেছেন তারা কিভাবে চৌধুরী আলম, ইলিয়াস আলীর মতো নেতাদের গুম করেছে, হাজার হাজার ছাত্র-জনতাকে হত্যা করেছে। এসব হত্যার বিচার সঠিক সময়ে হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারে সেদিনকার অবৈধ প্রধানমন্ত্রী, খুনি প্রধানমন্ত্রী
১ দিন আগে
জাতীয় নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) সংলাপে প্রণীত আচরণবিধির কয়েকটি দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী প্রতিনিধি শিশির মনির।
১ দিন আগে
মঈন খান বলেন, প্রার্থীরা অঙ্গীকারনামা ভঙ্গ করলে তার শাস্তি কী হবে তা স্পষ্ট আচরণবিধিতে নেই। নিয়মকানুন না বাড়িয়ে প্রার্থী এবং ভোটারদের মোটিভেট করার আহ্বান জানিয়েছি। তবে সব ধরনের নিয়মকানুন মেনে নির্বাচন করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।
১ দিন আগে
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি জানিয়েছেন, গণভোট ও সংসদ নির্বাচনের বুথ আলাদা হওয়া দরকার। একই স্থানে হলেও বুথ ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মী পৃথক থাকলে অনিয়মের ঝুঁকি কমবে।
১ দিন আগে